হরতালের দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গুলিঃ সংঘর্ষ

জামায়াতে ইসলামীর ডাকে টানা দ্বিতীয় দিনের হরতালে গতকাল নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও খুলনায় পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে।
এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে পুলিশ হরতাল সমর্থকদের চতুর্দিক থেকে ঘেরাও করে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক অবস্থান থেকে গুলি চালায়। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। দূরপাল্লার যানবাহন চলেনি। অফিস আদালত খোলা থাকলেও উপস্থিতি ছিল কম। হরতাল চলাকালে কয়েকটি স্থানে জামায়াত ও শিবিরের সাথে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের দেড় শাতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ নাশকতার অভিয়োগে সারা দেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের প্রায় ১৪০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও পুলিশের গুলি বর্ষণের মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জে গতকাল জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দিনের হরতাল পালিত হয়েছে। পুলিশের সাথে শিবিরকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাতজনসহ কমপে ১৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে রেজাউল নামে এক শিবিরকর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। তাকে নারায়ণগঞ্জ ২০০ শয্যা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে  পুলিশ ৬১ রাউন্ড টিয়ার শেল এবং শট গানের গুলি ছুড়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছে, সকালে গলাচিপা এলাকায় শিবির একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু সড়কের লুৎফা টাওয়ারের সামনে এলে পুলিশ সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। এ সময় দু’পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়।

পুলিশ শিবিরকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে টিয়ার শেল এবং পরে শটগানের গুলি ছোড়ে। এ সময় শিবিরকর্মীদের কেউ কেউ লুৎফা টাওয়ারের পাশের গলিতে গিয়ে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের ঘেরাও করে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক গুলি চালায় এবং গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নবী হোসেন আমির, মামুন ও রেজাউলসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত অপর দুইজন হলো তারিকুল ইসলাম এবং পারভেজ। কয়েকজন বাঁচার জন্য একটি খালের পানিতে লাফিয়ে পড়লে পুলিশ সেখানে ও গুলি চালায়।

সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সাথে শিবিরকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় শিবিরকর্মীদের ধাওয়া খেয়ে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য পুল এলাকায় মোহাম্মদিয়া হোটেলে এবং ফোকাস স্টুডিওতে অবস্থান নিলে শিবিরকর্মীরা সেখানেও হামলা চালায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিপে করে।  এর আগে শিবিরকর্মীরা সিদ্ধিরগঞ্জে কোমল পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো জ ১৪-৪২০৭) ও একটি ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো ট ১৬-৭৫৭৮) আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দু’জন শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করে।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার শেখ নাজমুল আলম বলেন, শিবিরের হামলা প্রতিহত করতে এবং তাদের গ্রেফতারে পুলিশ কিছুটা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। এতে পুলিশ সফল হয়েছে। পুলিশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শিবিরের তিন কর্মীসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫৬ রাউন্ড শটগানের গুলি এবং পাঁচ রাউন্ড টিয়ার শেল নিপে করেছে।

খুলনা ব্যুরো জানায়, পিকেটারদের লক্ষ্য করে পুলিশের গুলিবর্ষণ এবং গাড়ি ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে গতকাল খুলনায় জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। মহানগরীতে জামায়াতে ইসলামী মিছিল করেছে।

পুলিশ জানায়, রূপসা সেতুর বাইপাস সড়কের হরিণটানা নামকস্থানের খেজুরতলায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে বিােভ করছিলেন। এ সময় পুলিশ গুলি করতে শুরু করলে দুই পক্ষে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া আরম্ভ হয়। একপর্যায়ে এএসপি ও তার গাড়িচালক আহত হন। পুলিশ সেখানে ৩২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি করে এবং গুলি শেষ হয়ে গেলে পুলিশ সদস্যরা পিছু হটে। পিকেটারদের ইটের আঘাতে পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলে ছাত্রশিবিরের আব্দুল্লাহ, হাফিজুল, ইমরান, লিটন, আব্দুল কুদ্দুস, মোতালেব, রিয়াজ, রাজু, মনি ও রনি গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানা গেছে। মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি সাইদুর রহমান সাইদ বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে পিকেটিংয়ের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে তাদের ওপর আক্রমণ চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। এতে ছাত্রশিবিরের ১০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

