সাদাকালো-সীমান্তের ঘটনাদি বন্ধুসুলভ নয় by আহমদ রফিক

বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন ভারত বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত। একাত্তরে পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে সূচিত প্রতিরোধ যুদ্ধের পর সংঘটিত স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের সাহায্য-সহযোগিতা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ বরাবরই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে ভারতের সে অবদান স্বীকার করে এসেছে। একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। তাতে ধরে নেওয়া হয় যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সার্বিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ও জোরদার হবে।


সন্দেহ, অবিশ্বাস ও বিরূপতার অবকাশ থাকবে না। আওয়ামী লীগ-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মূল্যায়ন এমনই।
কিন্তু নদীর পানি বণ্টন, টিপাইমুখ বাঁধ, ছিটমহল, বাণিজ্য-বৈষম্য ইত্যাদি নানা বিষয়ে ভারতের আচরণ কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ের নয়। তবে সব কিছু ছাড়িয়ে গেছে সীমান্তে নিয়মিত বাংলাদেশি হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনাবলিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের নির্মম অমানবিক আচরণ। বছরখানেক আগে অনেক ঘটনার মধ্যে অবিশ্বাস্য 'খবর' হয়ে উঠেছিল সীমান্তের কাঁটাতারে 'ফেলানি' নামের এক কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ_ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর (বিএসএফ) বর্বরতার উদাহরণ হিসেবে, যে ধরনের বর্বরতার ব্যাপক রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম একাত্তর সালে ৯ মাস ধরে পাকিস্তানি বাহিনীর কার্যকলাপ ও তাণ্ডবে।
কিশোরী ফেলানীর করুণ মৃত্যু ভারতীয় সাংবাদিক মহলেও আলোড়ন তোলে। কারণ ফেলানী চোরাচালানি ছিল না, ফেলানী নিরপরাধ কিশোরী। আর চোরাচালানি হলেও দেখা মাত্র গুলি করে মেরে ফেলা কতটা নৈতিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কারণ যেকোনো অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিচার করে শাস্তি দেওয়াটাই সভ্যজগতের নিয়ম। বিএসএফ সেসব নিয়মকানুন বা নৈতিকতার ধার ধারে না এবং এখনো ধারছে না। বরং অনৈতিক ধারাটাই অব্যাহত রয়েছে।
এমনকি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আশ্বাসও বিএসএফের তৎপরতায় প্রতিফলিত হচ্ছে না। এর প্রমাণ ওই ফেলানীর ঘটনার পরও ঘটে চলেছে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা। ঘটছে সীমান্তরক্ষী-প্রধানের ঘোষণার পরও। তাতে মনে হতে পারে, বিএসএফ জওয়ানরা ওপরমহলের কথা শুনছে না অথবা ওপরমহলের ঘোষণায় আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। আমরা জানি না, এর কোনটা সত্য। কারণ এখনো সীমান্তে অবাঞ্ছিত ঘটনা বন্ধ হয়নি।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ সীমান্তরেখা, এক দেশ বিভক্ত হলে যা হয়, আর সে বিভাগ যদি ভৌগোলিক অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি করে, যেমনটা দেখা গেছে ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগে, বিশেষ করে বঙ্গদেশ বিভাগে। জানি না, তৎকালীন পাঞ্জাব বিভাগে এ ধরনের উদ্ভটত্ব ছিল কি না। পাঞ্জাবে থাকুক না থাকুক, বঙ্গ বিভাগে তা ছিল র‌্যাডক্লিফ সাহেবের বাটোয়ারার উদ্ভট লাইন টানার কারণে। কারো বাড়ির একাংশ পড়েছে ভারতে, বাকি অংশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশে। অনেক বাংলাদেশির জমি পড়েছিল সীমান্তের ওপারে। আর ছিটমহলগুলোর কথা নাই বলি। ওইসব জমিতে চাষ করতে গিয়ে গুলির শিকার হন চাষিরা।
