জামায়াত শিবিরকে অর্থায়ন করছে জঈশ-ই- by মোহম্মদ মামুন-অর-রশিদ

কাশ্মীরভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন জঈশ-ই-মোহম্মদ বাংলাদেশের জামায়াত-শিবিরকে অর্থায়ন করছে। এ তথ্য খোদ মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের। বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের তিন প্রতিনিধির সাম্প্রতিক সফরকালে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাদের এ তথ্য জানিয়েছে।
একই সঙ্গে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জঈশ-ই-মোহম্মদের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে সতর্ক থাকা এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুকে রাজনৈতিক হয়রানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে জামায়াত তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। জঙ্গী মদদদাতা এবং রগকাটা বাহিনীকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জামায়াতী কূটনৈতিক তৎপরতা ব্যর্থ হয়েছে। জামায়াতী তৎপরতার ফল হয়েছে হিতে বিপরীত। খোদ মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে জঈশ-ই-মোহম্মদ ও জামায়াত কানেকশনের খবর বেরিয়েছে। এই খবরে জামায়াতের ব্যাপারে মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে। জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের পলিটিক্যাল উইংয়ের চেয়ে অপারেশনাল উইং জঈশ-ই-মোহম্মদের দেয়া অর্থের সিংহভাগ নিয়ে যায়। শিবিরের বর্তমান বিরোধের পেছনে এই অর্থ ভাগাভাগিও একটি কারণ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র মনে করছে। এছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাবেক শিবির ক্যাডারদের সমন্বয়ে গড়েওঠা সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি, জেএমজেবি'র সঙ্গেও রয়েছে জঈশ-ই-মোহম্মদের ঘনিষ্ঠ কানেকশন। এদিকে জঈশ-ই-মোহম্মদের অর্থের ভাগবাটোয়া নিয়ে জেএমবির ব্যাপক বৈষম্যের কারণে শুরু হয়েছে প্রাণহানিকর অভ্যন্তরীণ বিরোধ। জঈশ-ই-মোহম্মদের সক্রিয় তৎপরতার কারণেই জেএমবিসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন নামে গড়েওঠা জঙ্গী সংগঠন ছেড়ে গেলেই তাকে এখন দীর্ঘদিনের সহযোগী জঙ্গীর হাতে বেঘোরে প্রাণ দিতে হচ্ছে।
কাশ্মীরভিত্তিক পাকিস্তানী জঙ্গী সংগঠন জঈশ-ই-মোহম্মদ এখন আল কায়েদা কিংবা অন্য যে কোন জঙ্গী সংগঠনের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয়। আল কায়েদা মার্কিন টার্গেটের মুখে কোথাও স্থায়ী কার্যালয় গঠন করে কাজ করতে পারছে না। সেদিক দিয়ে কাশ্মীরভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন জঈশ-ই-মোহম্মদ অনেক নির্বিঘ্নে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের নাটাই এখন জইশ-ই-মোহম্মদের হাতে। সম্প্রতি বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, গবর্নর ড. আতিউর রহমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। আইনমন্ত্রী ও এ্যাটর্নি জেনারেল সেখানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয় নিয়ে কথা বলেন। গবর্নর বাংলাদেশে জঙ্গী অর্থায়ন নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা বলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, শিক্ষাঙ্গনে একের পর এক পরিকল্পিত প্রাণহানির ঘটনায় দেশে বিপুল পরিমাণ জামায়াতী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রগকাটা বাহিনীর সদস্য এবং জঙ্গীবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতারের ঘটনাকে রাজনৈতিক হয়রানি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে জামায়াত নানা চ্যানেলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে তথ্য পাঠাতে থাকে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ ব্যাপারে যে রিপোর্ট প্রকাশ করে তাতে গণগ্রেফতার ও হয়রানির কথা বলা হয়। এতে রগকাটা বাহিনীর চিহ্নিত সদস্য এবং জঙ্গী মদদদাতাদের গ্রেফতারের কথা বলা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকারের তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যায় এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে প্রকৃত তথ্য বিনিময় করে। এ সময় স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে জামায়াতকে জঈশ-ই-মোহম্মদের অর্থায়নের কথা বলা হয়। আইমন্ত্রী শফিক আহমেদ এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেছেন। উল্লেখ্য, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই প্রধান রবার্ট মুলার গত বছর ফেব্রুরারি মাসে ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা এমকে নারায়ণকে বলেছেন, আল কায়েদার চেয়ে এই মুহূর্তে অধিকতর সক্রিয় জঈশ-ই-মোহম্মদ। তারা পাকিস্তানের কাশ্মীর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ঘাঁটি করার পাঁয়তারা করছে। তিনি জঙ্গীবাদ মোকাবেলায়ে আন্তর্জাতিক সংগঠনের পাশাপাশি আঞ্চলিক সংগঠন গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন।