পরে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মো: গোলাম রউফ খানের নেতৃত্বে নগরীর শিবির অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় চিরুণি অভিযান চালানো হয়। তিনি জানান, ঘটনার সময় আহত শিবিরকর্মীরা খুলনার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি থাকতে পারে সন্দেহে অভিযান চালনো হয়েছে; কিন্তু সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।

অপর দিকে খুলনা সদর থানা জামায়াতের আমির অধ্যাপক জি এম শফিকুল ইসলামকে পুলিশ নগরীর ময়লাপোতা এলাকা থেকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করে। তাকে কোনো কারণ ছাড়া গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, খালিশপুর থানা আমির কে এম রায়হানুল হক, খানজাহান আলী থানা আমির মো: আজিজুর রহমান স্বপন। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে খুলনা সদর থানা আমির অধ্যাপক জি এম শফিকুল ইসলামসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

এ দিকে যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক লোকসমাজের বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি ও প্রেস কাবের সাধারণ সম্পাদক আহসান কবীরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকাল হরতাল চলাকালে বটিয়াঘাটার হরিণটানা এলাকার রূপসা সেতুর বাইপাস সড়কের খেজুরতলায় ছাত্রশিবির-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সাংবাদিকের পরিবার জানান, ওসি সাহেব থানায় ডাকছে বলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ।

বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুর রহমান জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আহসান কবীরকে থানায় আনা হয়েছে।

ফুলতলা (খুলনা) সংবাদদাতা জানান, খুলনার ফুলতলা থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাতে ফুলতলার যুগ্নীপাশা গ্রামের নিজ নিজ বাড়ি থেকে জামায়াতকর্মী শহিদুল ইসলাম (৪২) ও রুহুল হাসানকে (৩৫) আটক করে। গতকাল তাদের গাড়ি ভাঙচুরের পৃথক দু’টি মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, হরতাল চলাকালে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে পুলিশের সাথে পিকেটারদের সংঘর্ষে দুই থানার ওসি ও ১০ পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দইজনকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই শিবিরকর্মীসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৬ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ১৬ রাউন্ড চাইনিজ শর্টগানের গুলি ছোড়ে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জামায়াত-শিবিরের কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে।

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, হরতালের দ্বিতীয় দিনে উল্লাপাড়ায় হরতাল সমর্থকদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। হাটিকুমরুল বনপাড়া মহাসড়কে গ্যাস লাইন এলাকায় হরতাল সমর্থকদের সমাবেশের ওপরে পুলিশ গুলি চালালে মানিক দিয়ার গ্রামের মুন্নু (৩৫) ও বনবাড়িয়ার রহুলউল্লাহ (৩০) নামের শিবিরের দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ ও পাঁচজন আহত হন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ জামায়াতের আট সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে। হরতাল সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষে সলঙ্গা থানার ওসি তাজুল হুদা, এসআই আমজাদ, কনস্টেবল রায়হান, হাটিকুমরুল হাইওয়ে ওসি আলী ফরিদ উদ্দিন, এসআই হানিফ, কনস্টেবল মোতালেব ও মহসীন আহত হন। উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও কর্মপরিষদ সদস্য আবদুস সামাদকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, গতকাল শিবিরের পিকেটিং চলাকালে সলঙ্গা থানা পুলিশ ও হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের যৌথ হামলায় দুইজন গুলিবিদ্ধ হন এবং পুলিশসহ আহত হয়েছে কমপে ১৫ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৬ রাউন্ড রাবার বুুলেট ও চার রাউন্ড চাইনিজ রাইফেলের গুলি ছুড়ে।

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। শিবিরকর্মীরা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের বারোঘর এলাকায় লাঠিমিছিল বের করে। এ সময় তারা টায়ার জ্বালিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে। পিকেটিং করার অভিযোগে আনোয়ারপুর এলাকা থেকে ছাত্রশিবির সভাপতি আবুল হোসেনকে আটক করা হয়েছে।

ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ময়মনসিংহে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুল করিম জানান, জামায়াত-শিবিরের দুই কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

