যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বিশ্বজনমত আমলে নেওয়া-ইউনেসকোয় ফিলিস্তিনের সদস্যপদ

উনেসকোর সদস্যপদ পাওয়ার মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল ফিলিস্তিন। জাতিসংঘের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেসকোর সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকাও কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল বিরোধিতা ব্যর্থ হওয়ায় বোঝা যায়, ফিলিস্তিন প্রশ্নে তাদের অবস্থান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থন করছে না। শাস্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইউনেসকোকে চাঁদা দেওয়া বন্ধ করার যে ঘোষণা দিয়েছে, তাতে তার স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবই প্রকাশ পেয়েছে।


গত মাসের মাঝামাঝি ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ণ সদস্য করে নেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ বিভক্ত হয়ে পড়ে। সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তথা পিএলওর (ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা) দাবিকে ‘বোধগম্য’ বললেও ইসরায়েলি দখলদারির প্রধান পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার স্বীকৃতির দাবিকে ‘আপত্তিকর’ বলে ভেটো দেয়। এর পরও ফিলিস্তিনিরা কমপক্ষে ১৩০টি দেশের সমর্থন পায়। এ মুহূর্তে ফিলিস্তিন সদস্যপদ পেতে ব্যর্থ হলেও তাদের এই কূটনৈতিক উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়েছে। এরই প্রতিফলন ঘটল ইউনেসকোর সদস্যপদ প্রাপ্তি। ফিলিস্তিনি জনগণকে তাই অভিনন্দন, অভিনন্দন ইউনেসকোকেও।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাসংগ্রাম আধুনিক দুনিয়ার সবচেয়ে পুরোনো সংগ্রাম। ইউনেসকোর স্বীকৃতি সেই সংগ্রামে ফিলিস্তিনের পক্ষে যতটাই অর্জন, ইসরায়েলের পক্ষে ততটাই ব্যর্থতা। পাশ্চাত্যের জনমত, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চাপে ইউরোপের অনেক দেশ এখন আর সরাসরি ফিলিস্তিনের বিরোধিতা করতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, পিএলওর তরফ থেকে গণ-আন্দোলন, আন্তর্জাতিক প্রচার ও কূটনৈতিক তৎপরতার কৌশল গ্রহণ কার্যকর হওয়ায় ইসরায়েলের পক্ষে ফিলিস্তিনিদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করাও কঠিন হয়ে পড়ল।
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতাসংগ্রামের দুটি ধারা—মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ ও ইসমাইল হানিয়ার হামাসসহ সব ধারার ঐক্য এখন সময়ের দাবি।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র, তার সরকার ও জনগণ সব সময়ই ফিলিস্তিনের মুক্তির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও অর্থবহভাবে নিপীড়িত ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াব—এটা আমাদের অঙ্গীকার।

No comments

Powered by Blogger.