বিএনপি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদত্যাগ দাবি করেছেন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তাঁরা মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস) গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।


বিএনপির সংসদীয় দলের পক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন। জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, রেহানা আখতার রানু, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, নীলুফার চৌধুরী মনি, রাশেদা বেগম হীরা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ এতে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, 'রেলমন্ত্রীকে নিয়ে ঘুষ কেলেঙ্কারিতে বর্তমান সংসদের সব সদস্য ও রাজনীতিবিদের সম্মান ও মর্যাদা চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। পুরো দেশ এতে স্তম্ভিত ও লজ্জিত। বিষয়টির সঙ্গে রেলমন্ত্রী জড়িত। তাই সংসদের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে।' একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনেরও দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মওদুদ আহমদ বলেন, 'ওই ঘটনার আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দেখতে চাই। তাই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের আগে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করলে তা সফল হবে না।' তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। আমরা আশা করব, এ ব্যাপারে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে পদক্ষেপ নেবেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কী পদক্ষেপ নেন, আমরা তার অপেক্ষায় আছি। আলটিমেটামের ৪৮ ঘণ্টা পার হলে আমরা আবারও সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী করণীয় জানাব।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, 'রেলমন্ত্রীর বাসায় ঘুষের টাকা যাচ্ছিল, এটা আজ পরিষ্কার হয়ে গেছে। তাই রেলমন্ত্রী ঘটনার সঙ্গে জড়িত। সরকার দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এই দুর্নীতির কারণে তারা দেশ পরিচালনা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই সরকারের দুর্নীতির কথা বলে আসছিলাম। আজ রেলমন্ত্রীর ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনা এর জ্বলন্ত সাক্ষী হয়ে গেছে।' গাড়িতে টাকা পাওয়ার সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, আসলে টাকা কত? ৭০ লাখ, নাকি তিন কোটি ৭০ লাখ, নাকি চার কোটি ৭০ লাখ?'
মওদুদ আহমদ বলেন, তারা পুঁজিবাজারের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িতদের কোনো শাস্তি দিতে পারেনি। বিদ্যুৎ খাতে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের নামে তারা কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করে যাচ্ছে।
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন নাইকোর কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল গাড়ি ঘুষ হিসেবে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মওদুদ বলেন, 'নাইকোর ঘটনার সঙ্গে রেলমন্ত্রীর ঘুষের ঘটনার সম্পর্ক নেই। এটা আকাশ-পাতাল ব্যবধান। এ নিয়ে আমি এখন কথা বলতে চাই না।' আগামী সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দল রেলমন্ত্রীর ঘুষের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরবে বলে তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.