এ দিকে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালের বিপক্ষে আগেপিছে পুলিশ পাহারায় ময়মনসিংহ শহরে লাঠিমিছিল করেছে আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগ।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে শিবিরকর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্যে হরতাল পালিত হয়েছে। হরতাল সমর্থনে শিবিরকর্মীরা মিছিল-পিকেটিং শুরু করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় উভয়পরে মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। শিবিরকর্মীদের ল্য করে পুলিশ টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিপে করে। শিবিরকর্মীরাও পুলিশকে ল্য করে পাল্টা ইটপাটকেল নিপে করে। এতে ১০ জন আহত হয়। পরে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। এ দিকে ৯০০ জনকে আসামি করে নগরীর মতিহার থানায় দু’টি মামলা করেছে পুলিশ।

অন্য দিকে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে রাজশাহীতে বিােভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ১৪ দল।

পঞ্চগড় সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধাওয়া করেছে। পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে ২০ জন আহত হয়।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশালে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হয়েছে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রহমতপুর এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে পিকেটিংকালে বেলাল হোসেন ও সাইদুর রহমান নামে দুই পিকেটারকে আটক করেছে পুলিশ। অপর দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ থেকে মো: শাহজাহান নামে এক জামায়াতকর্মীকে আটক করেছে বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ। এর আগে গভীর রাতে উজিরপুর উপজেলার বামরাইল এলাকা থেকে জামায়াতকর্মী হাবিব উল্লাহ নকিবকে আটক করে উজিরপুর থানা পুলিশ।

এ দিকে বরিশাল নগরীর বান্দরোড, ঈশ্বরবসু রোডসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ঝটিকা পিকেটিং করেছে হরতাল সমর্থকরা।

জয়পুরহাট সংবাদদাতা জানান, জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই জয়পুরহাট শহরের মোড়ে মোড়ে পিকেটিং শুরু করে। হরতালের সমর্থনে শহরে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। মিছিল চলাকালে কে বা কারা একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ জামায়াত-শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় হরতাল চলাকালে রেজাউল ইসলাম ও আব্দুস সবুর নামে দুই শিবিরকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। সদরের তালতলা এলাকায় পিকেটিংয়ের সময় তাদের আটক করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করা হয়।

গাজীপুর সংবাদদাতা জানান, গাজীপুরে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা বুধবারের হরতালে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। হরতাল সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল, পিকেটিং, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় এক বাসচালক আহত হয়েছেন। পুলিশ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী সন্দেহে ১৪ জনকে আটক করেছে।

পাবনা সংবাদদাতা জানান, বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে গতকাল পাবনায় হরতাল পালিত হয়েছে। পিকেটাররা ১০টি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করে। পাবনা-নগরবাড়ী মহাসড়কের পুষ্পপাড়া, জালালপুর, বাঙ্গাবাড়ি, রাজাপুরে জামায়াত-শিবির মিছিল করে সড়ক অবরোধ করে এবং পাবনা-ঈশ্বরদী সড়কের মালিগাছা, টেবুনিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় পুলিশের সাথে পিকেটারদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সিলেট ব্যুরো জানান, হরতাল চলাকালে সিলেটে কোথাও বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিল করেন ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা। শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, মেজরটিলায় পিকেটিংকালে শিবিরের থানা সভাপতি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রেজাউল হককে গ্রেফতার করা হয়।

হরতাল চলাকালে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও ৫টি সিএনজি অটোরিকশাসহ ১০টি হালকা যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশ ১০ থেকে ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিপে করে। শিবিরকর্মীরাও পুলিশকে ল্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে।

এ দিকে সিলেটে গত মঙ্গলবার হরতাল চলাকালে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলায় জামায়াত-শিবিরের প্রায় আড়াই শ’ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

পিরোজপুর সংবাদদাতা জানান, নাশকতার আশঙ্কায় পিরোজপুরে পুলিশ ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে পিরোজপুর শহরের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে চারজন, মঠবাড়িয়ায় ১১ জন, ভাণ্ডারিয়ায় দুই, কাউখালীতে দুই, জিয়ানগরে এক ও স্বরূপকাঠিতে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, হরতালের দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পুলিশ-পিকেটার সংঘর্ষে দুই গ্রামপুলিশ বাহাদুর (৫০) ও ইব্রাহীম (৫৫) আহত হয়েছেন। বাহাদুরের অবস্থা গুরুতর।

