রিপোর্টারের ডায়েরি

৩ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার। জুরিখ সেন্ট্রাল রেল স্টেশন থেকে সরাসরি আমরা স্বপন মামার বাসায় রওনা হলাম। শহরের বাইরে বিরাট বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তারা।
ডুপ্লেক্স বাসা। চার রম্নম। আন্ডারগ্রাউন্ড ও উপরেও জায়গা আছে। এখানে ইচ্ছে করলেই বড় বাসা পাওয়া যায় না। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো এ দেশের বাসাগুলো সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও বাসাগুলো নির্মিত হয় সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে। বাসা পেতে হলে সদস্য সংখ্যা উলেস্নখ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করতে হয়। আবেদনের পর পরিদর্শক টিম এসে সবকিছু দেখে তারপর বাসা বরাদ্দ দেয়। স্বামী-স্ত্রী ও এক সন্তানের জন্য এক বেডরম্নম ও এক ড্রইংরুম। দুই সন্তান হলেও একই অবস্থা। তবে সন্তান বড় হলে রম্নমের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। স্বপন মামার অবশ্য এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে বড় সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। ফলে তার জন্য আলাদা রম্নম। এ কারণেই বড় বাসা পেয়েছেন। শহরের বাইরে এক পাহাড়ের পাদদেশে এক মনোরম পরিবেশে তার বাসা। বাসার পাশেই স্কুল। ফলে বাচ্চাদের স্কুলের জন্য দূরে যেতে হয় না। আর শহরের বাইরে হলেও চলাফেরায় কোন সমস্যা নেই। বাসস্ট্যান্ডের পাঁচ শ' গজের মধ্যেই তার বাসার অবস্থান। ইউরোপের এটাই সুবিধা। যে যত দূরেই থাকুক না কেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা এত আধুনিক যে দূরত্বকে দূরত্ব বলে মনে হয় না।
আমরা অবশ্য স্বপন মামার বন্ধু নুরুজ্জামান সাহেবের গাড়িতে করে বাসায় রওনা হয়েছি। মামাই তাকে স্টেশনে ডেকে নিয়ে এসেছেন আমাদের বাসায় নিয়ে আসার জন্য। কারণ আমাদের কাছে লাগেজ রয়েছে। ওখানকার বাস-ট্রামগুলোও এত প্রশস্ত যে বাসে-ট্রামে করেও লাগেজ নিয়ে যাওয়া যায়। স্বপন মামার নিজেরও গাড়ি আছে এবং তিনিও গাড়ি চালাতে জানেন। কিন্তু তার স্থায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। শিক্ষানবিস লাইসেন্স। ফলে শিক্ষানবিসরা একা গাড়ি চালাতে পারে না। চালাতে হলে সঙ্গে স্থায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে এমন একজনকে রাখতে হয়।
নুরুজ্জামান সাহেব নিজেই একজন লাইসেন্সধারী অভিজ্ঞ ড্রাইভার। ফলে আমাদের আর কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। বাসায় ফেরার পথে আলোচনার প্রসঙ্গ উঠল খেলা নিয়ে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের টেস্ট চলছে। শেভাগ ২৯৩ রান করেছে। এখানে বাঙালীদের কাছে ক্রিকেট খুবই জনপ্রিয় খেলা। তারা সবাই ক্রিকেটের খোঁজখবর রাখে। তাদের আলোচনা থেকে তা জানা গেল। কথা প্রসঙ্গে নুরম্নজ্জামান জানালেন, এখানে বাঙালীর সংখ্যা খুব বেশি নেই। ১৬শ' বাংলাদেশী আছে। তবে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য দেশীয় কোন প্রতিষ্ঠান নেই। তারা পাকিসত্মানী হাবিব ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠান। তবে এখানে প্রায় চার হাজার পাকিস্তানী এবং ২০ হাজার ভারতীয় আছে। ভারতীয়রা গত কয়েক বছরে এখানে এসেছে আইটি প্রফেশনাল হিসেবে। ব্যাংকগুলোতে কাজ করছে। এ সুযোগটি আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তিনি