মন্ত্রীর এলাকায় সওজের তৎপরতা!-বেহাল সড়ক

যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নিজ জেলা নোয়াখালীর বাণিজ্যিক শহর চৌমুহনীর সড়কটির ভাগ্য প্রসন্নই বলতে হবে। মন্ত্রী সেখানে যাওয়ার পরই সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা আক্ষরিক অর্থে ঘুম হারাম করে সড়ক মেরামতের কাজে নেমে পড়েছেন।


বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর সংবাদে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে নতুন যোগাযোগমন্ত্রী নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে ফিরে আসার পথে চৌমুহনীর প্রধান সড়কের বেহাল অবস্থা দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন এবং সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীকে যত দ্রুত সম্ভব সড়কটি মেরামতের নির্দেশ দেন। এর পর থেকে সেখানে সড়ক সংস্কারের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
মন্ত্রীর এই নির্দেশ নিশ্চয়ই চৌমুহনীর বাসিন্দাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেবে। কেননা যোগাযোগমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করার সাধ্য নেই সওজের। আশা করা যায়, অবিলম্বে সড়ক মেরামতের কাজ শেষ হবে এবং অটোরিকশায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের ১৫ মিনিট লাগবে না। কিন্তু মন্ত্রীর এই নির্দেশ একই সঙ্গে অন্যান্য এলাকার বাসিন্দাদের মনে বঞ্চনাবোধ জাগাবে। যেখানে মন্ত্রীর পদস্পর্শ পড়বে না সেখানকার রাস্তাঘাটগুলোর কী হবে? মন্ত্রীর নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কি সওজের কর্মচারী-কর্মকর্তারা চুপচাপ বসে থাকবেন?
সড়ক-মহাসড়কগুলো যান চলাচলের উপযোগী রাখা সওজের দায়িত্ব। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী বড় বড় প্রকল্পের স্বপ্নে এতটাই বিভোর ছিলেন যে সড়ক সংস্কারের মতো রুটিন কাজে তিনি মনোযোগ দিতে পারেননি। বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে হয় তিনি অন্তত সড়ক ও সেতুগুলো যান চলাচলের উপযোগী রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তবে সওজের কর্মকর্তাদের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে তাঁরা সড়ক সংস্কারে যতটা আগ্রহী তার চেয়ে বেশি উৎসাহী মন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করতে।
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সড়ক সংস্কার না হওয়ার জন্য বরাদ্দের অপ্রতুলতা দেখালেও আসলে তিনি তাঁর মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে অযোগ্যতা ও অদক্ষতার প্রমাণ রেখে গেছেন। নতুন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দুর্নীতির কালো বিড়াল খুঁজে বের করার কথা বলেছেন। সেই কালো বিড়াল যে কেবল রেলের বগিতেই আছে, তা ভাবার কারণ নেই। সড়ক ভবন তথা সওজের ইটবালুতেও কী পরিমাণ কালো বিড়াল লুকিয়ে আছে, সারা দেশের বেহাল সড়কগুলো হালে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব নতুন যোগাযোগমন্ত্রীরই।

No comments

Powered by Blogger.