হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট অপর্যাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গত ১ ফেব্রুয়ারির এক বার্ষিক প্রতিবেদনে ২০১২ সালে বিশ্বের ৮৩টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে ১২৩৬ শব্দে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ প্রতিবেদনের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব এ ব্যাপারে এক যৌথ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মনে করে, এটি অপর্যাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা অতি সরলীকৃত ও অসম্পূর্ণ একটি প্রতিবেদন। বিশেষত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গঠন ও বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিয়ে যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তা জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান  করছে। মানবাধিকার কমিশন মনে করে, যুদ্ধাপরাধ আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা স্বীকৃত অন্যতম জঘন্যতম অপরাধ। এই ধরনের অপরাধের বিচার না হওয়াটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল এবং তা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে জিয়ে রাখতে সহায়তা করে। ঠিক যে মুহূর্তে পর্যায়ক্রমে বিচারের রায় প্রদান শুরু হয়েছে ঠিক সেই মুহূর্তেই ট্রাইব্যুনালের গঠন, স্বচ্ছতা ও মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে এই প্রতিবেদনে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তার সপক্ষে কোনো তথ্যনির্ভর যুক্তি নেই। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্বাধীনভাবে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করছে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হয়েছে। অধিকন্তু, এই ট্রাইব্যুনাল নতুন একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড প্রতিষ্ঠায় নজির স্থাপন করতে যাচ্ছে।

মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা অধিকার-এর সেক্রেটারি আদিলুর রহমান ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয় তুলে ধরে সারা দেশের নাগরিক সমাজের অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়েছে যা কার্যত অসম্পূর্ণ। একইভাবে আদিবাসীদের অধিকার বলতে কেবল পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে তুলে ধরা হয়েছে। সমতলের আদিবাসীদের অধিকার বিষয়ে প্রতিবেদনে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি নির্যাতন ও নিপীড়ন বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু নারী শিক্ষার প্রসার, অর্থনীতিতে তাদের অসামান্য অবদানের ছিটেফোটাও প্রতিবেদনে নেই। এমনকি বাংলাদেশের দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার বঞ্চনার বিষয়ে একটি শব্দও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.