একটি অস্বাভাবিক রাজনৈতিক ভূখণ্ড বিভাজন অনুরূপ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে ১৯৪৭ সালে এবং বিভক্ত দুই রাষ্ট্র কারো পক্ষ থেকেই যথাসম্ভব তা সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে বিরূপতা ও তিক্ততার মধ্য দিয়ে রক্তস্নানে উপমহাদেশ বিভাগ হলো, তাতে সহযোগিতা বা সহমর্মিতার পরিবেশ ছিল না বলেই তা সম্ভব হয়নি। কিন্তু একাত্তরের পর দুই বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সহমর্মী পরিবেশে রাষ্ট্রিক অসংগতিগুলো দূর হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। এমনকি ছিটমহল সমস্যাও দূর হয়নি। ছিটমহলবাসীর যন্ত্রণা-জর্জরিত জীবনযাপনের অবসান ঘটেনি এখনো।
কেন হয়নি অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মীমাংসা? অপ্রিয় হলেও সত্য যে এ বিষয়ে ভারতীয় পক্ষ থেকে সদিচ্ছার অভাব। তাই তাদের কোনো আশ্বাস বাস্তবায়িত হয় না। পারস্পরিক যোগাযোগ, বাণিজ্য ইত্যাদি নানা বিষয়ে যেখানে ভারতীয় স্বার্থ জড়িত, সেখানেই কিছু ঘটে, অন্যত্র সব শূন্য। সাংস্কৃতিক লেনদেনের মতো নির্দোষ বিষয়েও ওই একমুখী আচরণ কাজ করে।
বাংলাদেশে ভারতীয় বইয়ের বিশাল বাজার। কিন্তু ভারতে অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি বইপত্র বড় একটা যায় না। বইমেলার অভিজ্ঞতা বলে, সেখানে বাংলাদেশি বইয়ের চাহিদা আছে, তা সত্ত্বেও বিক্রেতারা নাকি এপার থেকে বই আমদানিতে আগ্রহী নন। একই রকম ঘটনা টিভি চ্যানেলগুলো নিয়ে। অনেক ভারতীয় বাঙালি তরুণের মুখে শুনেছি এখানকার টিভি অনুষ্ঠানবিষয়ক প্রশংসা_কিন্তু সরকারি নীতির অবাক রুদ্ধতায় এ দেশি টিভি চ্যানেল ভারতে প্রবেশাধিকার পায় না। অন্য কিছুর কথা নাই বলি।
যেমন_সম্প্রতি ঘটে গেল তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে এক অবিশ্বাস্য নাটক। এ নাটকের প্রকাশ্য ও নেপথ্য নায়করা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন ওপারের ভূমিকা ন্যায়সংগত ছিল, সঠিক ছিল। অনুরূপ একাধিক ঘটনার পরও বর্তমান বাংলাদেশ সরকার অভাবিত উষ্ণতায় সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে রেখেছে। সে উষ্ণতায় প্রচ্ছন্ন বা নেপথ্য-বরফ গলছে না। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের আচরণে লক্ষ্য করি, এক-পা আগ বাড়ানো বন্ধুত্ব-প্রত্যাশা। এর কারণ কি তাহলে পাকিস্তানের সামরিক শক্তি-সামর্থ্য, তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকার? হয়তো বা।
অন্যদিকে বাংলাদেশ দুর্বল রাষ্ট্র বলেই কি এতটা অবহেলা! দুর্বলের বন্ধুত্ব সবল বন্ধুও হেলায় সরিয়ে দেয়_এটা বহুকথিত বহুশ্রুত নীতিবাক্য। তা না হলে একাত্তর-পূর্ববর্তী পূর্ববঙ্গ তথা পূর্ব পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান তো কম হয়নি। এ অভিজ্ঞতা ষাট-সত্তরোর্ধ্ব বয়সের অনেক বাঙালির। কিন্তু তখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে বর্তমানকালে সংঘটিত নৃশংসতা দেখা যায়নি, শোনা যায়নি। তখন কাঁটাতারের বেড়াও ছিল না_ছিল না ঝুলন্ত কোনো 'ফেলানি'র বুলেটদীর্ণ লাশ।
