সুষ্ঠু পদ্ধতিতে ও শৃঙ্খলার সঙ্গে জাকাত বিতরণ কাম্য-জাকাত নিতে গিয়ে মৃত্যু

চরম দারিদ্র্যসীমার নিচেও অজস্র মানুষ আছে, যাদের জীবনে ঈদের আনন্দ নির্ভর করে জাকাতের ওপর। এবং প্রতিবছর ঈদের আগে এই জাকাত সংগ্রহ করতে গিয়েই কারও কারও জীবনটা পর্যন্ত চলে যায়। জাকাতগ্রহীতাদের ভিড় ও কাড়াকাড়িতে এ বছরও এ পর্যন্ত একজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।


জাকাত দেওয়ার মধ্যেই তাই ধর্মীয় কর্তব্য শেষ হয়ে যায় না, জাকাত নিতে গিয়ে যাতে জীবন না হারাতে হয়, সেই ব্যবস্থা করার দায়িত্ব জাকাতদাতাদেরই।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে ভিড়ের চাপে এক মধ্যবয়সী নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। জাকাত নিতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে প্রাণহানীর ঘটনা নতুন নয়। যাঁরা বড় আকারে জাকাত দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন, তার জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে লোক জড়ো করেন। তাঁরা কি জাকাতগ্রহীতাদের শৃঙ্খলার মধ্যে রাখায় কিছুটা দায়িত্বশীল হতে পারেন না? পারেন, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এ দানের প্রদর্শনীর দিকে তাঁদের যতটা নজর থাকে, দুর্ঘটনা রোধের দিকে হয়তো তাঁরা ততটা সচেষ্ট থাকেন না। তাই দেখা যায়, গরিব মানুষের উপকার করতে গিয়ে বরং তাঁরা অপকারই করেন। অথচ একটু সতর্ক থাকলেই এ ধরনের অপ্রিয় ঘটনা এড়ানো সম্ভব। যেখানে অনেক মানুষের জাকাত গ্রহণের জন্য ভিড় করার সম্ভাবনা থাকে, সেখানে দাতাদের তরফে শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী কিংবা পুলিশের সহায়তাও তাঁরা নিতে পারেন। সরকারেরও উচিত, গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া।
জাকাত মানুষ দেবে এবং তা নিতে অনেক মানুষ জড়োও হবে। বিষয়টাকে প্রাতিষ্ঠানিক কায়দায়, উপযুক্ত মানুষদের মধ্যে বিতরণের একটা পদ্ধতি বের করা দরকার। প্রচুর টাকা ও শাড়ি-কাপড় ঈদের আগে দান করা হয়, প্রচুর লোক তা গ্রহণে উন্মুখও হয়ে থাকে। সুতরাং, কীভাবে তা শৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পন্ন করা যায়, তা ভাবার দায়িত্ব জাকাতদাতা এবং সরকার—উভয়েরই।

No comments

Powered by Blogger.