বাংলাদেশ-মিয়ানমার বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ

বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের নেতৃত্বে সফররত বাণিজ্য প্রতিনিধি দল গতকাল শুক্রবার মিয়ানমারের অর্থ, বাণিজ্য, জ্বালানি, বৈদেশিক সম্পর্ক ও বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অন্যান্য স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে পারস্পরিক লেনদেনের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা সহজীকরণ,
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কোস্টাল শিপিং, দু'দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল, সীমান্ত বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সূত্র জানায়, মিয়ানমারে সফররত বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি দেশটির অর্থমন্ত্রী উ লা তুনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা আর্থিক লেনদেনের জন্য এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (এসিইউ) মাধ্যমে এলসি খোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা মিয়ানমার নিতে পারে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী মিয়ানমারের অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করেন। সূত্র জানায়, এসিইউর মাধ্যমে এলসি খোলার বিষয়ে পরস্পর বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করা হয়।
মিয়ানমার এলসির মাধ্যমে বিশ্ববাণিজ্য না করে নগদ অর্থের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পাদন করে থাকে। ফলে বড় আকারের লেনদেন করতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এটাকে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের প্রধান অশুল্ক বাধা মনে করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি পরে মিয়ানমারের জ্বালানিমন্ত্রী উ থার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান মিয়ানমার থেকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা মিয়ানমারের জ্বালানিমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

মিয়ানমার রাজি হলে মিয়ানমারের সমুদ্রতীরে যৌথভাবে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাস রফতানির বিষয়টি মিয়ানমার সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সমুদ্রতীরে যৌথভাবে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে দু'দেশের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে আলোচনা হতে পারে বলেও মিয়ানমারের জ্বালানিমন্ত্রী জানিয়েছেন।
দু'দেশের প্রতিনিধি দল পর্যায়ের বৈঠকে কোস্টাল শিপিং, সরাসরি বিমান চলাচল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সংক্রান্ত সহযোগিতা ও সীমান্ত বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর উপায় হিসেবে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের ঘন ঘন সফর ও জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় মিয়ানমারকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান মিয়ানমারের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে মিয়ানমারের বাণিজ্যমন্ত্রী তা গ্রহণ করেন।
মিয়ানমারের বৈদেশিক সম্পর্ক ও বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকালে আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিয়ানমার সফরের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে আশা ব্যক্ত করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.