আত্মবিশ্বাসী কল্যাণ...

কল্যাণ এন্থনী কোড়াইয়া। মা-বাবা ও দুই বোনের পরিবারে সবার ছোট কল্যান তাই সবার চোখের মনি। ছোটবেলা থেকেই তিনি চরম হাস্যোজ্জল একজন মানুষ।
নানান ধরণের মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় ছিল তার দারুন ঝোঁক। তাই ছোট থেকেই মনে করতেন বড় হলে একদিন খেলোয়াড় হবেন। কিন্তু ¯œাতক পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের হাত খরচ মেটাতে শুরু করেন মডেলিং। পরে ২০০৪ সালে র‌্যাম্প মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং খুব তাড়াতাড়ি নিজের যোগ্যতায় একজন প্রতিষ্ঠিত মডেল হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন। ধীওে ধীরে এটি তার শখ থেকে পেশায় পরিনত হয়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সুযোগ পেয়ে যান বিজ্ঞাপনে কাজ করার । সেখানেও বাজিমাত করে ফেলেন রাতারাতি। পরিবারে কেউ আগে অভিনয়ের সাথে জড়িত ছিল না কিন্তু ছেলের এমন প্রতিভা নিয়ে বাবা-মাও যেন অনেক আনন্দিত। তাই সর্বক্ষন ছেলেকে উৎসাহ দিয়ে যেতেন। উৎসাহ পেয়ে কল্যান ও যেন নিজেকে আরো বেশি করে ঝালিয়ে নিতে শুরু করেন। অবশেষে ২০০৭ সালে কল্যান প্রথম অভিনয় শুরু করেন পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত নাটক ‘‘প্রেম ও পরাবাস্তবতার গল্প’ এতে তিনি দর্শকদের সামনে নিজেকে নতুন করে উপস্থাপন করেন। যার ফলে দর্শকদের কাছ থেকে তিনি অভূতপূর্ব সাড়া পেতে থাকেন। তার কিছুদিন পরেই পরিচালক নুরুল আলম আতিকের নির্দেশনায় নাটক ‘‘নক্ষত্র, ঘাস ও চন্দ্রমল্লিকার রাত” এ অভিনয় করেন। যেখানে তিনি দর্শকের মনে দাগ কাটতে সক্ষম হন। অবশ্য এ জন্য তিনি পরিচালক সুমন ও আতিকের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান । কারণ তাঁদের হাত ধরেই কল্যান আজ এত জনপ্রিয়। আস্তে আস্তে তাঁর অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। তিনি মনে করেন অভিনয় করলে বিভিন্ন ধরনের চরিত্রের সম্মুখীন হতে হয় যা একটা মানুষকে অনেক কিছু শিখায় এবং বেঁচে থাকার তাগিদে সমাজে একজন সত্যিকারের মানুষ হিসেবে বাঁচতে সাহায্য করে। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ থেকে ১০০টি নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। যার সবকটি নিজে দেখেন এবং খুঁজে বের করেন নিজের ভুলগুলো। এভাবেই ভুল সংশোধন করতে করতে প্রস্তুুতি নেন পরবর্তী কাজের। সম্প্রতি মুক্তি পেল তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি ‘‘পিতা” যার নির্দেশনায় ছিলেন পরিচালক মাসুদ আখন্দ। যার জন্য মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার ২০১২ এর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাছাড়া পরিচালক খালিদ মাহমুদ মিঠু পরিচালিত “জোনাকির আলো” নামক আরেকটি ছবির কাজ শেষ করেছেন। সামনে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বিভিন্ন চ্যানেলে তাঁর আরো কিছু নাটক আসবে। যেখানে একটি নাটকের গল্প তাঁর নিজের জীবন নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। কল্যান যা বলেন খোলা মনেই বলেন। সবার সাথে খুব হাসি খুশি ভাবেই চলেন। কে তাঁর সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করলেন বা কে পুরস্কার পেলেন এসব নিয়ে তাঁর কোন মাথা ব্যথা নেই। কারো প্রতি তাঁর কোন হিংসা নেই। সিডিউল নিয়ে পরিচালকদের সাথে নেই কোন দ্বন্দ্ব। সবার সাথেই ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পছন্দ করেন। সুযোগ পেলেই পরিবারকে সময় দেন। কল্যান এর পছন্দের তালিকায় আছেন অভিনেতা নায়ক রাজ রাজ্জাক, মরহুম হুমায়ুন ফরিদী ও সালমান শাহ, শহীদুজ্জামান সেলিম, টম হ্যাংকম, আমির খান এবং অভিনেত্রী সুবর্না মুস্তফা। যাদের অভিনয় দেখে তিনি বড় হয়েছেন।
নাজমুল আহমেদ তন্ময়
ছবি : আরিফ আহমেদ

No comments

Powered by Blogger.