টিকিট কেনাবেচায় কারসাজি বন্ধ করুন-ঈদে ঘরে ফেরা

দুল আজহা উদ্যাপনের জন্য রাজধানী ঢাকা থেকে যাঁরা বাসে বাড়ি যাবেন, তাঁরা এক সপ্তাহেরও বেশি আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কেনার চেষ্টা শুরু করেছেন। কিন্তু ইতিমধ্যে অধিকাংশ বাস কোম্পানির অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মানুষের ভোগান্তি ও ক্ষোভ প্রকাশের বিবরণ পাওয়া গেল।
প্রতি ঈদেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়; বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে এমন খবর পেয়ে মানুষ টিকিট কিনতে গিয়ে শুনতে পান, টিকিট শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু শুরু হতে না-হতেই কী করে সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে যায়—টিকিট ক্রয়েচ্ছু মানুষের এই জিজ্ঞাসার সদুত্তর মেলে না। অভিযোগ আছে, টিকিট নেই বলা হলেও ঈদের ঠিক আগে আগে অত্যন্ত চড়া দামে সেগুলো বিক্রি করা হয়। প্রথম আলোর প্রতিবেদনেও একাধিক মানুষের এমন অভিযোগের কথা লেখা হয়েছে। ঢাকা বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা এসব অভিযোগের কথা জানেন; অথচ সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট হন না।
ঈদ উপলক্ষে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে চড়া দামে বাসের টিকিট কালোবাজারি করার প্রবণতা নতুন নয়। কিন্তু এই অসাধুুতা বন্ধ করতে সরকারের তরফ থেকে কখনোই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। শুধু বাস নয়, লঞ্চের টিকিট কেনার ক্ষেত্রেও একই রকমের সমস্যায় পড়েন বিপুলসংখ্যক মানুষ। আর রেলপথের ভোগান্তির কথা বলাই বাহুল্য: রেলগাড়ির ছাদভর্তি যাত্রীর ছবি প্রতি ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে। অগ্রিম টিকিট কেনাবেচায় সরকারি কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় মানুষকে বাড়তি টাকা খরচ করেও ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রতি ঈদেই এটা চলে আসছে বলে সরকার হয়তো ধরে নিয়েছে যে এ ক্ষেত্রে তার কিছু করার নেই, অথবা কার্যকর কিছু করা সম্ভব নয়। কিন্তু সুষ্ঠু নজরদারি থাকলে পরিস্থিতি এত খারাপ হতে পারত না। অন্ততপক্ষে সরকার এটা নিশ্চিত করতে পারে যে কোনো বাস কোম্পানি টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে কারসাজি করার সুযোগ পাবে না। কঠোর নজরদারি ও সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হলে জনগণের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে, লাগামহীনভাবে জনগণের গাঁটকাটা খুব কঠিন হয়ে যাবে। সময় থাকতেই সরকারের উদ্যোগী হওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.