চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিট-শয্যা বেড়েছে সুবিধা বাড়েনি by প্রণব বল

জায়গা বদল ও শয্যার কলেবর বাড়লেও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ভাগ্য বদল হচ্ছে না। সীমিত জনবল ও অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে স্বতন্ত্র ইউনিটটি অনেকটাঢালতলোয়ারবিহীনভাবে চলছে।


২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মতিউর রহমান সার্জারি ওয়ার্ডের ভেতরে বার্ন ইউনিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন। তখন এটি ১৩ শয্যাবিশিষ্ট বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট হিসেবে পরিচিতি পায়। তবে তার আগে থেকেই সার্জারি ওয়ার্ডের এক পাশে পোড়া রোগীদের সেবা দেওয়া হতো।
উদ্বোধনের সময় বলা হয়েছিল, ইউনিটটি স্বতন্ত্র একটি জায়গায় স্থানান্তর, ৫০ শয্যায় উন্নীত করা ও জনবল বাড়ানো হবে। গত বৃহস্পতিবার চমেক হাসপাতালের পুরোনো ভবনের ছয়তলায় প্রসূতি ওয়ার্ডের পাশে একটি বড় কক্ষে ইউনিটটি স্থানান্তর করা হয়। নতুন স্থানে ২৪ শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে একটি অস্ত্রোপচারকক্ষও। কিন্তু অস্ত্রোপচারকক্ষে কোনো যন্ত্রপাতি, বাতি এখনো লাগেনি। ফলে আগের মতো সার্জারি ওয়ার্ডের অস্ত্রোপচারকক্ষের জন্য এখনো অপেক্ষায় থাকতে হয়।
ইউনিটে জনবলও নেই পর্যাপ্ত। এ প্রসঙ্গে ইউনিটের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক মৃণালকান্তি দাশ বলেন, ‘আমাদের ইউনিটটি এখন স্থানান্তর করা হলেও এখনো পর্যাপ্ত জনবল ও যন্ত্রপাতি নেই। ফলে পর্যাপ্ত সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। তবু আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
জানা গেছে, ইউনিটে একজন অধ্যাপক ও একজন সহযোগী অধ্যাপকের পদ থাকলেও তা শূন্য পড়ে আছে। একজন সহকারী অধ্যাপকসহ মোট পাঁচজন চিকিত্সক রয়েছেন। সেবিকা আছেন পাঁচজন। ২৪ জন রোগীর জন্য অন্তত ১৫ জন সেবিকার প্রয়োজন বলে চিকিত্সকেরা জানান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০০ শয্যার বার্ন ইউনিটই এত দিন দেশের পোড়া রোগীদের জন্য একমাত্র নির্ভরযোগ্য বিশেষায়িত হাসপাতাল ছিল। বছরে দেড় লাখ পোড়া রোগী এখানে চিকিত্সা নেয়। ঢাকার পর চট্টগ্রামেও একটি স্বতন্ত্র বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল কিংবা বিভাগ স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সারা দেশের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশের পোড়া রোগীদের একমাত্র নির্ভরযোগ্য স্থান ঢাকা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। কিন্তু পোড়া রোগীদের খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে চিকিত্সা দিতে হয়। যার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি চট্টগ্রামসহ অন্যান্য বিভাগে স্বতন্ত্র বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপনের।’
সামন্ত লাল আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম শিল্প এলাকা। এখানে পোড়া রোগীর সংখ্যা সব সময় বেশি থাকে। ফলে এখানে স্বতন্ত্র ইউনিট করা সবচেয়ে জরুরি। কিন্তু জনবল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি এখনো পর্যাপ্ত পাওয়া যায়নি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

No comments

Powered by Blogger.