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি বাংলাদেশে জঈশ-ই- মোহম্মদ'র সদস্যরা বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়ে উত্তর জনপদের রাজশাহী এলাকায়। ১৯৯০ সালে হরকত-উল-মুজাহিদীন থেকে বের হয়ে পোকিস্তানে মাওলানা মাসুদ আজহার সংগঠনটি গড়ে তুলেন। এই সংগঠনের উৎপত্তি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অঞ্চলে। ১৩ ডিসেম্বর ২০০১ সালে ভারতের পার্লামেন্ট ভবনে হামলার জন্য জইশ-ই- মোহম্মদকে দায়ী করা হয়। ভারতের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাতে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রশ্রয়ে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বাংলাদেশকেই বেছে নিয়েছিলেন। লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে তারা এই হামলা করে বলে তখন খবর প্রকাশিত হয়। এই ঘটনার পর একই বছরের ২৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘ কর্মকর্তা কলিন পাওয়েল এই সংগঠনকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেন। জঈশ-ই-মোহম্মদ হরকত-উল-জিহাদ, হরকত-উল-মুজাহিদীন, হরকত-উল-আনসার, আল ফালাহ ও জঈশ-ই-মোহম্মদ হচ্ছে নবতর সংস্করণ। জিহাদী প্রতিজ্ঞা নিয়ে তারা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। জন্মের চার বছরের মাথায় ২০০৩ সালে পাকিস্তান সরকার সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর পর সংগঠনটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি গ্রুপের নাম দেয়া হয় খাদেম-উল-ইসলাম; যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাওলানা মাসুদ আজহার। অন্য গ্রুপের নাম জামা'আতুল ফুরকান; এর নেতৃত্বে আছেন আব্দুল জব্বার। এই দু'টি গ্রুপের সঙ্গে দ্বিধাবিভক্ত জেএমবির যোগাযোগ রয়েছে। বিভক্ত জেএমবি এখন জঈশ-ই-মোহম্মদের নামেই কাজ করছে। এই মুহূর্তে জঈশ-ই-মোহম্মদের অর্থে পরিচালিত জেএমবি'তে বিশ্বাসঘাতকতার পরিণতি হচ্ছে নিজস্ব আদালতে 'মৃত্যুদণ্ড'। সর্বশেষ গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরায় জেএমবির মৃত্যুদণ্ডের শিকার হয়েছেন জেএমবি ছেড়ে আসা যুবক আসাদ ওরফে রাশেদুল। অবিশ্বাস, আস্থাহীনতা, বিশ্বাসঘাতকতার, সংগঠনের গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়ে গাদ্দারী, বিদেশী অর্থের ভাগবাটোয়া আর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিরোধে জঙ্গীরা একে অপরের জানের দুশমন হয়ে উঠেছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জেএমবিতে এ পর্যন্ত খুন হয়েছে সাতজন। ক্রমাগত এই খুনের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির পলিটিক্যাল উইংয়ের শীর্ষ নেতা মাওলানা সাইদুর রহমানের সঙ্গে অপারেশন উইংয়ের প্রধান নাজমুল ওরফে ভাগিনা শহীদের দ্বন্দ্ব এখন চরমে। দু'পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলছে; যা জেএমবির অভ্যন্তরীন পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে। জেএমবির অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে গোয়েন্দারা রয়েছে গোলক ধাঁধায়। জেএমবির শীর্ষ নেতাদের মূল্যায়ন সরকারের বিশেষ কোন মহলের অদৃশ্য তৎপরতায় জেএমবিতে অভ্যন্তরীণ বিরোধ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে গোয়েন্দাদের ধারনা, ইসলামী ছাত্র শিবিরই কৌশলে জেএমবি বিশেষ কোন মিশন বাস্তবায়নে নিজেদের মধ্যে পরিকল্পিত অভ্যন্তরীণ বিরোধ শো করতে পারে। তবে বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিদেশী অর্থের ভাগবাটোয়া আর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিরোধ সংগঠনের অভ্যন্তরে অবিশ্বাস, আস্থাহীনতা, দ্বিধা, দ্বন্দ, সন্দেহ, সংশয়, সঙ্কোচ বাড়িয়ে তুলেছে; যা পরিস্থিতি প্রাণঘাতী সংঘাতের পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং সরকারের কঠোর নজরদারির মুখে জেএমবি এখন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন জঈশ-ই-মোহম্মদের ওপর সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
