সময়ের কথা-মাইন্ডসেট বদলের তাগিদ by অজয় দাশগুপ্ত

যারা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারা ভর্তুকির সুফল বেশি ভোগ করে। বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় কারখানায়। বাড়ি বা অফিসে যারা একাধিক এসি যন্ত্র চালায়, যাদের বাড়িতে ফ্যান-টিভি-ফ্রিজসহ অনেক ইলেকট্রিক সামগ্রী তারাই বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। তাদের কারণে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র পরিবার সমস্যায় পড়ে।


ওয়াসার পানির ক্ষেত্রেও একই বিধান_ সরকার এতে ভর্তুকি দেয় এবং যার ব্যবহার যত বেশি, ভর্তুকির হিস্যা তার ভাগে তত বেশি


কোট-টাই বাংলাদেশের মতো আবহাওয়ার দেশে শীত নিবারণের পোশাক। গরমকালেও অনেকে এ পোশাক পরিধান করে থাকে। এয়ারকন্ডিশনড রুমে থাকলে এ পোশাকে তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু প্রখর রোদে কিংবা উত্তপ্ত ঘরে এ পোশাকে থাকলে গরমে কষ্ট হয়, হাসিরও উদ্রেক হতে পারে। উলের সোয়েটারও শীতের পোশাক। কিন্তু গরমকালে কেউ যদি তা পরিধান করে, এমনকি এয়ারকন্ডিশনড রুমের পরিবেশেও_ তাহলে হাসির উদ্রেক তো হবেই, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় এখন অনেক প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে এয়ারকন্ডিশনড (এসি) মেশিন চলে। বেশিরভাগ প্রাইভেটকারে রয়েছে এসি। অফিস ও বাড়ি এবং গাড়িতে এসি রয়েছে যাদের, তারা গরমেও শীতের মতো চলার জন্য কোট পরিধান করেন। এতে এসি যন্ত্রের ঠাণ্ডাটা তেমন কষ্ট দেয় না। অনেককে দেখা যায় এসি রুমের কথা চিন্তা করে গরমকালে অফিসে কোট রাখেন। তাহলে সোয়েটার রাখলে সমস্যা কি? প্যান্ট-কোট-টাইয়ের ভালোই চল রয়েছে বাংলাদেশে। তবে মোট জনসংখ্যার তুলনায় অল্পজনেই তা পরিধান করে। শীতের সময় সোয়েটার পরিধানকারী লোকের সংখ্যা কোটধারীদের তুলনায় ঢের ঢের বেশি। কিন্তু গরমেও কোট চলে, সোয়েটার কোনোভাবেই নয়। এটা কি আমরা ব্রিটিশ সাহেবদের দেখে শিখেছি?
এ ধরনের পোশাকি রীতির কারণ যা-ই হোক, এখন সবাই মেনে নিচ্ছে। এটা মাইন্ডসেট। অদূর ভবিষ্যতে তা বদলাবে বলেও মনে হয় না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই মাইন্ডসেট বদলানো দরকার। আবার অনেকে তা করছেও।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট রয়েছে। এ বছর গ্রীষ্মে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা গত বছর কিংবা তার আগের বছরগুলোর তুলনায় একটু কম, এমনটাই বলছেন অনেকে। সরকার জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করার ফলে ন্যাশনাল গ্রিডে বাড়তি বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে বলেই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেও বলতে পারি যে গত বছরের তুলনায় বিদ্যুৎ বেশি সময় থাকে। কিংবা বলা যায়, কম সময় অনুপস্থিত থাকে।
বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ ১৯ মে আশুগঞ্জে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে ১ হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। এতে লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় চলে আসবে [সমকাল, ২০ মে ২০১১]।
বোরো ধানের মৌসুম শেষ হয়েছে। এ ধান চাষের জন্য প্রচুর পানি দরকার হয়। ধানের ক্ষেতে পানি দিতে মেশিন চালানো যায় বিদ্যুৎ কিংবা ডিজেলে। বিদ্যুতে খরচ কিছুটা কম পড়ে। এতে কৃষকের লাভ, আবার চালের ক্রেতাদেরও লাভ। বাজারে খাদ্যশস্যের দাম কম রাখা যায়। বাংলাদেশে বিদ্যুতের উৎপাদন বহু বছর ছিল সরকারের হাতে। এখন প্রাইভেট সেক্টরও বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে এবং তাদের হিস্যা ক্রমেই বাড়ছে। তবে বিদ্যুৎ বিতরণ একচেটিয়াভাবেই সরকারের হাতে। প্রাইভেট সেক্টরের উৎপাদকরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরকারের কাছে বিক্রি করে দেয়। সরকার তা কলকারখানা, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ির মালিকদের কাছে বিক্রি করে। সরকারের এ ক্ষেত্রে সমস্যা দুটি : প্রথমত, তারা প্রাইভেট সেক্টরের উৎপাদকদের কাছ থেকে যে দামে বিদ্যুৎ কেনে_ বিক্রি করে তার তুলনায় কিছুটা কমে। এর ফলে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়। জ্বালানি সচিবও জানিয়েছেন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সরকার প্রাইভেট সেক্টর থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনছে। দ্বিতীয়ত, বহু বছর ধরেই বিদ্যুৎ খাতের একটি সমস্যা হচ্ছে সিস্টেম লস। বিদ্যুৎ ব্যবহার করেও কিছু লোক পুরো বিল দেয় না, কিংবা কম দেয়। মিটারে কারচুপি করে, কিংবা চোরাইপথে লাইন নেয়। এর সঙ্গে কিছু কারিগরি লসও রয়েছে। সবটাই সিস্টেম লস হিসেবে