হিলারি-ট্রাম্পের বাকযুদ্ধ

মুখোমুখি বিতর্কের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকানের ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি কম হয়নি। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকালে দুই নেতা প্রথম টিভি বিতর্কে অংশ নেন। এসময়ও দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত তিন পর্বের ধারাবাহিক বিতর্কের প্রথম পর্বে বিপুল ব্যবধানে জয় পান হিলারি। এদিকে প্রার্থী নির্বাচনের সময় থেকে প্রথম পর্বের বিতর্ক পর্যন্ত হিলারিকে ঘায়েল করতে ট্রাম্প বেছে নিয়েছেন বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে নারী লাঞ্ছনার ঘটনা ও ই-মেইল কেলেংকারিকে। অন্যদিকে, হিলারি বেছে নিয়েছেন ট্রাম্পের জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যবসার প্রসঙ্গ। হিলারির জিজ্ঞাসা, ‘জুয়ার ব্যবসায় কিভাবে লোকসান হয়?’ জুয়ার ব্যবসায় যদি দেউলিয়া হন, তবে ট্রাম্প দেশের অর্থনীতি বাঁচাবেন কীভাবে। দেশকেও তিনি দেউলিয়া বানিয়ে ছাড়বেন। এছাড়া হিলারিকে ঘায়েলে ট্রাম্প তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করছেন ক্যাথলিন উইলি এবং হুয়ানিতা ব্রড্রিক নামের দুই নারীকে। এরা সেই দুই নারী, যারা ক্লিনটনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। ক্লিনটন ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তার বিরুদ্ধে এ নিয়ে কোনো মামলাও হয়নি।
এমনকি হিলারিকে নানা দিক থেকে বিদ্ধ করতে তাকে আইএসের প্রতিষ্ঠাতা, মিথ্যাবাদী, শয়তান ও কুটিল নারী বলতেও দ্বিধা করেননি ট্রাম্প। এর জাবাবে ট্রাম্পকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করে হিলারি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প নিজের কর রিটার্নের তথ্য প্রকাশ করতে ভয় পান। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দেশকে দেউলিয়া করে ফেলবেন। এছাড়া ট্রাম্প নানা ইস্যুতে মার্কিনিদের ভুল পথে নিয়ে যেতে চান বলে অভিযোগ তোলেন হিলারি। তিনি সব আমেরিকানকে আমেরিকান হিসেবে দেখেন না। হিলারি বলেছেন, ট্রাম্প এমনই একজন পুরুষ, যিনি নারীদের শুকরি, কুকুরি, ন্যক্কারজনক প্রাণী বলে অভিহিত করেন। পরিকল্পিত পিতৃত্ব-মাতৃত্বকে যিনি বন্ধ করে দিতে চান, নিরাপদ ও বৈধ গর্ভপাতকে যিনি শাস্তিযোগ্য মনে করেন, তিনি অন্তত নারীদের কিসে ভালো তা অনুবাধন করতে পারেন না। জাবাবে ট্রাম্প বলেন, কুটিল হিলারি মার্কিন অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবেন। তিনি সিরীয় শরণার্থীদের দিয়ে দেশ ভরে ফেলবেন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিতে হিলারি অযোগ্য মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে মৌলবাদী বিচারক নিয়োগ দেবেন, যারা বেঞ্চ থেকেই আইন জারি করবেন। কংগ্রেসের দরকার মনে করবে না। ট্রাম্পকে চরম বর্ণবিদ্বেষী বলে অভিযোগ করে হিলারি বলেন, 'ট্রাম্পের ভাবনা বর্ণবিদ্বেষ ছড়ায়। জাতিভেদ তৈরি করতে তিনি ঘৃণা ছড়ান। হিলারি আরও বলেন, ‘তিনি নিজের ক্যাসিনোতে কৃষ্ণাঙ্গদের চাকরি দিতেন না।'

No comments

Powered by Blogger.