দুঃখ করে বললেন, এখানে ১৬শ' বাঙালী থাকলেও বাংলাদেশীদের নিজস্ব কোন মসজিদ নেই। এখানে পাকিস্তানীদের তিনটি মসজিদ আছে। বাংলাদেশীদের ওই পাকিস্তানী মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে হয়। তবে এখানকার বাঙালীরা কেউ পাকিস্তানী মসজিদে নামাজ পড়তে চায় না। তাই বাংলাদেশীদের নিজস্ব মসজিদ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একটি মসজিদ করতে প্রায় এক কোটি ফ্রাঙ্ক লাগে। এ পর্যন্ত তারা পাঁচ লাখ ফ্রাঙ্ক তুলেছেন।
স্বপন মামা জানালেন, এখানে গাড়ি চালাতে গেলে খুব সতর্কতার সঙ্গে চালাতে হয়। রাস্তায় পথচারী থাকলে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামাতে হয়। আগে পথচারীকে পার হতে দিতে হয়। তারপর গাড়ি চালাতে হয়।
আমি জানতে চাইলাম, এখানে এসে থাকার উপায় কি? নুরুজ্জামান জানালেন, রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে এখানে থাকা যায় না। রাজনৈতিক আশ্রয়ের কোন মামলা এখন আর এদেশে নেয়া হয় না। ফলে এখানে যে সকল বাংলাদেশী আসে তাদের ৯৫ শতাংশই চলে যায় ইতালিতে। ওখানে থাকার ব্যবস্থা আছে। তবে এদেশে থাকার একমাত্র ব্যবস্থা হলো কনট্রাক্ট ম্যারেজ। অর্থাৎ এদেশের কোন নারীকে চুক্তিবদ্ধ বিবাহ করে এখানে থাকা যেতে পারে। বর্তমানে যারা এখানে আছে তাদের বেশিরভাগই কনট্রাক্ট ম্যারেজ করে নাগরিত্ব পেয়েছে। তবে এই কনট্রাক্ট ম্যারেজও খুব ব্যয়বহুল। ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ফ্রাঙ্ক দিতে হয়। যে নারীকে কনট্রাক্ট ম্যারেজ করবে সে প্রতিমাসে এসে টাকা নিয়ে যাবে।
নানা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে করতে আমাদের পথ ফুরিয়ে এসেছে। রাস্তায় বেশ গাড়ির চাপ। ৫টায় অফিস ছুটি হয়েছে। ফলে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এ কারণেই বাসায় ফিরতে একটু সময় লাগল। বাসায় এসে দেখি মামি আমাদের জন্য খাবার তৈরি করে বসে আছেন। আমাদের জন্য ছেলের রম্নম ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আমরা হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে অনেক দিন পর দেশীয় খাবার খেতে বসলাম। ঢাকা থেকে আসার সময় আমার ছোট বোনের স্বামী সুমন তাদের জন্য কোরবানির গোশত, বগুড়ার লাল আলু, লেবু, শিম ও মিষ্টি দিয়ে দিয়েছে। এই চার দিন এগুলো আমার লাগেজেই ছিল। এর মধ্যে শিম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যগুলো মোটামুটি ঠিক আছে। মামা সেগুলো গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
একটু বিশ্রম নিয়ে আমরা রাতে বের হলাম বেলকে লেক দেখতে। যাকে জুরিখ লেক বলা হয়। এই লেকই জুরিখের প্রধান আকর্ষণ। প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ লেক এখন মৃতপ্রায়। অথচ গ্রীষ্মে এই লেকই লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে। দুই তীরের গাছগুলো সজীব সতেজ হয়ে ওঠে।
_কাওসার রহমান

তরম্নণ স্বেচ্ছাসেবকদের পিকনিক
১ মার্চ, সোমবার । সকাল থেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। দিন যতই যাচ্ছে কাজের চাপ ততই বাড়ছে। ব্যস্ততার ভিড়ে নিজের প্রাত্যহিক জীবনের অনেক কাজ করা হয়ে ওঠে না সময় স্বল্পতার কারণে। নানা কাজ আর অনেক ঝামেলার মাঝে একটু বিশ্রামের জন্য সবকিছু ফেলে ঘুরতে বের হই আমি। অথবা আলাদা কোন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
