কুয়াকাটায় জমি-বাণিজ্য-কর্তৃপক্ষের সম্বিত ফিরবে কবে?

ক্ষিণাঞ্চলের সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার পর্যটন এলাকায় হাউজিং কোম্পানিগুলোর জমি কেনাবেচা বাণিজ্য বেশ রমরমা। জমি কেনাবেচা সম্পর্কে প্রশাসনের টানানো সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড কেউ আমলে নিচ্ছে বলে মনে হয় না। ফলে উপকূলীয় পর্যটন এলাকাটি ভবিষ্যতে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করার মতো ক্ষমতাই হয়তো হারিয়ে ফেলবে।


অথচ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের পর কুয়াকাটা বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের ক্ষমতা রাখে। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় প্রশাসন কেন এখনও এই উপকূলীয় এলাকা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার পরও সে অনুযায়ী দ্রুত সহায়ক ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। এ ব্যাপারে বুধবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের পর্যটন এলাকায় কোনো হাউজিং কোম্পানিকে জমি বা প্লট কেনাবেচা বা হাউজিং ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে অনুমতি লাভের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আবেদনও করেনি। এরপরও নামিদামি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রায় অর্ধশত হাউজিংয়ের নামে এখনকার জমি হাতবদল হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী জেলা ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়েই তাদের অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে প্রায় নির্বিবাদে। এতে করে এর সঙ্গে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের যোগসাজশ থাকা বিচিত্র নয়। এভাবে কুয়াকাটার পর্যটন এলাকাকে ঘিরে একটি স্বার্থান্বেষী মহল গজিয়ে উঠেছে। এই মহল জমির হাতবদল হলেই খুশি। কারণ এতে সংশ্লিষ্টদের সবার ঝুড়িতে লাভের একটা অংশ জমা হয়। এখনই প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা না হলে পর্যটন এলাকাটিকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে যেমন বেগ পেতে হবে, তেমনি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আদালত এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার জন্ম দিতে পারে। দেশের অন্য পর্যটন এলাকাগুলোর মতো যেন কুয়াকাটা অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে পর্যটক টানার স্বাভাবিক ক্ষমতা না হারিয়ে ফেলে সে ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। যেসব হাউজিং কোম্পানি অবৈধভাবে কুয়াকাটায় জমি কেনাবেচা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কুয়াকাটায় পরিকল্পিত পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সেখানে জমি হস্তান্তর সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা যেতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.