দেখানো হয়। চড়া দামে কেনা বিদ্যুতের একটি অংশের বিল যদি আদায় না হয়, তাহলে তো খুবই খারাপ কথা। বিদ্যুৎ কেনার বিষয়েও সরকারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে। এজন্য দায় প্রাইভেট সেক্টরেরও কম নয়। সরকার প্রাইভেট সেক্টরের যাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনে তাদের মালিকদের সঙ্গে সরকারের কিছু লোকের অবৈধ লেনদেন হয় এবং এর ফলে বিদ্যুৎ যে দামে সরকার কিনতে পারত তার চেয়ে কিছুটা বেশি দামে কেনে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে সরকারের স্বচ্ছতা নেই। এর দায় চাপে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাঁধে। আর সরকারের যারা এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত, তাদের যুক্তি_ 'সরকারকা মাল দরিয়া মে ঢাল'। নিয়মিত বিদ্যুৎ চাইলে উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং তার ব্যয়ও বেশি পড়বে। এ কারণে ভোক্তাদের আগের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে। এখানেও মাইন্ডসেটের পরিবর্তন প্রয়োজন। নইলে আমরা দুর্বল অর্থনীতির পাকচক্রে ঘুরপাক খেতে থাকব।
গত বছর গরমের সময় এয়ারকন্ডিশনড যন্ত্র কম ব্যবহার করার কথা বলে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা বিপদে পড়েছিলেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে কেউ কেউ বলেন, আগে সরবরাহ নিশ্চিত করুন তারপর এসব কথা বলুন। এটাও এক ধরনের মাইন্ডসেট। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রয়ের হিসাব আরেকটি চিত্রও তুলে ধরে। সরকার অর্থাৎ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুৎ বিতরণকারী কোম্পানিগুলোর কাছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি করে (যেমন পল্লীবিদ্যুৎ, ডেসা) গড়ে ২ টাকা ১৫ পয়সার মতো দরে। কিন্তু নিজের লোকসান ঠেকাতে হলে বিক্রি করা উচিত ২ টাকা ৭৫ পয়সা দরে। সরকার ভর্তুকি দিয়ে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। বছরে এর পরিমাণ অন্তত এক হাজার কোটি টাকা। এটাই নিয়ম যে যারা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারা ভর্তুকির সুফল বেশি ভোগ করে। বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় কারখানায়। বাড়ি বা অফিসে যারা একাধিক এসি যন্ত্র চালায়, যাদের বাড়িতে ফ্যান-টিভি-ফ্রিজসহ অনেক ইলেকট্রিক সামগ্রী তারাই বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। তাদের কারণে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র পরিবার সমস্যায় পড়ে। ওয়াসার পানির ক্ষেত্রেও একই বিধান_ সরকার এতে ভর্তুকি দেয় এবং যার ব্যবহার যত বেশি, ভর্তুকির হিস্যা তার ভাগে তত বেশি।
হাল আমলে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান নিজস্ব জেনারেটর চালু করেছে। এমনকি তারা গ্যাসের ভরসাতেও থাকছে না। এর পরিবর্তে ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল ব্যবহার করছে। এতে উৎপাদন ব্যয় বেশি পড়ছে। ডিজেলে প্রতি ইউনিট উৎপাদন ব্যয় ১৩-১৪ টাকা এবং ফার্নেস অয়েলে অন্তত ৮ টাকা_ এটাই বলছেন উৎপাদকরা। কিন্তু অর্থনীতির হিসাবটা সোজা_ লোডশেডিংয়ের জন্য কারখানা বন্ধ রাখা হলে যে লস, সরকারের বিদ্যুতের ভরসায় না থেকে কিছুটা বেশি খরচ পড়লেও নিজের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ নিজেই উৎপাদনের ব্যবস্থা করলে লোকসান তার তুলনায় কম। এটাও মাইন্ডসেটের পরিবর্তন। অর্থনীতির এ সহজ হিসাব দেশের মানুষ নানাভাবে প্রয়োগ করছে। ১৬ মে মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে 'বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় যুদ্ধ ও রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং জাপানের সংকটের (সর্বনাশা ভূমিকম্প ও সুনামির ফলে) প্রতিক্রিয়া' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে অর্থমন্ত্রী এবং প্রবাসী কল্যাণ দফতরের মন্ত্রীসহ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। চেম্বার নেতা এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও সাবেক কূটনীতিকরাও ছিলেন। সভার বক্তাদের ভাষা ছিল ইংরেজি। কেবল একজন বললেন বাংলায়_ তিনি জনশক্তি রফতানির সঙ্গে যুক্ত। তার বক্তব্যের সময় ভাষার কারণে বুঝতে সমস্যা হয়েছে বলে কেউ অভিযোগ করেনি।
