ডাগআউটে বুড়ো-তরুণ

শুরু আছে, শেষ নেই! জিওভান্নি ত্রাপাত্তোনি কোথায় গিয়ে শেষ করবেন, আসলেই সেটা জানা নেই। তবে ইতিহাস শুরুর দিনক্ষণ বলে দেওয়া যায় গড়গড় করে। সেটাও অবশ্য ৪০ বছর আগের কথা। ১৯৭২ সালে পেশাদার খেলোয়াড়ের পাট চুকিয়ে ওই বছরই কোচিংয়ের শুরু, এসি মিলানের যুবদলের কোচ হিসেবে।


সেই থেকে গাড়ি চলছে তো চলছেই। ইতিহাসের একাধিক অধ্যায়ে নিজের নাম খোদাই করে নেওয়া ইতালিয়ান ভদ্রলোক আরেকটি ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায়। আজ ইউরোর দুটি ম্যাচ। যার একটিতে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি আয়ারল্যান্ড। এই ম্যাচ দিয়েই আয়ারল্যান্ডের কোচ ত্রাপাত্তোনি হয়ে যাবেন ইউরোর ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বয়সী কোচ। আজ ডাগ-আউটে পা রাখবেন ৭৩ বছর ৮৫ দিন বয়সে!
সপ্তাহ দুয়েক আগে এক অনুষ্ঠানে সাবেক এসি মিলান, জুভেন্টাসের কোচকে উপস্থাপক পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন ‘সেভেনটি থ্রি ইয়ারস ওল্ড’ বলে। মৃদু স্বরে কিন্তু দৃঢ়কণ্ঠে ত্রাপাত্তোনি উপস্থাপককে ভুল শুধরে দেন এই বলে যে তিনি ‘সেভেনটি থ্রি ইয়ারস ইয়াং’।
ত্রাপাত্তোনি তা বিশ্বাসও করেন। আজ যে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে রেকর্ডটা নিজের করে নিচ্ছেন, এত দিন সেটা এই ক্রোয়েশিয়ারই অটো বরিচের দখলে ছিল। ২০০৪ ইউরোতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত এই ক্রোট কোচ ডাগ-আউটে বসেছিলেন ৭১ বছর ২ দিন বয়সে। বরিচের পর জ্লাতকো ক্রানকারের হাত ঘুরে ২০০৬ সালে ক্রোয়েশিয়ার কোচ হন স্লাভেন বিলিচ। ২০০৮ ইউরোতে এই বিলিচও হয়ে যান ইউরোর পঞ্চম কম বয়সী কোচ।
চার বছর পর আজও সেই স্লাভেন বিলিচই থাকবেন ক্রোয়েশিয়ার ডাগ-আউটে। আর তাকিয়ে দেখবেন প্রতিপক্ষ লিখে ফেলছে ইতিহাস। তবে এই রেকর্ডের চেয়ে নিশ্চয় ত্রাপাত্তোনি বেশি খুশি হবেন আয়ারল্যান্ডকে ইউরোর শিরোপা জেতাতে পারলে। কাজটা যে অসম্ভব, সেটি না বললেও চলছে। তাহলে কি একটা অতৃপ্তি আর ঘোচানো হবে না ত্রাপাত্তোনির? ক্লাব ফুটবলে অনেক সাফল্য পেলেও এখনো জাতীয় দলের কোচ হিসেবে বড় কোনো ট্রফি জেতা হয়নি। ২০০২ বিশ্বকাপের পর ইতালিকে নিয়ে গিয়েছিলেন ২০০৪ ইউরোতেও। দুবারই ব্যর্থ। ২০০৪ ইউরোতে তো ত্রাপাত্তোনির ইতালি ছিটকে পড়ে প্রথম রাউন্ড থেকেই।
অথচ তিনি সিরি ‘আ’র সর্বকালের অন্যতম সফল কোচদের একজন। জুভেন্টাসের হয়ে পাঁচবার লিগ জেতা ত্রাপাত্তোনির আছে ইতালি, জার্মানি, পর্তুগাল ও অস্ট্রিয়া চারটি ভিন্ন দেশের লিগ জয়ের কীর্তিও।
 খলিলুর রহমান

No comments

Powered by Blogger.