আনোয়ারায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ক্ষতি হবে ভয়াবহ by আরিফুজ্জামান তুহিন

* নৌবন্দর অকেজো হয়ে যাবে * কর্ণফুলী নদী ধ্বংস হয়ে যাবে * বিমানবন্দর সরাতে হবে* পরিবেশ বিপর্যয় হবে মারাত্মক* তবু অনড় সরকারসরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিভাগের আপত্তি সত্ত্বেও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় পরিবেশ ধ্বংসকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অনড় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।


কর্ণফুলীর মোহনায় প্রায় তিন হাজার ২০০ একর জায়গাজুড়ে ১৩২০ মেগাওয়াটের এ বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে কর্ণফুলী নদী ধ্বংস, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর অচল, চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামায় বাধাসহ স্থানীয় অন্তত ৪০ হাজার মানুষ উচ্ছেদ হবে। এ ছাড়া হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আনোয়ারায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদনও করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- এ মর্মে জানতে চেয়েছেন সরকারের কাছে।
এত ক্ষতি ও আপত্তির পরও পিডিবি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে মরিয়া। কয়লাবিদ্যুতের পক্ষে পিডিবির একগুঁয়ে অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। যেকোনো সময় জনবিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বিতর্কিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, আনোয়ারা উপজেলার রাঙাদিয়া, গোবাদিয়া, মাঝেরচর, ফুলতলী, পশ্চিমচাল, চালিতাতলী, বোয়ালিয়া, দুধকোমড়া, বারাসাত, পশ্চিম তুলাতুলি ও উত্তর পারুয়াপাড়ার তিন হাজার ১৮৮ একর জায়গায় স্থানীয় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। অথচ কর্ণফুলীর মোহনায় দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের সামনে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হলে শুধু প্রকল্প এলাকার ৪০ হাজার মানুষই উচ্ছেদ হবে না, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরটির অস্তিত্ব্বও হুমকির মুখে পড়বে। প্রকল্প এলাকার মাত্র সাত কিলোমিটারের মধ্যে থাকা শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা হুমকির মধ্যে পড়বে। পাশাপাশি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দূষিত কয়লাধোয়া পানি কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ার কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ নদী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
শুরু থেকেই কর্ণফুলীর মোহনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করে আসছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিভাগ- বন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তর। পাশাপাশি রয়েছে স্থানীয় জনগণের আপত্তি। স্থানীয় জনগণ ও সরকারের এসব বিভাগের বাধার কারণে বেসমারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মতামত আকারে আপত্তির কথা জানায়। তবে অভিযোগ রয়েছে, পিডিবি ওই কমিটির মতামতকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা ও তড়িঘড়ি করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
বিমান ওঠা-নামায় বিঘ্ন ঘটবে : বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএবিবি) একটি বিস্তারিত তদন্ত চালায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরিচালক (এটি এস অ্যান্ড এরোড্রাম) আজাদ জহিরুল ইসলাম প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটিকে জানান, সিভিল এভিয়েশন ও আইকা বিধি মোতাবেক বিমানবন্দরের ৫০ হাজার ফুটের (১৫ কিলোমিটার) মধ্যে ৫০০ ফুটের বেশি কোনো স্থাপনা করা যাবে না। কিন্তু প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে মাত্র এক হাজার ১৬০ ফুট দূরে। সে হিসাবে এ অঞ্চলে ১৫০ ফুটের বেশি কোনো স্থাপনার অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়।' বেসামরিক বিমানবন্দরের এ আপত্তির কারণ হলো প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চিমনির উচ্চতা ৯০২ ফুট। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মতামত, পিডিবির প্রস্তাবিত চিমনিটি ৫০ হাজার ফুটের বাইরে স্থাপন করা হলে প্রয়োজনীয় অ্যারোনটিক্যাল সার্ভে পরিচালনার পর সিএবিবির পক্ষে চাহিদাকৃত ৯০২ ফুট উচ্চতার চিমনি স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব। তবে এ বিষয়ে পিডিবি থেকে নির্মিতব্য চিমনির পরিবর্তিত অবস্থানসহ সিএবিবিকে নতুন প্রস্তাব পেশ করা প্রয়োজন হবে। তবে সিএবিবির কোনো কথাই রাখেনি পিডিবি। এতে করে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শুধু চিমনির উচ্চতাই নয়, ১৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিপুল পরিমাণ ধোঁয়া বের হবে, তার ফলে বিমান ওঠা-নামায়ও বিঘ্ন সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে সিএবিবি।
বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তাই সুপারিশ করে বিদ্যুৎ প্রকল্পটিকে আরো ২০ কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কথাও রাখেনি পিডিবি : চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন নাজমুল আলম তদন্ত কমিটিকে বলেন, 'প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনির কালো ধোঁয়া, ছাই, রাসায়নিক বর্জ্য দ্বারা কর্ণফুলী নদী দূষণ হবে কি না, সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। কর্ণফুলী নদীতে নেভিগেশন চ্যানেল আঁকাবাঁকা এবং তিনটি সার্প ব্রেন্ড রয়েছে। শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে সামান্য কালো ধোঁয়ায় নৌ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এ কারণে ইতিমধ্যে নদীতীরের বেশ কয়েকটি ইটখোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইটখোলার তুলনায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ধোঁয়া অনেক বেশি হওয়ায় বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে।'
গত ২৮ অক্টোবর, ২০১০ সালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো এক প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র ১০০ শতাংশ প্লান্ট ফ্যাক্টরে চালু থাকলে প্রতি মাসে তিন লাখ মেট্রিক টন ও প্রতিদিন ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হবে। একটি সমুদ্রগামী জাহাজে ২০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পরিবহন করা গেলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দুদিন চালানো যাবে। এ হিসাবে মাদার ভেসেল থেকে জেটিতে মাসে ১৫টি জাহাজ কয়লা পরিবহন করবে।' তিনি আরো বলেন, 'পিডিবি প্রস্তাবিত জেটির নকশা, জেটির সাইজ, কী ধরনের জেটি নির্মিত হবে, বিশেষত সমুদ্রগামী জাহাজ ভেড়ানোর জন্য আরসিসি জেটি নির্মিত হবে কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। এ জাতীয় জেটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে ম্যাথমেটিক্যাল মডেল স্টাডির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই স্টাডি ছাড়া এ জাতীয় জেটির অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২০১০ সালের ১৩ জুলাইয়ের সভার সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলে বছরে ৮০০ জাহাজ বন্দরে নোঙর করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরে জোয়ারের সময় মাত্র চার ঘণ্টা জাহাজ জেটিতে নোঙর করার মতো নাব্যতা থাকে। বছরে ৮০০ জাহাজ নোঙর করার মতো সুবিধা কর্ণফুলী চ্যানেলে নেই।'
এত আপত্তির পরও থেমে নেই পিডিবির কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার আগে প্রয়োজন পরিবেশ ছাড়পত্র। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম সূত্রে জানা যায়, পিডিবি ১১ অক্টোবর ২০১০ সালে তাদের কাছে পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ছাড়পত্র পিডিবিকে দেওয়া হয়নি। এমনকি অবস্থানগত ছাড়পত্রও নয়।
রক্ত দেব, জীবন দেব, জমি দেব না : প্রকল্প এলাকার সাতটি গ্রামে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ উচ্ছেদ হবে বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন হলে। এই মানুষের অধিকাংশই কৃষক। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শতাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসবের পাশাপাশি ধ্বংস হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত পারকি। এ সমুদ্র সৈকতটি প্রকল্প এলাকায় পড়েছে। এসব মিলিয়ে এক ভয়ংকর পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে দেশ। পাশাপাশি মানুষের জীবন-জীবিকাও ধ্বংস হয়ে যাবে। এ কারণে এসব অঞ্চলের জনগণ জীবন দেবে তবু চাষের জমি দেবে না বলে পণ করেছে। তাদের যুক্তি, এখান থেকে আরো দূরে বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে পারে। সেখানে সবই খাস জমি। শত শত একর জমি সেখানে রয়েছে। তাহলে এত মানুষকে কেন উচ্ছেদ করে কার স্বার্থে বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে?