ভারতের 'চিরশত্রু' বলে কথিত পাকিস্তান আমলে যা ঘটেনি সীমান্তে, তা নিয়মিত ঘটছে বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশ আমলে। রহস্যের মতো বা ধাঁধার মতো এ বিষয়ের উত্তর কোথায় মিলবে, কে দিতে পারবে জানি না; কিন্তু জবাব ভারতীয় প্রশাসন ও ভারত সরকারের কাছেই রয়েছে। তারাই বলতে পারবে, কেন উভয় রাষ্ট্রের স্বার্থে ছিটমহল সমস্যার অবসান ঘটছে না, কেন ফেলানীর ঘটনার পর আশ্বাস সত্ত্বেও বাংলাদেশি যুবকের লাশ পড়েছে সীমান্তরক্ষীর গুলিতে। কেন কিছুদিন আগে সীমান্তে এক বাংলাদেশি যুবককে উলঙ্গ করে বেধড়ক পিটিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী_যা আবার ভারতীয় টিভি চ্যানেলেই দেখা গেছে।
আজকের লেখাটা ওই হতভাগ্য যুবকের জন্যই। যাকে পেটানো হলো উলঙ্গ করে লজ্জা শুধু তারই নয়, লজ্জা পুরো দেশবাসীর, লজ্জা বাংলাদেশ সরকারের জন্যও। বন্ধুর হাতে এভাবে লজ্জাজনক মার খাওয়া_বলতে হয় এ লজ্জা রাখি কোথায়? সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ কাজের জবাবদিহিতা অবশ্যই প্রাপ্য বাংলাদেশ সরকারের। কারণ যতদূর মনে পড়ে, ফেলানীর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর পর ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদাম্বরম এবং সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও আশ্বাস দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সরকারকে যে এ ধরনের অন্যায় আর ঘটবে না। কিন্তু ঘটেছে, ঘটছে।
শুধু হত্যা নয়, অমানবিক প্রহার তথা নির্যাতনও অবন্ধুসুলভ আচরণের অন্তর্ভুক্ত। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আটরশিয়া গ্রামের যুবক হাবীবুর রহমান এ লজ্জাজনক নির্যাতনের শিকার। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, ভারত থেকে গরু কিনতে গিয়ে যে কারণেই হোক গরু না পেয়ে ফিরে আসার পথে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা দুই সঙ্গীসহ তাকে আটক করে। বাকি দুজন পালিয়ে যায়। কিন্তু বিএসএফ জওয়ানদের দাবি অনুযায়ী টাকা, মোবাইল ফোন ইত্যাদি দিতে না পারায় উলি্লখিত অমানুষিক নির্যাতনের শিকার ওই যুবক। তাকে অজ্ঞান অবস্থায় সরিষা ক্ষেত থেকে উদ্ধার করে সীমান্তবর্তী গ্রামের লোকজন।
এ ঘটনার জন্য 'ভারতের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ'। বলা বাহুল্য, দোষীদের শাস্তি প্রদানের দাবিও জানানো হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। জানা গেছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ থেকে এ ঘটনার পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএসএফের আট সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বুঝতে কষ্ট হয় না যে কলকাতার একাধিক দৈনিক পত্রিকায় ঘটনার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ ও টিভি চ্যানেলে নির্যাতনের দৃশ্য প্রদর্শনের কারণে এ জাতীয় চিকিৎসামূলক ব্যবস্থা।
