প্রচলনের এখনই সময়-ক্রিকেটে গণতন্ত্রচর্চার অভাব

বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত একটি সরকার দেশ পরিচালনা করছে। সেই গণতান্ত্রিক দেশে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। বিশ্বকাপ নিয়ে জনগণের উন্মাদনার কোনো সীমা নেই। অথচ বিশ্বকাপের মতো এত বড় আসরে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে না।


এর কোনো মানে হয়? দেশের ১৫ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে বিশ্বকাপের দল গঠন করা হয়েছে। তার পরও অমুককে দলে রাখা উচিত ছিল, তমুককে রাখা উচিত হয়নি, এর চেয়ে অমুক ভালো খেলে—এ ধরনের কথা বলেছে অনেকেই। গণতান্ত্রিক উপায়ে দল গঠন করলে কখনো এমন প্রশ্ন উঠত না। খেলার আগে টস করতে হয়। ১৫ জন ক্রিকেটারই যাতে মাঠে চলে না আসে সে জন্য নির্বাচকেরা একজনকে অধিনায়ক নির্বাচন করেছেন। টস জিতে ব্যাটিং-বোলিং নেওয়া তাঁর সিদ্ধান্ত। কিন্তু দেশের মানুষও তো খেলা দেখছে। তারা তো আর বুড়িগঙ্গার পানিতে ভেসে আসেনি। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। তাদের কথারও দাম আছে। নির্বাচিত অধিনায়কের সিদ্ধান্ত তাদের ভালো নাও লাগতে পারে। এ জন্যই গণতান্ত্রিক উপায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খেলার আগেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সারা দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা যেতে পারে। জনগণ পছন্দের প্রার্থীদের (ক্রিকেটার) ভোট দিয়ে নির্বাচন করবে। ভোটে যারা জয়লাভ করবে, শুধু তারাই খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। টস নিয়েও একই পদ্ধতি। দল টস জিতে আগে ব্যাটিং করবে, না বোলিং করবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। শুধু তা-ই নয়, কখন কে ব্যাটিং-বোলিং করবে, কে কোথায় ফিল্ডিং করবে, এমনকি ক্যাচ উঠলে সবার আগে কে দৌড়ে ধরতে যাবে—এসবও ভোট দিয়ে ঠিক করবে জনগণ। দলে দলে মানুষ ভোট দিতে আসবে, পত্রিকার প্রথম পাতায় ছবিসহ খবর ছাপা হবে—‘নাতির কোলে চড়ে ভোট দিতে এসেছিল বৃদ্ধ নানি’—এমনটা ভাবতেই ভালো লাগছে। এতে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে কোনো ম্যাচে পরাজিত হলে দলের সমালোচনা হবে না। বাস ও বাড়িতে ঢিল পড়বে না। কারণ, জনগণ ভোট দিয়ে যাদের নির্বাচিত করে, তারা শত অন্যায় করলেও তাদের কিছু বলার নিয়ম এখনো তৈরি হয়নি। অতএব, অবিলম্বে ক্রিকেটে গণতন্ত্রের প্রচলন করতে হবে। আশা করি, এ বিষয়ে দেশের গণতান্ত্রিক সরকার গণতান্ত্রিক উপায়ে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। গণতন্ত্রের জয় হোক।

No comments

Powered by Blogger.