পুঠিয়া (রাজশাহী) সংবাদদাতা জানান, পুঠিয়ায় ভোরে দুই শিবিরকর্মীকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেনÑ পুঠিয়ার কান্দ্রা গ্রামের শিবিরকর্মী আরিফুল ইসলাম (২৩) ও বেলপুকুর জামিরা গ্রামের গোলাম মুর্তজা (১৯)। পুঠিয়া থানার ওসি মির্জা আব্দুস সালাম জানান, গাড়ি ভাঙচুর মামলায় তাদের গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ দিকে শিবিরকর্মী গোলাম মুর্তজাকে গ্রেফতারের পর গাড়িতে তুলে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সামনে শিবির নেতাকর্মীদের ওপর যুবলীগের হামলায় পাঁচ শিবিরকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত মাকছুদ আলমকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বগুড়া অফিস জানায়, কলোনি এলাকায় হরতালকারীরা পিকেটিং শুরু করলে পুলিশ ধাওয়া করে। এ সময় পিকেটারেরা পুলিশকে ল্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশ দুই রাউন্ড শর্টগানের গুলি করে। এ ছাড়া শহরের নারুলী জিরো পয়েন্টে পিকেটারেরা পুলিশকে ল্য করে ইটপাটকেল নিপে করলে পুলিশ তিন রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। শহরের পিটিআই মোড়ে পিকেটারেরা টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করতে থাকলে পুলিশ ধাওয়া করে। এ সময় পিকেটারেরা পাঁচ-ছয়টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

ফেনী অফিস জানায়, ফেনীতে হরতালের সমর্থনে পিকেটারেরা বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়। টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচলে বাধা দেয়। হরতালের সমর্থনে মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এ কে এম সামছুদ্দীন, শহর আমির মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নান, ছাত্রশিবির ফেনী জেলা সভাপতি মু: জাহিদুল ইসলাম ও শহর সেক্রেটারি মাঈনুল ইসলাম যোবায়ের।

বামনা (বরগুনা) সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে বরগুনার বামনা থানা পুলিশ জামায়াতকর্মী সন্দেহে মো: শাহাবউদ্দিন বাচ্চু মোল্লা নামে এক বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, হরতালের নামে নাশকতা চালাতে পারে এমন অভিযোগ পেয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, সাভারে গতকাল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নিমের টেক এলাকা থেকে পিকেটার সন্দেহে এক সৌদি প্রবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম হোসেন আলী (৩৮)।

হরতাল চলাকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দূরপাল্লার কোনো যান চলেনি ও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, হবিগঞ্জে বিচ্ছিন্ন সহিংসতার মধ্য দিয়ে গতকাল হরতাল পালিত হয়েছে। শহরের আরডি হল এলাকায় সকালে পাঁচটি এবং শায়েস্তানগর এলাকায় চারটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া পৌরসভার সামনে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জামায়াত-শিবিরের মিছিল থেকে আব্দুর রাজ্জাক (৪৫) ও আবু তাহের (২৫) নামে দুই নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, আশুলিয়ায় গতকাল শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালের সমর্থনে পিকেটারেরা আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের বগাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। ভোরে আশুলিয়ার বগাবাড়ী, ইউনিক, বেরন, জিরাব ও নয়ারহাট এলাকায় হরতাল সমর্থনে জামায়াত নেতাকর্মীরা পিকেটিং করেছে। এ দিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে হরতালের বিপক্ষে আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল মহাসড়কে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। হরতালের বিপক্ষে হোন্ডা মিছিল হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা অধ্যক্ষ কাদির দেওয়ানের নেতৃত্বে।

রংপুর অফিস জানায়, জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দিনের হরতালে গতকাল অচল হয়ে পড়ে রংপুরের স্বাভাবিক কার্যক্রম।

সকাল ৭টা থেকে মহানগর শিবির নেতাকর্মীরা নগরীর পর্যটন এলাকায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে টায়ারে আগুন দিয়ে অবরোধ করে রাখে। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এ ছাড়াও নগরীর দমদমা, হাজিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিবির নেতাকর্মীরা।

রাঙ্গামাটি সংবাদদাতা জানান, রাঙ্গামাটি শহরে হরতাল সমর্থক জামায়াত শিবিরের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন। আহতদের রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে জামায়াত নেতা খোরশেদ আলমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।

