পবিত্র কোরআনের আলো-যারা অবাধ্যতার দিকে এগিয়ে যায়, তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই

১৭৪. ফানক্বালাবূ বিনি'মাতিম্ মিনাল্লাহি ওয়া ফাদ্বলিন লাম ইয়ামছাছহুম ছূউ ওঁয়াত্তাবাঊ' রিদ্বওয়া নাল্লাহি; ওয়াল্লাহু যূ ফাদ্বলিন আযীম। ১৭৫. ইন্নামা-যা-লিকুমুশ্ শাইত্বা-নু ইউখায়্যিফু আওলিইয়া-আহূ; ফালা-তাখা-ফূহুম ওয়াখা-ফূনি ইন কুনতুম্ মুমিনীন।


১৭৬. ওয়ালা-ইয়াহ্যুনকাল্লাযীনা ইউছা-রিঊনা ফিল কুফরি; ইন্নাহুম লান ইয়াদ্বুররুল্লাহা শাইয়ান; ইউরীদুল্লাহু আল্লা-ইয়াজআ'লা লাহুম হায্য্বান ফিল আখিরাতি; ওয়ালাহুম 'আযাবুন আলীম। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৭৪-১৭৬]
অনুবাদ : ১৭৪. এরপর আল্লাহর নিয়ামত ও বৈভব নিয়ে তারা ফিরে এল, কোনো রকম অনিষ্টই তাদের স্পর্শ করতে পারল না। এরা আল্লাহর সন্তুষ্টির পথই অনুসরণ করল, আর আল্লাহ তায়ালা মহাবৈভবশালী।
১৭৫. এই হচ্ছে তোমাদের প্ররোচনাদানকারী শয়তান, এরা তাদের সাক্ষীদের ভয় দেখায়, তোমরা কোনো অবস্থায়ই এদের ভয় করবে না, বরং আমাকেই ভয় করবে, যদি তোমরা ইমানদার হয়ে থাকো।
১৭৬. (হে নবী) যারা দ্রুত অবাধ্যতার দিকে এগিয়ে যায় তাদের কর্মকাণ্ড যেন আপনাকে চিন্তিত না করে। তারা কখনো আল্লাহর কোনো ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা এদের জন্য পরকালে কোনো প্রাপ্য রাখতে চান না; তাদের জন্য অবশ্যই কঠিন শাস্তি রয়েছে।
ব্যাখ্যা : ১৭৪ নম্বর আয়াতটিতে হামরাউল আসাদ অভিযানে যারা গিয়েছিল তাদের প্রশংসা বর্ণনা করা হয়েছে। একটা যুদ্ধের মর্মান্তিক পরাজয় কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাসুলের আহ্বান এল, মক্কার কুরাইশদের পেছন ধাওয়া করে হামরাউল আসাদ অভিযানের জন্য। সেই অভিযানে যারা গিয়েছিল তাদের কোনো ক্ষতি কেউ সাধন করতে পারেনি। তারা অক্ষত অবস্থায় বিজয়ের আনন্দ নিয়ে ফিরে এসেছিল। কারণ এরা আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ অবলম্বন করেছিল। অর্থাৎ রাসুল (সা.) তাদের যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তা আল্লাহর ইচ্ছায়ই। সুতরাং তারা আল্লাহর আনুগত্যেই সেই অভিযানে গিয়েছিল।
১৭৫ ও ৭৬ নম্বর আয়াতে মুনাফিকদের প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। মুনাফিকরা আসলে বদ প্ররোচনাদানকারী শয়তানেরই প্রতিরূপ। এরা অহেতুক মুসলমানদের শত্রুর ভয় দেখায়। মুনাফিকরা মুসলমানদের একটু দুর্বল দেখলেই সুযোগ পেয়ে যেত এবং শত্রুর আক্রমণের ভয় দেখাত। আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, এদের কথায় ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। মুসলমানদের সাথি সেজে মিছামিছি ভয় দেখানোই এদের কাজ। ভয় যদি পেতে হয়, তবে শুধু আমাকেই ভয় করো, অন্য কাউকে নয়।
১৭৬ নম্বর আয়াতে বেশ বিস্তারিতভাবেই বলা হয়েছে যে এরা মূলত কুফরির মধ্যেই নিমজ্জিত। এরা মুসলমানদের সঙ্গে আসে এবং দ্রুত কুফরিতে ফিরে যায়। আল্লাহ এখানে তাঁর রাসুলকে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, এদের কোনো কর্মকাণ্ড যেন তাঁকে চিন্তিত না করে। এরা যেখানেই সুদিন দেখে সেখানেই যায়, আবার যখন যেখানে বিপদ দেখে সেখান থেকে মুখ ফেরায়। এরা আল্লাহ ও তাঁর দ্বীনের কোনো ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। এরা তাদের কর্মফল হিসেবেই পরকালে হবে চরমভাবে বঞ্চিত। এদের বদকর্মের জন্যই পরকালে আল্লাহর কাছে এদের কোনো অংশ থাকবে না। বরং এদের জন্য পরকালে থাকবে শুধু শাস্তি।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী

No comments

Powered by Blogger.