জেমস বন্ড ধাঁচে গোয়েন্দাগিরি!

পন্যাসের চরিত্র দুর্ধর্ষ গুপ্তচর জেমস বন্ডের কায়দায় রাশিয়ার ওপর গোয়েন্দাগিরি করেছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের সাবেক একজন কর্মকর্তা প্রথমবারের মতো এ রকম একটি ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। ছয় বছর আগে রাশিয়া যুক্তরাজ্যের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে গোপন বার্তা আদান-প্রদানের অভিযোগ আনে। লন্ডন শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল।


ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের চিফ অব স্টাফের দায়িত্ব পালন করা জোনাথন পাওয়েল বৃহস্পতিবার বিবিসি রেডিওতে প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে রাশিয়ার অভিযোগ সত্য বলে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে বেশি কিছু বলার নেই। নকল পাথরের ভেতরে বসানো গোয়েন্দাগিরির যন্ত্রের ব্যাপারটা ছিল বেশ বিব্রতকর। ... এটা স্পষ্ট যে রাশিয়া বিষয়টি জেনে ফেলেছিল এবং ভবিষ্যতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য তখন উচ্চবাচ্য করেনি।’
যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগ এনে ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রচার করা হয়। এতে দেখা যায়, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি সড়ক থেকে ব্রিটিশ একজন গুপ্তচর পাথরের মতো একটি বস্তু কুড়িয়ে নিচ্ছেন। এর মধ্যে একটি ট্রান্সমিটার লোকানো দেখা যায়। ট্রান্সমিটারটির মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের কূটনীতিকেরা বার্তা আদান-প্রদান করতেন বলে অভিযোগ করে রাশিয়া।
ওই সময় রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে দেশটি রাশিয়ার গণতন্ত্রপন্থী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে অর্থ দিচ্ছে। এফএসবি আরও বলেছিল, মস্কোয় ব্রিটিশ দূতাবাসের চারজন কূটনীতিক নকল পাথরের ভেতরে বসানো ওই গোয়েন্দা যন্ত্র ব্যবহার করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে রাশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশ এনজিওগুলোর বিদেশ থেকে অর্থ নেওয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে আইন প্রণয়ন করেন।
রাশিয়া জোনাথন পাওয়েলের মন্তব্য নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে তৎকালীন এফএসবির প্রধান ও বর্তমানে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমার সদস্য নিকোলাই কোভালিয়োভ একে দেখছেন সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের যে সময় এসেছে, লন্ডনের এ স্বীকারোক্তি তার এক আন্তরিক ইঙ্গিত।’ এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.