কিন্তু অনুমান করতে পারি, এমন ঘটনা এমনকি এর চেয়ে নির্মম ঘটনা অর্থাৎ হত্যাকাণ্ডও ভবিষ্যতে ঘটবে ক্রুদ্ধ বিএসএফ জওয়ানদের পক্ষ থেকে। যেমন ঘটেছে ফেলানী ও অনুরূপ একাধিক হতভাগ্যের মৃত্যুর পরও। রাজনীতি এমনই বিষয় যে সে মানবিক বোধের ধার ধারে না। শক্তিমানের কাছে সে নত, দুর্বলের প্রতি সে প্রয়োজনে সংহারক রূপ নিয়ে দেখা দেয়। আমাদের দুর্ভাগ্য যে এ অঞ্চলের বাঙালিদের সেই পাকিস্তান আমল থেকে এ পর্যন্ত নানাভাবে অন্যায় নির্মমতার শিকার হতে হচ্ছে।
আগেও বলেছি, এখনো বলি_অস্বাভাবিক দেশ ভাগের কারণে সীমান্তরেখায় সাবেক একই দেশের বাসিন্দাদের আসা-যাওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা। আত্মীয়স্বজনদের দেখতে যাওয়া হরহামেশা চলে। চলে কেনাবেচা ও লেনদেনের কারবার। এর মধ্যে পশু কেনাবেচার ঘটনা সর্বাধিক। আর এ কথাও সবারই জানা যে এসব ক্ষেত্রে গ্রামীণ মানুষের যাতায়াত পাসপোর্ট-ভিসার মাধ্যমে চলে না। এপার-ওপার_দুপারের ক্ষেত্রেই কথাটা সত্য, তবে এপার থেকে যাতায়াত বেশি। এককথায় বেআইনি যাতায়াত।
সে ক্ষেত্রে কেউ যদি আইন লঙ্ঘন করে থাকে, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিচার হতে পারে। কিন্তু তার বদলে এভাবে পিটিয়ে মৃত্যুর দরজায় পেঁৗছে দেওয়া_তাও আবার ঘুষ না পেয়ে, কোনো আইনে পড়ে না। এ ঘটনা সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপরাধ। ওই হাবীবুর রহমান নামের অনুপ্রবেশকারীর যেমন অবৈধ প্রবেশের জন্য ভারতীয় আইন অনুযায়ী শাস্তি হতে পারে, তেমনি শাস্তি পাওয়ার যোগ্য বিএসএফ জওয়ানরাও, যারা দিনের পর দিন নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে। এবং তা ওপরতলার নির্দেশ অমান্য করে। এটা কি সম্ভব?
আমরা অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকার এসব ঘটনার যথারীতি প্রতিবাদ ও অপরাধীদের শাস্তি দাবি করে চলেছি। কয়জনের শাস্তি হচ্ছে, আদৌ হচ্ছে কি না তা আমাদের জানা নেই। যা জানা আছে বা যা বুঝে নিতে হচ্ছে, সে অপ্রিয় বিষয়টি হলো_ভারত সরকারের কাছে এসব ঘটনার কোনো গুরুত্ব নেই। গুরুত্ব নেই আরো অনেক বিষয়ে, অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে, যা এর আগে উলি্লখিত। তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে ভারত বাংলাদেশকে আদৌ বন্ধুরাষ্ট্র বলে মনে করে না, বিশেষ করে বর্তমান ভারত, আণবিক অস্ত্রশক্তির অধিকারী শক্তিমান বিশাল ভূখণ্ডের ভারত? রবীন্দ্রনাথের 'কণিকা' কাব্যগ্রন্থের একটি চতুষ্পদী প্রাসঙ্গিকভাবে মনে পড়ছে। হয়তো তা-ই। আর সে কারণেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের ও স্বাধীনতালাভের অকৃত্রিম বন্ধু একাত্তরের ভারত আর বর্তমান ভারতের মধ্যে অনেক ফারাক। তখনকার রাজনৈতিক প্রয়োজনের বন্ধু এখন আর আর্থ-রাজনৈতিক বন্ধুত্বের প্রয়োজন বোধ করে না। কারণ শক্তিমান ভারতের পক্ষে প্রয়োজনটাই যখন ফুরিয়ে গেছে, তখন কেন আর সুতোটা ধরে রাখা। কিন্তু ভূ-রাজনৈতিক-কূটনৈতিক বন্ধুত্বের প্রয়োজন কি একেবারেই ফুরিয়ে গেছে? বাংলাদেশ তা ভেবে দেখতে পারে এবং ভেবে দেখাটা রাজনৈতিক কারণেই অপরিহার্য। রাজনীতি তো কখনোই কূটনীতি-বহির্ভূত নয়। তাই বাংলাদেশের জন্য এমন কূটনীতি প্রয়োজন, যাতে বাংলাদেশকে বন্ধুরাষ্ট্র না হোক অন্তত বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে ভাবতে বাধ্য হয় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত।
লেখক : ভাষাসংগ্রামী, রবীন্দ্র গবেষক, কবি, প্রাবন্ধিক

No comments

Powered by Blogger.