চট্টগ্রামে হরতাল পালিতঃ সর্বত্র আতঙ্ক

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে থমথমে পরিস্থিতিতেও স্বতঃস্ফূর্ত এবং শান্তিপূর্ণভাবে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল পালিত হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও আধা সামরিক বাহিনী বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি নগরজুড়ে টহল দিচ্ছে। মঙ্গলবারের হরতালে সাধারণ মুসল্লিরা পর্যন্ত পুলিশের নগ্ন হামলা থেকে রেহাই না পাওয়াতে নগরবাসী তীব্র পুলিশি আতঙ্কে ভুগছেন। ঘর থেকে অনেক নিয়মিত মুসল্লি মসজিদে নামাজ আদায় করতে যাননি। হরতাল চলাকালে নগরীর বেশ কয়েকটি স্থানে সংপ্তি মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। হরতাল চলাকালে নগরীতে সকাল থেকে বিপুল পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড়ে অবস্থান নেয়। সীমিত রিকশা রাস্তায় নামলেও যন্ত্রচালিত যানবাহন রাস্তায় নামেনি। যেসব যানবাহন রাস্তায় নেমেছে এর বেশির ভাগই ছিল পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যবাহী। ফলে অফিস-আদালতগামী লোকজনের রিকশাই ছিল ভরসা। হরতালের কারণে খোলেনি বেশির ভাগ দোকানপাট। অফিস-আদালত, ব্যবসায়বাািণজ্য প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও লোকজনের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। শিাপ্রতিষ্ঠানে কাস-পরীা হয়নি। চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো মালামাল হরতাল চলাকালে ডেলিভারি হয়নি এবং বন্দরেও কোনো মালামাল বাইরে থেকে প্রবেশ করেনি। চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

হরতাল চলাকালে জামায়াতের সমাবেশ ও মিছিল : হরতাল চলাকালে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের উদ্যোগে সমাবেশ এবং খণ্ড খণ্ড মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর কোতোয়ালি চান্দগাঁও, খুলশী, বায়েজিদ ও বাকলিয়া থানায় অনুষ্ঠিত পথসভা ও খণ্ড মিছিলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও নগর সেক্রেটারি মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জনগণের আন্দোলনে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করে আন্দোলন দমন করা যাবে না। হামলা, মামলা ও খুন করে ইসলামি আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, পাহাড়তলী অলঙ্কার এবং আগ্রাবাদে পুলিশ ও ছাত্রলীগ যৌথভাবে শিবিরের মিছিলে গুলি চালিয়ে আক্রমণ ও হামলা করে চার শিবির ও জামায়াতের নেতাকর্মীকে হত্যা করে। অবিলম্বে জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীর খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের পথেঘাটে, বাসা,ব্যবসায়প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থান থেকে গণগ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জুলুম-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। হরতাল চলাকালে নগর জামায়াতের উদ্যোগে এক বিােভ সমাবেশে তিনি সভাপতির বক্তব্যে উপরি উক্ত কথা বলেন। কোতোয়ালি উত্তর থানা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে দেওয়ান বাজারে এক বিােভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, এম এ হাশেম, আহমদ খালেদুল আনোয়ার প্রমুখ। সমাবেশ শেষে এক বিােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

হরতাল চলাকালে বাকলিয়া থানা জামায়াতের উদ্যোগে এক বিােভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় থানা সভাপতি এম এ আলমের সভাপতিত্বে। ওই সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ ইলিয়াছ, মুহাম্মদ নাছির ও ছাত্রনেতা ওমর গণি প্রমুখ। সমাবেশ শেষে এক বিােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

No comments

Powered by Blogger.