কয়েকদিন ধরে কুড়িগ্রামে ৫ম যুব রেড ক্রিসেন্ট যুব ক্যাম্প হয়ে গেল। একঝাঁক তরুণ-তরুণী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে অক্লান্ত পরিশ্রম করে রেড ক্রিসেন্ট ক্যাম্পটি সফল করেছিল। তাদের কর্মকাণ্ডে রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তারাও ভীষণ খুশি। এই সব তরুণ স্বেচ্ছাসেবক দল একটি পিকনিকের আয়োজন করেছে ধরলা ব্রিজের পাশে এক ছায়াঘেরা দ্বীপচরে। ছোট ছোট এই ছেলেমেয়ে তাদের পিকনিকে আমাকে সকাল থেকে থাকার অনুরোধ করল বার বার। ইচ্ছে থাকলেও নিজের ব্যস্ততায় যেতে পারিনি সময়মতো। দুপুরের দিকে বার বার সেলফোনে আমাকে ডাকছিল তারা। এক সময় সব কাজ ফেলে ছুটলাম ওদের ডাকে। ধরলার ওপারে ব্রিজের পারে চমৎকার একটি দ্বীপচরে এই পিকনিকের আয়োজন। বিশাল সামিয়ানা টাঙ্গিয়েছে। দূরে চলছে রান্নার আয়োজন। ছেলেমেয়েরা কেউ লুডু খেলছে, কেউ তাস খেলায় ব্যস্ত। আর কেউ কেউ ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত। আমাকে পেয়ে ভীষণ খুশি তারা। তাদের সঙ্গে আড্ডায় কখন দুপুর গড়িয়ে সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে টেরই পাইনি। ভীষণ ক্ষুধার্ত আমরা। লোবান ভাই রান্নার কাজ তদারকি করছেন। পিকনিক পার্টিতে যোগদানের জন্য অনুরোধ করা হলো কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য জাফর চাচাকে। তিনিও দলবল নিয়ে এসে পড়লেন। ভীষণ খুশি আমরা তাদের পেয়ে। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিলাম। খাওয়া-দাওয়ার পর সকলে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। সর্বশেষ আসলেন পৌর মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবকের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিলেন। এসব নানা অনুষ্ঠানের ভেতর দিয়ে কখন পূর্বের সূর্য ডুবে লাল আভা ছড়িয়েছে পশ্চিমের আকাশে, কান্ত পাখিরা ঘরে ফিরতে শুরু করেছে টেরই পাইনি আমরা। আমাদেরও বিদায়ের সময় হয়ে এলো। জয়া, উর্মি, মৌসুমি, দীপা রানু, শফি, তর্পন, রম্নমু, মনু, মাসুদ, দীপু, দোলন, নাহিদ, দেবাশীষ, শাওন, রাসেল, তুলি, লেনিন, লিজার কাছ থেকে আমি বিদায় নিলাম।
ভীষণ খারাপ লাগছিল আমার এই একঝাঁক তরম্নণ স্বেচ্ছাসেবক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের ছেড়ে আসতে। এদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই একটি সফল ক্যাম্প কুড়িগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো। আমার আর লোবান ভাইয়ের নেতৃত্বে এরা ক্যাম্পে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। স্বেচ্ছাশ্রমের আদর্শে উদ্বুদ্ধ ওরা। ওরা এভাবেই মানবসেবা করতে চায় প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে। শুধু চায় একটু সুস্থ সুন্দর পরিবেশ।
_রাজু মোসত্মাফিজ, কুড়িগ্রাম

স্বপ্ন দেখার গল্প...
৬ মার্চ, শনিবার। স্বপ্ন দেখার গল্প। যা দিনের আলোতে মনের কল্পনা_ তা রাতের অন্ধকারে ঘুমের মধ্যে অবচেতন মনে স্বপ্ন দেখা। এটা মনোবিজ্ঞানীর কথা। আমার স্বপ্ন দেখাও এর বাইরের কিছু না। গত কয়েক দিন ধরে আমি রাতে ঘুমের ঘোরে অনেক স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি। কোন কোন স্বপ্নের বিষয়গুলো থাকে ভয়ঙ্কর। ঘুম থেকে জেগে ওঠার পরও ভয় লাগে। আবার কোন কোন স্বপ্নের বিষয় মনে আশার সঞ্চার করে। মনে হয় জীবন বড় সুন্দর, জীবনকে ভালবাসাতেই হবে। আবার সুন্দরের উল্টো পিঠের চিত্রটা কয়লায় আঁকা। যে ছবি জীবনের শুরু থেকে আঁকতে বসেছে আমার নিয়তি নামের আঁতুড় শিল্পী। এই শিল্পীর হাতে আর কোন রং ও তুলি নেই। