ঢাবি শিক্ষকের হাত ভেঙে হাসপাতালে পাঠাল র‌্যাব

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষককে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা। গত বুধবার রাতে রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণখানে এ ঘটনা ঘটে। র‌্যাবের নির্যাতনে আহত ফিন্যান্স বিভাগের ওই শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন খানকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


মারধরের ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে এখন তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্যাতিত শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা অবিলম্বে দোষী র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. আমজাদ আলী গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়। প্রক্টর জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়টি র‌্যাবের মহাপরিচালককে জানিয়েছেন। তিনি ওই ঘটনায় দোষী র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষক সাইফুদ্দীন খান সাংবাদিকদের জানান, বুধবার রাতে তিনি উত্তরার দক্ষিণখানের গাওয়াইর এলাকার নিজ বাসা থেকে রূপনগরে শ্বশুরের বাসায় যাচ্ছিলেন। বাসা থেকে কিছু দূরেই রাস্তায় র‌্যাবের একটি প্রাইভেট কার দাঁড় করানো ছিল। চলাচলে অসুবিধা হওয়ায় তিনি গাড়িটি রাস্তার এক পাশে পার্কিং করতে বলেন। তখন সেনাবাহিনী থেকে র‌্যাবে আসা ল্যান্স করপোরাল নুরুল আমীন তাঁকে গালাগাল ও হুমকি-ধমকি দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দেওয়ার পরও র‌্যাবের গাড়িচালক নৌবাহিনী থেকে আসা আমীন মিয়া বলেন, 'র‌্যাব কী করতে পারে তা তো জানেন।' এ কথা বলেই তাঁরা তাঁর কপালে ঘুষি মারেন এবং বুকে লাথি মারেন। মারধর ঠেকাতে গিয়ে তাঁর বাঁ হাতের কনুই ভেঙে যায়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, র‌্যাবের হাতে নির্যাতিত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমানকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এম সোহায়েল সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় র‌্যাব সদস্যরা সাদা পোশাকে ছিলেন। তাঁদের সহনশীল হওয়া উচিত ছিল। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.