ওয়াকিটকি-ঢাল নেই...

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সেজে নানা অপকর্মের সংবাদ মাঝে মধ্যে চোখে পড়ে। অপরাধীরা এমন কাজ করার আগে ইউনিফর্ম পরে নেয়, ক্ষেত্রবিশেষে নকল পিস্তল, ওয়াকিটকিও ব্যবহার করে। কিন্তু এবার ভুয়া বা অপরাধী কোনো দল নয়_ ছদ্ম ওয়াকিটকি ব্যবহার করতে দেখা গেল একটি সংস্থাকে।


নিতান্ত নিরুপায় হয়ে এ সংস্থার সদস্যরা হাতে ওয়াকিটকি নিয়ে জটিল অপারেশনে নেমেছেন। যে ওয়াকিটকি তাদের শোভা বর্ধন করছে সেগুলো অকেজো। সহসা কোনো যান্ত্রিক গোলযোগও ঘটেনি। ২০০৩ সাল থেকেই কোনো রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির সঙ্গে সংযোগ নেই ওয়াকিটকিগুলোর। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দুুটি দলের অপারেশনের যে সংবাদ রোববারের সমকালে প্রকাশিত হয়েছে তাতে অনেকে বিস্মিত হবেন। দেশে মাদকের ভয়াল থাবা প্রসারিত হয়েছে, বাড়ছে মাদক ব্যবসায়ীদের তৎপরতাও। নিত্যনতুন কৌশলে তারা মাদককে ছড়িয়ে দিচ্ছে নতুন প্রজন্মের হাতে। ব্যবহার করছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও। কিন্তু যারা মাদক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত সেই কর্তৃপক্ষের অভিযান চলছে ছদ্ম ওয়াকিটকির মারফত। ওয়াকিটকি লোক দেখানো, নিজেদের ইউনিফর্ম নেই এমনকি অস্ত্র ব্যবহারেরও অনুমতি নেই। তাই সরকারি লোক বলে চেনানোর সুযোগ নেই। কিন্তু অচল হলেও ওয়াকিটকি আছে। সেটি হাতে থাকলে লোকে জানবে সরকারি লোক। কিন্তু লোক দেখানো ওয়াকিটকিতে তো পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ সম্ভব নয়। তাই মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হচ্ছে। চলছে অভিযান। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠবে, ওয়াকিটকির যদি এই হাল হয় তবে মাদকবিরোধী অভিযানগুলোর হাল কেমন? আর অধিদফতরই-বা কেমন সক্রিয় প্রতিষ্ঠান? বাহারি নাম দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু অস্ত্রধারী ক্ষমতাধর মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অধিদফতরের অভিযান পরিচালনাকারীরা পেরে উঠবে কীভাবে? অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি নেই, ওয়াকিটকি নেই এ তো জানা গেল। আরও কত কিছু নেই সে ফিরিস্তি কে দেবে? অবস্থাদৃষ্টে বোঝা যায়, পরনির্ভরশীল হয়ে অন্য সংস্থাগুলোর সাহায্যে অভিযান চালাতে হয় অধিদফতরকে। কিন্তু এমন ধারার অভিযান দিয়ে কি মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব?
 

No comments

Powered by Blogger.