মেট্রোপলিটান চেম্বারের কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ যে তারা ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ও পরিচালক মামুন রশীদকে দিয়ে একটি বিস্তারিত গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন আগেই প্রস্তুত করে রেখেছিলেন এবং সভায় তা উপস্থাপন করেন। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু মূলত উদ্বেগের। কিন্তু মামুন রশীদের তথ্য-পরিসংখ্যান ও যুক্তি এবং কয়েকজন আলোচকের বক্তব্যে আশাবাদের উপাদানও ছিল। মামুন রশীদ বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে তৈরি পোশাক (ওভেন ও নিটওয়্যার) রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। হিমায়িত মাছের রফতানি বেড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ। কাঁচাপাটের রফতানি বেড়েছে ৫৮ শতাংশ এবং পাটজাত দ্রব্যের ৯৭ শতাংশ। এ হিসাব রফতানি থেকে প্রাপ্ত আয়ের হিসাবে করা হয়েছে। রফতানি বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা নিয়মিতভাবেই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যার কথা বলেন। এবারেও এ সমস্যা রয়েছে। তারপরও কিন্তু ১৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সচিবালয় জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের জুন থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে রফতানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৮২৪ কোটি মার্কিন ডলার এবং গত অর্থবছরে ১২ মাসে মোট আয় ছিল ১ হাজার ৬২০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ১০ মাসেই রফতানি আয় গত বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে ২০৪ কোটি ডলার। এর কারণ দুটি : এক. বিশ্ববাজারে দাম ভালো পাওয়া। দুই. দেশের উৎপাদক ও রফতানিকারকরা বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও রফতানির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন করেছে এবং বিদেশে পাঠিয়েছে। অর্থাৎ তারা বাধা জয় করতে পেরেছে। এই বাধা জয় করার মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে হয়। সেটা না করে কেবল সরকারের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের জন্য বসে থাকলে চলে না। তাতে নিজের ক্ষতি, দেশেরও ক্ষতি। যারা চাকরির বাজারে আসে তাদেরও ক্ষতি।
মেট্রোপলিটান চেম্বারের আলোচনায় জানানো হয়, জাপান ও লিবিয়ায় বাংলাদেশের খুব বেশি কর্মী কাজ করে না। কিন্তু সৌদি আরবে কাজ করছে অন্তত ২৩ লাখ লোক। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশি কয়েক হাজার কর্মীকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সেটা সম্ভব হবে না। ইরান, সুইডেন, সিঙ্গাপুর, ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের দূত হিসেবে দায়িত্বপালনকারী একজন সাবেক রাষ্ট্রদূত মনে করেন, ওই দেশটিতে পরিবর্তন আসবেই। এ কারণে সেখানের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির ওপর সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের পরামর্শ প্রদান করেন তিনি। অন্যান্য আরব দেশের শাসক ও বিরোধী দলের সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, সে দেশের কোনো সমস্যায় আমরা যেন হঠাৎ করে অথৈ সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য না হই।
দুনিয়া বদলে যাচ্ছে। মেট্রোপলিটান চেম্বারের আলোচনায় তার চিত্র ছিল স্পষ্ট। এটাও স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে অভ্যস্ত। তারপরও কিন্তু মনে রাখা দরকার, চলমান বিশ্ব অনেক সময় আমাদের জন্য নতুন নতুন সুবিধার সৃষ্টি করে, আবার কখনও বা ডেকে আনে সমস্যা। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশের কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হওয়া ছিল এমনই একটি দুর্ঘটনা। আমাদের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গেই সামাল দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে আমাদের পর্যবেক্ষণ যত ভালো হবে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে কাজ করা তত সহজ হবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও একটি নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনদণ্ড গ্রহণ কি নিছকই ক্ষমতার পালাবদল, নাকি তার অন্য অর্থ রয়েছে? বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে তিনি কি জ্যোতি বসুর মতো বন্ধুর অবস্থান গ্রহণ করবেন, নাকি ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতা কমল গুহের মতো 'জাতীয়তবাদী' হয়ে উঠবেন? তিনি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে সহায়তা দেবেন, নাকি বলবেন, 'আগে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ'? কলকাতায় নতুন সরকার যে আসছে সে ব্যাপারে আমরা অন্তত দুই বছর হোমওয়ার্কের সময় পেয়েছি। আমরা কি সেটা করেছি? এখানেও কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাইন্ডসেটের প্রশ্ন।

অজয় দাশগুপ্ত :সাংবাদিক
ajoydg@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.