বাগেরহাট সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটে গতকাল একটি এতিমখানা ও মাদরাসায় হরতালবিরোধী মিছিল থেকে সন্ত্রাসীরা হামলা ও ভাঙচুর করেছে। এতে ১৫ এতিম শিশু আহত হয়েছে। আহতরা হলো মহিবুল্লাহ, মাহফুজ, সাকী, তামীম, রনি, জনি, মোর্শেদ, রিয়াজুল, মাসুম, আ: রহিম, হোসাইন, আলিপ, রাকিব, কামাল ও জাহিদ। আহতদের সবার বয়স ৯ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। এ সময় সন্ত্রাসীরা এতিমদের জন্য তৈরী করা দুপুরের খাবার নষ্ট করে ফেলে দেয়।

পুলিশ ও প্রত্যদর্শীরা জানান, জামায়াতের ডাকা হরতাল চলাকালে এ দিন দুপুরে বাগেরহাট শহরের মেগনিতলা এলাকায় ৫০-৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে হরতালবিরোধী একটি মিছিল শুরু হয়। ওই মিছিলে বিভিন্ন সেøাগান দিয়ে শহরতলির মেগনিতলা এলাকায় খানজাহান আলী আদর্শ তাফিজুল কুরআন এতিমখানা ও মাদরাসায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। সন্ত্রাসীরা এই প্রতিষ্ঠানের দরজা-জানালা, কম্পিউটার ও বাইসাইকেল ভাঙচুর করে।

লালমনিরহাট সংবাদদাতা জানান, হরতালে বুড়িমারী স্থলবন্দর অচল ছিল। পুলিশ চাপারহাট এলাকা থেকে রবিউল ইসলাম (২০) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। তিনি চন্দ্রপুর ইউনিয়ন শিবির সভাপতি। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জামায়াত নেতা দেলওয়ার হোসেন, শিবির নেতা জামান (২৫), সেলিম উদ্দিন (২৪) ও জব্বারসহ (২৫) সাতজন আহত হন।

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। নাশকতার সন্দেহে পুলিশ মইলাকান্দা ইউনিয়নের পূর্ব কাওরাট গ্রাম থেকে মাইন উদ্দিন (৪০) নামে এক জামায়াত কর্মীকে আটক করেছে।

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিয়াবাজার এলাকায় হরতালে পুলিশ ও শিবিরের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় দুই শিবির নেতা আহত হন। তারা হলেন  জেলা দণি ছাত্রশিবির ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ও উজিরপুর ইউনিয়ন শিবির সভাপতি আবদুল হালিম। মহাসড়কের ৮-১০টি স্থানে জামায়াত-শিবির কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে পিকেটিং করেছেন।

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা জানান, হরতাল চলাকালে ঠাকুরগাঁওয়ের ২৯ মাইল নামক স্থানে জামায়াত-শিবির কর্মীরা মিছিল করে। পিকেটাররা রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে ঠাকুরগাঁও-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে পাঁচ জামায়াত-শিবির কর্মীকে আটক করেছে।

বরগুনা সংবাদদাতা জানান, বরগুনায় দ্বিতীয় দিনের হরতালে নাশকতার আশঙ্কায় গভীর রাতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন বেতাগী উপজেলার কবির হোসেন (২৮), শামীম হোসেন (২৩) ও পাথরঘাটা উপজেলার বাদশা মিয়া (৪৫)।

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে হরতালের আগের রাতে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

জেলা সেক্রেটারি আব্দুল মতিন ফারুকীর নেতৃত্বে পাটেশ্বরীবাজারে ও শহর আমির মাওলানা আব্দুস সবুর খানের নেতৃত্বে শহরের টেক্সটাইল মোড়ে হরতালের সমর্থনে মিছিল করেন নেতাকর্মীরা।

