প্রিয়জন কবিতাবলী

ফিহির হোসাইন

এক বিন্দু জল



খুব সকালে, তখনো পাখিরা জেগে ওঠেনি

ফাঁকা রাস্তায় মেঘের জল ফোঁটা ছড়িয়ে আছে
হেঁটে চলছি একা, ভয় হচ্ছিল, জানা আছে

অন্যদের মতো অত বিশ্বাস নেই, তবুও

কেনো জানি কথাটা মনে হতেই শিহরিত হই

মনে হলো কেউ ডাকছেÑপেছন থেকে জামা

টেনে আটকে রাখতে চাইছেÑচললাম দ্রুত পদে,

একটা সংশয়ও জমাট বেঁধে আছে মনের ভেতরÑ

প্রতিদিনের মতো আজো কি ফিরে আসতে হবে?

না না, অত্ত সকালে কেউ আসার কথা নয়Ñ

দূর থেকেই চোখে পড়ল, ওই গাছটার নিচে

পড়ে আছে, আশেপাশেও কেউ নেই, খুশি হলাম

বেশÑআমি কুড়াতে শুরু করি একের পর এক আর

মুগ্ধ ঘ্রাণে মনোতৃপ্ত হই, এ যেনো অনাবিল সুখের

পরম শান্তি ছোঁয়া। থলে ভর্তি বেলি ফুলের সুবাস

ছড়ানো পাপড়িগুলো নিয়ে চললাম।



স্বর্ণমুখী সুই-এ সাদা সুতোয় তাজা ফুলের বুক

ছিঁড়ে গাঁথি একটি বেলি ফুলের মালা, তোমার

খুব পছন্দ ছিল আমার হাতের এই বেলি, স্কুল

থেকে ফেরার পথে একদিন তুমি চেয়ে নিয়েছিলে

তার পর থেকে প্রতিদিন তোমায় এনে দিতাম,

তোমার মিষ্টি হাসিতেই প্রাণ জুড়াতো, হঠাৎ-ই

তুমি চলে গেলেÑকাউকে কিছু বলার না পেলে

সময় আর আমায় দিয়ে গেলে এক বিন্দু জল

চোখের ঝাপসা আলোয় আমি আজো একটি

করে মালা তৈরি করিÑতোমায় দিবো ভেবে…


ঢাকা কমার্স কলেজ






এস এম নূরুল হুদা বাবু

নষ্ট সুখের জন্য



এখন অনেক মুখ, তাতে সুখ নেই।

তবু সুখের খোঁজে নিত্য বদল কর বুক,

মুহূর্তে বদল কর মন, রঙ, হাসির ঢং।

ভুলে যাও উষ্ণতা ছড়ানো প্রেমময় সেই লগ্নগুলি,

ভুলে যাও তোমার স্বপ্ন আঁকা ক্যানভাস।

আজ তোমার বুকে যুগল হংসের মতো

খেলা করে কাঁচা প্রণয়ের সুখ

আর আমার বুকে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি।



এখন অনেক বুক, তাতে শুধুই নষ্ট সুখ,

সেই নষ্ট সুখের জন্য তুমি ছুটে চলো

ইসলামবাগ থেকে সমুদ্র সৈকত।

মিথ্যের ডালে ভর করে ওঠে বসো নষ্ট বৃ।ে



লিপস্টিকহীন গোলাপি ঠোঁট, পুরোহাতা ব্লাউজ

মাথায় নেকাব, শরীরে পবিত্র ঘ্রাণ,

হাস্যোজ্জ্বল মুখে কর তোমার গ্রাহকের স্তুতি,

মূল্য বাড়ে, কদর বাড়ে তাতে নিশ্চিত।



নেকাব পরাদের বাহ্যিকতা টেকেনা বেশি দিন।

নষ্ট সুখের জন্য আর কত কসরত ?

এবার চোখ খোল আয়নায়Ñ দেখতে পাবে

ক্রমশ য়ে যাওয়া তোমার অস্তিত্বের মূর্তি।

কান পেতে দাও বাতাসেÑ শুনতে পাবে তোমার

ঊরুর ওই তিলকটির কথা সবার মুখে মুখে।



প্রিয়জন, পঞ্চগড়







রাজু ইসলাম

প্রতিবাদ



আমার সমস্ত প্রতিবাদ প্রতিরোধের ভাষা

মূক আর অন্ধ হয়ে ফিরে আসে আমারই দিকে

রক্তে আর ঘামে প্রতিধ্বনিত হয় সেই স্লোগান

জ্বলে উঠুক রক্তকণিকায় প্রতিবাদের বারুদ

মুহুর্মুহু সেই স্লোগান আছড়ে পড়–ক

অজস্র মিছিলের বুকে।

রচিত হোক নতুন মানচিত্র

যেখানে মানবতা ভূলুণ্ঠিত হবে না

হবে না অত্যাচারীর স্বর্গরাজ্যের আবাসন

হবে না দুঃশাসন আর নিপীড়নের জয়জয়কার।



দোহার, ঢাকা









রেহানা  রিমি

পলকে কিংবা দু’পলকে



ও তাকিয়ে ছিল আমার দিকে

চোখ দুটো বড় করে নিশ্চুপ থেকে

আমার বাড়িয়ে দেয়া হাত দুটো

স্পর্শ না করে; আনমনে কিছু

ভেবে থাকার প্রতীায়

অনড়, দাঁড়িয়ে থাকা।

আশ্চর্য! বলা হয়েছে কঠিন কিছুÑ হয়তো

অপ্রত্যাশিত; আমি কিছুই ভাবতে পারিনি।



আমার শিহরিত ভালোবাসা; মেলেনি সাড়া

আমি ুব্ধ। ইচ্ছে হয়নি

শেষবার মুখোমুখি হবার প্রতীায়।



ও চলে গেল; নীরবে

আমার কণ্ঠ স্তব্ধ ঘামে

শুধু অপলক চেয়ে থাকা। আমি ব্যর্থ

আমার পথচলা ভুল পথে।

তবে সান্ত্বনা; ও চেয়েছে আমার দিকে

পলকে কিংবা দু’পলকে।

No comments

Powered by Blogger.