মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিতর্কে কী দেখা গেল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম বিতর্কে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একেবারে ধরাশয়ী করে ফেলেছেন। বিতর্কের সময় ট্রাম্প ছিলেন খামখেয়ালী, সামঞ্জস্যহীন এবং অসংলগ্ন। তিনি পুরো বিতর্ককালে আইনশৃংখলা ছাড়া আর কোনও ইস্যুতেই তার বক্তব্যকে মনে রাখার যোগ্য করার মতো কিছুই করতে পারেননি। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে হিলারি ও ট্রাম্প ৯০ মিনিট ধরে বিতর্ক করেন। এই বিতর্কের পর নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক লেখায় এভাবেই দুই প্রার্থীর পারফর্মেন্স মূল্যায়ন করেন থমাস বি এডসাল। থমাস লেখেন, বিতর্ককালে ট্রাম্প তার ট্যাক্স রিটার্ন প্রকাশ না করার বিষয়টি যৌক্তিক করতে গিয়ে দাবি করেছেন, 'আমার সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পদ হলো আমার মেজাজ'। তিনি তার দেউলিয়াত্ব, ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতা, ধনীদের ট্যাক্স কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বিশৃংখল অবস্থায় থাকা সম্পর্কে যা বলেছেন তার সব কিছুতেই দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে বিতর্ককালে হিলারি ক্লিন্টন ছিলেন সুসঙ্গত এবং তথ্যভিত্তিক। তার বক্তব্যের সুন্দর দিকটি হলো দর্শকরা সহজেই তার কথা বুঝতে পেরেছেন। হিলারিকে খালি কলসি বেশি বাজে, কাজের বেলায় ঠনঠনাঠন বলে কটাক্ষ করেন ট্রাম্প। কিন্তু এই মন্তব্য ট্রাম্পের বেলাতেই বেশি প্রযোজ্য। বিতর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখা গেছে,
হিলারি আইসিসি থেকে শুরু করে পারমাণবিক অস্ত্র, সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে প্রস্তুত থাকলেও ট্রাম্পকে এ ধরণের ইস্যুর জন্য অপ্রস্তুত মনে হয়েছে। থমাস লেখেন, এই বিতর্কের ব্যাপারে রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন কয়েকজনের ভাবনা জানতে চাই আমি। তাদের মধ্যে আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের স্কলার নরম্যান অর্নস্টেইন ইমেইল জানান, বিতর্কের সময় ট্রাম্পকে রাগী, উদ্ভ্রান্ত, অস্থির এবং বেশির ভাগ সময় অসংলগ্ন মনে হয়েছে। তার জন্য বড় বাধা হলো তারমধ্যে প্রেসিডেন্টসুলভ বিনয়, মেজাজের ভারসাম্য এবং মৌলিক জ্ঞানের স্বল্পতা। এসব কিছুর ব্যাপারেই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। মিশিগান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লিখেছিলেন, ট্রাম্প কেন তার ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেন না এ ব্যাপারে হিলারি যে অনুমানের কথা বলেছেন এটি ছিল বিতর্কমঞ্চের সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল। আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অ্যালান আব্রামোভিৎজ লেখেন, যারা ট্রাম্পের বিরোধী তাদের কেউই বিতর্ককালে তার পারফর্মেন্সে প্রভাবিত হননি। বিতর্কে ট্রাম্পের থিম ছিল নিজেকে তুলে ধরার বাগাড়ম্বর। আর ক্লিন্টনের ৯০ মিনিটে ক্রমাগত গলা চড়িয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশয়ী করে ফেলার জোরালো চেষ্টা করেন। ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে ক্লিনটন বলেন, তিনি হচ্ছেন সেই মানুষ যিনি নারীদের শূকর,  বোকা এবং কুকুর সম্বোধন করেছেন। ক্লিন্টন যখন বলেন, ট্রাম্প লাতিন মিস ইউনিভার্স অ্যালিসিয়া মাচাদোকে 'মিস শূকরী' এবং 'মিস গৃহিনী' সম্বোধন করেছিলেন, তখন ট্রাম্প হতাশ দৃষ্টিতে প্রতিদ্বন্দ্বির দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.