প্রকল্প এলাকার বারোসাত ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আজিজুল ইসলাম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের এ এলাকার পারকি সৈকতটি চট্টগ্রাম শহরের পাশে হওয়ায় পর্যটকরা খুব সহজে আসতে পারে। বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে এ সমুদ্র সৈকতটি সরকার অধিগ্রহণ করবে। কেউ কি ইচ্ছে করলেও প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এ রকম একটি সৈকত বানাতে পারে?' তিনি আরো বলেন, 'এখানকার জমি তিন ফসলি। এই জমির ওপর নির্ভর করেই আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। জীবন থাকতে এ জমি আমরা দেব না।' এই স্থানটি ভূকৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। আজিজুল ইসলাম খান বলেন, 'এখানে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। রয়েছে আমাদের অর্থনীতি সচল রাখার প্রধান অবলম্বন চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর, রয়েছে রাডার স্টেশন, মেরিন একাডেমী ও বিমান প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। আর পরিবেশের ক্ষতির বিষয় তো রয়েছেই।'
আনোয়ারা উপজেলার জমির ওপরই সরকারি নজর কেন- এমন প্রশ্ন ঘুরেফিরে করছিল স্থানীয় গ্রামবাসী। গ্রামবাসীর অভিযোগ, সারা বাংলাদেশের মধ্যে এর আগে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সরকার এ উপজেলা থেকে সব থেকে বেশি জমি অধিগ্রহণ করেছে। সরেজমিন অনুসন্ধানে গ্রামবাসীর অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। জানা যায়, কর্ণফুলী সার কারখানা, সিইউএফএল, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী, রাডার স্টেশন, ডায় অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট-১ (ড্যাপ), ড্যাপ-২, কোস্টগার্ড, কোরিয়ান ইপিজেড, পর্যটনের জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করেছে সরকার। এর পরও কেন আবার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের জন্য তিন হাজার ২০০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করতে হবে- এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
স্থানীয়দের এক হিসাব মতে, বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থানের তিন হাজার ২০০ একর জমির মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪০টির মতো, ধর্মীয় স্থাপনার মধ্যে আছে মসজিদ ১০০টি, ২০০টির মতো মন্দির, ২০টির ওপরে কবরস্থান ও সাতটি মাজার।
দুধকুমড়া গ্রামের বাসিন্দা মৎস্য ব্যবসায়ী আবুল কাশেম (৫৫) কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কোনো সরকার এখানে নজর দেয়নি। সাগরের ঢল থেকে গ্রামকে রক্ষা করার জন্য আমরা গ্রামবাসী নিজেরা মাটি কেটে বাঁধ দিয়েছি। এই জমি উর্বর করেছি। মাছের ঘের করেছি। এখন সরকার এসেছে আমাদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নিতে। আমরা কোনোভাবেই এ জমি দেব না।'
স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, এর আগে অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য অনেককেই দেওয়া হয়নি। চাকরির যে প্রলোভন দেওয়া হয়েছিল, অধিগ্রহণকৃত জমিতে যেসব কলকারখানা গড়ে উঠেছে সেখানেও কাজ পায়নি গ্রামবাসী। তাই আর কোনো আশ্বাসে গ্রামবাসী বিশ্বাস করে না। তাদের সাফ কথা, কোনো অবস্থাতেই তারা এবার জমি দেবে না। জমি অধিগ্রহণ হলে কী হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প এলাকার পশ্চিম চাল গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক (৪৫) কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রক্তের বন্যা বইয়ে যাবে, তবু এখানকার মানুষ জমি হাতছাড়া করবে না।'
কেউ নজর দিচ্ছে না বাঁশখালীর দিকে : স্থানীয় জনগণের ভাষ্য, বাঁশখালীতে হাজার হাজার একর খাস জমি পড়ে আছে। সরেজমিনে বাঁশখালীতে গিয়ে দেখা যায় এ বক্তব্যের সত্যতা। স্থানীয় ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালীর সমুদ্রঘেরা অধিকাংশ জায়গায়ই খাস জমি। বাঁশখালীর বাসিন্দা মোতালেব মোল্লা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই খাস জমিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হলে সরকারকে জমি বাবদ আলাদা কোনো টাকা খরচ করতে হবে না।'

No comments

Powered by Blogger.