রাজধানীতে দিনভর বিক্ষোভ-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ ও ৪ জুলাই ধর্মঘট

বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ গতকাল সোমবার দিনভর মিছিল, বিক্ষোভ ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ১৭ দফা দাবি না মানায় আগামী ৩ ও ৪ জুলাই সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এর পরও দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।


বৃষ্টি উপেক্ষা করে গতকাল সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশ থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উপস্থিত হতে থাকেন। শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্দেশ্যে মিছিল নিয়ে রওনা হলে শাহবাগ পাবলিক লাইব্রেরির সামনে পুলিশ বাধা দেয়। পরে দুপুর ১২টায় মিছিলকারীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বেসরকারি কারিগরি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত কুমার সাহা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, বেসরকারি কারিগরি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এ কে এম মোকছেদুর রহমান, চৌধুরী খুরশিদ আলম ও ফখরুদ্দীন জিগার। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদানের পর দুপুর আড়াইটায় শিক্ষক নেতারা ফিরে এসে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। এরপর বিকেল ৫টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আতিয়ার রহমান বলেন, 'আমরা স্মারকলিপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। সাক্ষাৎ না পেয়ে প্রটোকল অফিসারের কাছে আমাদের দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দিয়ে এসেছি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আলাউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তিনি দাবিগুলো কেবিনেটে তোলার আশ্বাস দিয়েছেন।'
ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক রঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, 'আমরা বেশ কিছুদিন ধরে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছি। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সমপরিমাণ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, শূন্য পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন প্রদান ও চাকরির বয়স ৬৫ করার দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো বাস্তবায়ন না করায় আগামী ৩ ও ৪ জুলাই সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছে।'
উল্লেখ্য, বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করে ১৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য এর আগে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বেসরকারি শিক্ষকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.