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, এসএম সুলতান, পাবলো পিকাসো অথবা ভ্যানগগের সঙ্গে তার কোন দিনই দেখা হয়নি। এমন এক শিল্পীর সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে পৃথিবীর পথে হাঁটছি। তাই আমার স্বপ্নগুলো অন্ধকার। তবু স্বপ্ন বেঁচে থাকার আকাঙ্ৰাটা ক্রমাগত বাড়িয়ে তোলে। একজন মনোবিজ্ঞানীর সঙ্গে আমার এই স্বপ্ন দেখা নিয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। পরে তা হয়ে ওঠেনি। নানা কারণে সময় বের করতে পারিনি। তবে একজন বন্ধু আমাকে সিগমেন্ট ফ্রয়েডের স্বপ্নতত্ত্ব বইটি পড়ে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি অনেক আগে বইটি পড়েছিলাম। আবার পড়ার জন্য বইটি খুঁজছি। কিন্তু এর মধ্যে নিলু মামার (হোসেন মোফাজ্জল) আর্তুর বঁযাবোর 'দোযখে এক মরশুম' অনুবাদ বই বের হলো। বইটি ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় আসে। আমি সেদিনই বইটি কিনে ফেলি। আমার সঙ্গে বউ বাচ্চাও ছিল। আমার মেয়ে অদ্রিজা সম্প্রীতি জয়িতা ও বউ-এর পচ্ছন্দের কিছু বইও কেনা হলো। রঁযাবোর বই পড়তে গিয়ে সেখানেই ডুবে গেছি, তাই আর ফ্রয়েডের বই পড়া হচ্ছে না। গত কয়েক দিন আমি বেশ কিছু স্বপ্ন দেখেছি কল্পনা করাও কঠিন। স্বপ্নগুলো আসলে দিনের আলোতে দুর্ভাবনার ফসল। জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ানো মানুষগুলো কেমন স্বপ্ন দেখেন আমি জানি না। আমি পালিয়ে বেড়াতে কয়লায় অাঁকা নিজের জীবনচিত্র বার বার মনে করতে চাই না। তবু স্বপ্নভুক মানুষ হিসেবে আমার এই বিলাস। আমি ভাবছিলাম স্বপ্নের গল্পগুলো প্রতিদিন ডায়রিতে লিখে রাখব। কিন্তু কেন লিখে রাখব_আদিম হিংস্র দানবীয় স্বপ্নের গল্প। জীবনের বিরাট একটি অংশ দানবের সৃষ্ট দোযখের মধ্যে পুড়তে পুড়তে ছাই হয়ে গেছে। সুখের কোন দেখা মেলেনি। সামনের জীবনটুকুও জ্বলতে জ্বলতে ছাই হতে হবে। এই অন্তর্দহনের শেষ কোথায়? এমন স্বপ্ন আমি কোন দিনই দেখতে চাই না। হে রাত তোমার কাছে মিনতি স্বপ্ন দেখা থেকে তুমি আমাকে মুক্তি দাও। হে দিনের আলো আমাকে তুমি অন্য কিছু ভাবনার সুযোগ দাও। ভাল কাজ করার জন্য আর কিছু দিন সুন্দর ভাবনা ভাবতে কি দিতে পার না। রাত আর দিনগুলো নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে এখন। মানুষ শান্তির খোঁজে কোথায় দাঁড়াবে এই নিয়ে প্রতিটি মানুষের মনে এক ধরনের অতৃপ্ত আত্মা রয়েছে। তাই স্বপ্নের গল্প স্বপ্নেই মিলিয়ে যাক। এবার নিলু মামাকে নিয়ে কুষ্টিয়ার ছেওরিয়ায় সাঁইজীর মেলায় যাওয়ার প্রোগ্রামটা আমার ভেস্তে গেছে। সেখানে গেলে শান্তির ছোঁয়া আছে বলে আমার মনে হয়। এর আগে সেখানে গিয়েছি। ভাল লেগেছে। কিন্তু এবার না যেতে পেরে মনে যন্ত্রণা হয়েছে। যন্ত্রণার গল্পটা মামাকে বলেছি। মামা গল্পটায় কষ্ট পেয়েছে। তবে আমরা খুব শিগগিরই সাঁইজীর মাজারে যাব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভেতরে বিষের বালি জমলেও মুক্তা না ফলার কারণেই হয়ত এবার ছেউরিয়াতে সময়মতো যেতে পারলাম না। মানুষের ভেতরে ঝিনুকের মতো বিষ বালির কষ্ট বাড়ছে। তাই সঙ্কুচিত হচ্ছে মানুষের পৃথিবী। মনের পৃথিবী বাড়ছে না কারও। আমি এমন করে পৃথিবীকে দেখতে পাই।
_ফিরোজ মান্না

No comments

Powered by Blogger.