পাকিস্তান ভীতি নেই রিয়াদদের

চোখে স্পষ্ট ঘুমজড়ানো ক্লান্তি; কিন্তু তাতেও মুখের হাসিটা ঢাকা পড়েনি। টানা বিমান ভ্রমণের জড়তা কাটিয়ে ফরহাদ রেজাই প্রথমে হেসে দিলেন শাহরিয়ার নাফীসকে দেখে। জরুরি তলব পেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে বিমান ধরেছিলেন। তাতেও অবশ্য গতকাল সকাল থেকে শুরু হওয়া কোচ স্টুয়ার্ট লর ক্যাম্পে যোগ দিতে পারেননি। এয়ারপোর্ট থেকে ফরহাদ রেজা সরাসরি মিরপুরে এসে দেখেন, দিনের অনুশীলন ভঙ্গ করে একেকজন বাড়িতে


ফিরছেন। মাঠে চলছে মহিলা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম হওয়ার ম্যাচ। অথচ সাংবাদিকদের ভিড়টা একাডেমী মাঠের আশপাশে তারই সতীর্থদের ঘিরে। ফরহাদ রেজার বুঝতে বাকি থাকে না যে, মিরপুরে পাকিস্তান সিরিজের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নাফীস ছাড়াও তিন বছর বাদে দলে ফেরা এ সদস্যকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন ইমরুল-শফিউলরা। এমন শুভেচ্ছা-স্বাগত পাওয়াটা ফরহাদ রেজার কাছে নতুন নয়, তারপরও গতকাল সবার কাছ থেকে এমন ইতিবাচক সাড়া পেয়ে যথেষ্টই অভিভূত ফরহাদ রেজা। 'আজকের এ ফেরাটা অবশ্যই আমার কাছে অন্যরকম। বিমানে আসতে আসতেই ভাবছিলাম, ঠিক কত দিন পর আবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াবো আমি। দলে ফেরার পর এখন একটাই কাজ আমার, সুযোগ পেলে মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে কিছু করে দেখানো। জানি, এ মুহূর্তে পাকিস্তান দারুণ ফর্মে রয়েছে, কিন্তু এটাও জানি, আমরা ভালো করতে পারলে অনেক কিছুই সম্ভব।' ওয়েস্ট ইন্ডিজে 'এ' দলের হয়ে পারফর্ম করে আসার আত্মবিশ্বাসটা ফরহাদ রেজার চোখেমুখে চকচক করছিল।
যদিও তার পক্ষে আগের রাতের পাকিস্তান-শ্রীলংকা টি২০ ম্যাচ দেখা হয়নি; কিন্তু রাত ১২টা বাজিয়ে অধিনায়ক মুশফিক ঠিকই টেলিভিশনে চোখ রেখে আফ্রিদির দুটি ছক্কা দেখেছেন। সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেও তীক্ষষ্ট নজর রেখেছেন। 'শ্রীলংকা ম্যাচটি বের করতে পারল না, আফ্রিদি শেষ দিকে এসে দুটি ছক্কা হাঁকিয়েই ম্যাচটি বের করে নিয়ে গেলেন। দারুণ ফর্মে আছেন আফ্রিদি...।' ইমরুল আর নাজমুলের সঙ্গে আগের রাতে দেখা ম্যাচটি নিয়েই গল্প করছিলেন মুশফিক। যদিও তার বিশ্বাস, পাকিস্তানের শক্তি নিয়ে নেড়ে লাভ নেই, আগে নিজেদের পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে হবে। অধিনায়কের মতো সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও মনে করেন তা। 'বিপক্ষ দল নিয়ে আমরা বেশি ভাবছি না, আমরা আমাদের শক্তি আর দুর্বলতা নিয়ে ভাবছি। হয়তো ম্যাচের আগের দিন পাকিস্তান দল নিয়ে একটা স্টাডি করা হবে। আপাতত আমরা আমাদের দুর্বলতাগুলো শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করছি।' ডেঙ্গুজ্বরের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কোনো ম্যাচই খেলার সুযোগ হয়নি রিয়াদের। তাই পাকিস্তান সিরিজটাই সহ-অধিনায়ক রিয়াদের অভিষেক ম্যাচ হতে যাচ্ছে; কিন্তু এ সিরিজের জন্য নিজেকে কতটা প্রস্তুত করেছেন রিয়াদ? 'এখন আমি সুস্থ আছি। চট্টগ্রামে ক্যাম্পেও অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি নেটে ব্যাটিং-বোলিং করানো হয়েছে। একদিন রিকশা নিয়েও মজার ট্রেনিং হয়েছে। সব মিলিয়ে পাকিস্তান সিরিজের প্রস্তুতিটা ভালোই হয়েছে আমাদের।' রিয়াদ মনে করেন, দলে একাধিক অলরাউন্ডার থাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে সুবিধাই হবে বাংলাদেশের। 'আমাদের দলে বেশ কয়েকজন অলরাউন্ডার রয়েছেন। অলক ভাই, নাঈম, ফরহাদ রেজার সঙ্গে আমি নিজেও রয়েছি। আশা করি, ভালো কিছু হবে।'
কিন্তু এই ভালোটা কী? এ সিরিজে আমাদের মূল লক্ষ্যটা কী? প্রশ্ন দুটির উত্তরে সহ-অধিনায়ক সিরিজ জয়ের কথাই বললেন। 'অবশ্যই সিরিজ জয়ের উদ্দেশ্যেই মাঠে নামব আমরা। চেষ্টা করব নিজেদের সেরাটা দিয়ে ভালো খেলার।'

No comments

Powered by Blogger.