সংঘর্ষের নেপথ্যে গাদ্দাফিপন্থীরা হলে পাল্টা পদক্ষেপ: এনটিসি

নি ওয়ালিদে সহিংসতার নেপথ্যে সাবেক স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিপন্থীরা রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে সেখানে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার এনটিসি। সরকারের ভাষ্যমতে, সেখানে গাদ্দাফিপন্থী না বিবদমান গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সরকারি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হয়েছে, তা গত মঙ্গলবার পর্যন্তও স্পষ্ট নয়।


গাদ্দাফিপন্থীদের সাবেক ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বনি ওয়ালিদ শহরে গত সোমবারের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচ ব্যক্তি মারা যায়। স্থানীয় কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, সরকারি সেনা-ঘাঁটিতে গাদ্দাফিপন্থীদের হামলার পরই সেখানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তবে তাঁদের এ দাবি শক্তভাবে নাকচ করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাওজি আবদেলালি। এ ছাড়া ওই শহর পরিদর্শনকারী সাংবাদিকেরাও বলেছেন, কারা ওই সহিংস ঘটনার নিয়ন্ত্রক তা স্পষ্ট নয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাওজি আবদেলালি এক সংবাদ সম্মেলনে গত মঙ্গলবার বলেন, সেখানে সহিংস ঘটনার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। তবে গাদ্দাফিপন্থীরাই যদি ওই সহিংসতার জন্য দায়ী হয়, তবে সেখানে হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
আবদেলালি বলেন, আরও তথ্যের জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন। তড়িঘড়ি করে কোনো কাজ করা হবে না। লিবিয়ার শৃঙ্খলা বিনষ্টের সাহস দেখানো যে কাউকে মোকাবিলা করতে কর্তৃপক্ষের সামর্থ্য রয়েছে।
এর আগে লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার মঙ্গলবার সকালে বনি ওয়ালিদে ওই সহিংস ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠক করে। শহরটিতে এখন শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
গত সোমবার সহিংসতা শুরু হওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেলালি দাবি করেন, বনি ওয়ালিদে সংঘর্ষের মূল কারণ ‘অভ্যন্তরীণ সমস্যা’। লিবিয়ার টেলিভিশনকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গত বছরের গৃহযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের ইস্যুকে কেন্দ্র করে ওই সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া স্থানীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শহরের ভেতর থেকে যে সংবাদ পেয়েছি, তাতে কোথাও বলা হয়নি যে সেখানে ভবনগুলোতে সবুজ পতাকা উড়ছে।’
তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সোমবার গাদ্দাফিপন্থীরা বনি ওয়ালিদ শহর দখল করে সেখানে গাদ্দাফির ৪২ বছরের শাসনের প্রতীক সবুজ পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বনি ওয়ালিদের উপজাতীয় নেতা কর্নেল সালেম আল-কুয়ার গত মঙ্গলবার বলেন, শহরে শান্তি ফিরে এসেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তিনি আরও জানান, সেখানে যা ঘটেছে, তা সম্পূর্ণই স্থানীয় সংঘাত। সমস্যা সমাধানে স্থানীয় উপজাতীয়দের প্রতিনিধিরা বনি ওয়ালিদের বাইরে প্রতিবেশী শহর জিনতান ও সাব-সাহারা অঞ্চলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
প্রসঙ্গত, এনটিসি যোদ্ধাদের হাতে নিহত গাদ্দাফির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল রাজধানী থেকে ১১০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বের শহর বনি ওয়ালিদ। গত ২৩ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে লিবিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার পর বনি ওয়ালিদ দখলের সর্বশেষ এ লড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা, দেশে শান্তি বজায় রাখতে অসমর্থ ও অভ্যন্তরীণ বিভেদের চিত্রই ফুটে উঠেছে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.