দিনাজপুর সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরে বিপ্তি কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে দ্বিতীয় দিনের হরতাল পালিত হয়েছে। নিমতলা মোড়ে জামায়াতের বিােভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। এতে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর শহর জামায়াতের আমির তৈয়ব আলী ও শহর শিবির সভাপতি মো: মতিউর রহমান। রানীবন্দরে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় জামায়াত নেতা মকবুল হোসেন। রানীগঞ্জবাজার মহাসড়কে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ঘোড়াঘাট থানা জামায়াতের আমির আলমগীর হোসেন, প্রচার সেক্রেটারি মো: আজিজার রহমান, শিবির সভাপতি সাদেকুর রহমান সবুজ প্রমুখ। পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে দু’টি মামলা করা হয়েছে।

জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং ও খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছে। গ্রেফতারকৃত পাঁচ জামায়াত নেতাকে গতকাল জামালপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মাদারগঞ্জ থানা পুলিশ গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলা জামায়াতের আমির আমিনুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম, জামায়াত নেতা শরিফুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান ও আইয়ুব আলীকে গ্রেফতার করেছে।

কালকিনি (মাদারীপুর) সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুরের কালকিনিতে জামায়াত নেতা সন্দেহে নৌবাহিনীর সাবেক সৈনিক বাবলু মালকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

থানার অফিসার ইনচার্জ জি এম সামছুন নূর বলেন, ‘বাবলু মাল জামায়াতের সক্রিয় সদস্য। হরতালে অরাজকতা হতে পারে আশঙ্কায় তাকে আটক করা হয়েছে।’

উপজেলা জামায়াতের একাধিক নেতা জানান, ‘জামায়াত-শিবিরের কোনো প্রকারের কমিটিতে বাবলু মাল বা তার পরিবারের কেউ নেই।’

মাগুরা সংবাদদাতা জানান, জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দিনের হরতাল মাগুরায় শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে।

জামায়াতের একটি মিছিল জেলা সেক্রেটারি মারুফ কারকির নেতৃত্বে মাগুরা স্টেডিয়াম গেট থেকে শুরু হয়ে ঢাকা রোড কাঁচাবাজার এলাকায় এসে শেষ হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এম বি বাকের হুসাইন, অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, আশরাফ হুসাইন, সাইদুর রহমান প্রমুখ।

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, হরতালের সমর্থনে ঝিনাইদহ শহরে ইসলামী ছাত্রশিবির মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের পায়রা চত্বরে এলে ছাত্রশিবির ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময় পুলিশ এক রাউন্ড টিয়ার শেল ছুড়ে হরতালকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর আগে পুলিশ ছাত্রশিবিরের এক সাথীকে আটক করে।

কক্সবাজার সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হরতাল পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি তবে পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ২১ জন জামায়াত-শিবিরকর্মীকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার।

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, হরতাল চলাকালে পিকেটিং করার সময় গতকাল সাতকানিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের খুনি বটতল নামক স্থান থেকে পাঁচ জামায়াত-শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, মোসলেম উদ্দীন (১৮), রেজাউল্লাহ (৩২), মিজানুর রহমান (২২), মো: শাহেদ (২৫) ও নুরুল আমিন (২৫)। তবে কোনো ধরনের সহিংস ঘটনা ছাড়া সাতকানিয়ায় সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়েছে।

কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লায় শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজারে পিকেটিং করার সময় পুলিশ লাঠি চার্জ করলে গুরুতর আহত হয়েছেন কুমিল্লা দণি জেলা শিবিরের ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক মো: ইকবাল হোসেন ও উজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মো: আবদুল হালিম। এ দিকে কুমিল্লা মহানগরীতে জামায়াত শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পিকেটিং ও সমাবেশ করে।

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, শহরে জামায়াত-শিবিরের কোনো নেতাকর্মীকে পিকেটিং করতে না দেখা গেলেও ঢাকা রোডসংলগ্ন মণ্ডল তেল পাম্প এলাকা থেকে চার জামায়াত-শিবিরকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন ওসমান আহম্মেদ (২০), সালাউদ্দিন (২৮), ফিরোজ আহম্মেদ (২০) ও খোকন হোসেন (২০)।

কালুখালী (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীর কালুখালী থানা পুলিশ গতকাল খন্দকার আব্দুল ওহাব (৪৫) নামের এক জামায়াত নেতাকে আটক করেছে। তিনি কালুখালী দাখিল মাদরাসার সিনিয়র মৌলভী শিক্ষক ও রতনদিয়া ইউপি জামায়াতের সাবেক রোকন।

No comments

Powered by Blogger.