দ্বন্দ-সংঘাতের চিরন্তন সূত্র অনুযায়ী জেএমবির অর্থকড়ি সংগঠনের শীর্ষ নেতা সাইদুর রহমানের পরিবারের একক নিয়ন্ত্রণে থাকায় একটি গ্রুপ জেএমবি ছেড়ে ইসলাম ও মুসলিম নামে নতুন সংগঠন গড়ে তুলেছে। জেএমবির পলিটিক্যাল উইং ও অপারেশনাল উইংয়ের মধ্যে বেতনবৈষম্যও এই বিরোধের অন্যতম কারণ। সরকারের কঠোর অবস্থানের মুখে যারা জেএমবির জঙ্গী তৎপরতা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে তারা পড়ছেন জীবনমৃত্যুর শঙ্কায়। কোন জঙ্গী সংগঠন সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে অথবা কোন জঙ্গী সংগঠন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর প্রতিরোধের মুখে থাকলে কিংবা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মুখে জঙ্গীরা স্বীয় সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে। একই সঙ্গে এলাকা পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে অবস্থান নিয়ে জঙ্গী তৎপরতা চালিয়ে যায়। নির্বিঘ্নে জঙ্গী তৎপরতা অব্যাহত রাখতেই তারা এই কৌশল অবলম্বন করে। বাংলাদেশে পর্যায়ক্রমে হরকত-উল-জিহাদ বাংলাদেশ (হুজিবি), জেএমবি-জেএমজেবি, হিযবুত তাহরির সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণার পর জেএমবি জঙ্গীরা পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন জঈশ-ই-মোহম্মদের নামে তাদের জঙ্গী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে সরকারের সক্রিয় সহযোগিতায় দেশের উত্তর জনপদে ২০০৪ সালের ৩১ মার্চ শায়খ আব্দুর রহমান এবং বাংলাভাইয়ের নেতৃত্বে জেএমবির প্রকাশ্য আত্মপ্রকাশ ঘটে। রাজশাহী অঞ্চলের চার জেলার সাত উপজেলায় তারা ছয় মাসে ২৪ জনকে আদিম বর্বরতার মাধ্যমে হত্যা করে। সরকার প্রথম দিকে বাংলাভাইয়ের অসস্তি অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে দেশী-বিদেশী চাপের মুখে ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে। কিন্তু জেএমবির গোপন তৎপরতা অব্যাহত থাকে। সময়ের ধারাবাহিকতায় ঘটনা পরিক্রমায় শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলাভাই, জেএমবির সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানিসহ চার জনের ফাঁসি হয়। এর পর থেকে জেএমবির দায়িত্ব নেন মাওলানা সাইদুর রহমান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বধীন বর্তমান মহাজোট রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর জঙ্গীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে জেএমবির কয়েক চাঁই বিপুল বিস্ফোরক, অস্ত্র ও জিহাদী পুস্তকসহ ধরা পড়ে। এতে জেএমবি খানিকটা কাবু হয়ে আসে; তবে থেমে থাকেনি।
জেএমবির পলিটিক্যাল ও অপারেশনাল এই দু'টি উইংয়ের মধ্যে বেতনবৈষম্য রোধ এবং বিদেশী অর্থ ব্যয়ের হিসেবে স্বচ্ছতা দাবি করায় সংগঠনের শীর্ষ নেতা মাওলানা সাইদুর রহমান কয়েক কর্মীর ওপর ক্ষুব্ধ হন। তোর ক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী মিলে জেএমবি ছেড়ে গঠন করে 'ইসলাম ও মুসলিম' নামের একটি নতুন সংগঠন। এতে জেএমবি ক্যাডারদের মধ্যে অবিশ্বাস, পারস্পরিক আস্থাহীনতা বাড়তে থাকে। সাইদুর রহমান বিরোধী এই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অপারেশন শাখার প্রধান নাজমুল ওরফে ভাগ্নে শহীদ। সাইদুর রহমান সমর্থকরা নিজেদের উদার বলে দাবি করে এবং শহীদ সমর্থকদের কট্টোরপন্থী হিসেবে অভিযুক্ত করছে। জেএমবির পলিটিক্যাল উইংয়ের এক সিনিয়র কর্মী ১৫/২০ হাজার টাকা বেতন পান। অন্যদিকে অপারেশন উইংয়ের মাঠ পর্যায়ের একজন কর্মী ৩০/৩৫ হাজার টাকা বেতন পান। এই বেতনবৈষম্য দীর্ঘদিন সংগঠনের অভ্যন্তরে বিতর্ক তৈরি করেছিল। এতে পলিটিক্যাল উইংয়ের কর্মীরা বেতনবৈষম্য দূর না করলে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। অন্যদিকে সামরিক উইংয়ের অপারেশ কমান্ডার নাজমুল অপারেশন উইংয়ের অর্থ আত্মসাত করে নিজে প্রাসাদোপম বাড়ি করেছে বলে বেতন বঞ্চিতদের অভিযোগ। এই অভিযোগ নিয়ে সাইদুর রহমান আলোচনা তুললে সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয়। জেএমবির গোটা আর্থিক হিসেব-নিকাশ পরিচালনা করত সাইদুর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী বাশারের মা নুরুন্নাহার হিমু। সাম্প্রতিক এক বৈঠকে অর্থ আত্মসাতের দায়ে আপন ছোটভাই ভাগিনা শহীদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে তারই বড় বোন নুরুন্নাহার হিমু। ভাগিনা শহীদ এবং মাওলানা সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের পারস্পরিক অভিযোগ এবং এই অভিযোগ সমর্থন কিংবা বিরোধী করে জেএমবি জঙ্গী কর্মীদের অবস্থানই বিরোধ তুঙ্গে তুলেছে। ভাঙ্গন নিশ্চিত করেছে জেএমবির। অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে প্রাণহানির পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছে জেএমবির জঙ্গীদের।

No comments

Powered by Blogger.