জামায়াত শিবিরের ইটের আঘাতে ৮ পুলিশ আহত- পল্টন থানার ওসির মাথা ফেটেছে, লাঠিচার্জ

পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে ৮ পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। জামায়াত-শিবিরের ইটের আঘাতে পল্টন থানার ওসির মাথা ফেটে গেছে। পুলিশ ছাত্র শিবিরের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
এ ব্যাপারে কয়েক শ' জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর বিরম্নদ্ধে পল্টন থানায় সরকারী কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন মসজিদ গলির ভিআইপি রোড়ে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা আড়াইটার দিকে ৫/৬শ' জামায়াত-শিবিরকর্মী নয়াপল্টন মোড়ে একত্রিত হয়। পরে তারা গ্রেফতারকৃত জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মিছিল করতে থাকে। এ সময় তারা রাষ্ট্রবিরোধী নানা সেস্নাগান দিতে থাকে। মিছিলটি নয়াপল্টন হয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের বাধা অমান্য করে তারা সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। দ্বিতীয় দফায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে তারা পল্টন মসজিদ গলির ভিতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় পুরো এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। ১৫/২০ মিনিট পর হঠাৎ করেই জামায়াত-শিবির কর্মীরা গলির ভিতর থেকে আবার মিছিল নিয়ে বের হয়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে কয়েক শ' জামায়াত-শিবির সদস্য পুলিশকে লৰ্য করে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিৰেপ করে। ইটপাটকেলের মুখে পুলিশ অনেকটাই হতভম্ব হয়ে পড়ে। পড়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা আবার ছোট ছোট গলির ভিতরে ঢুকে অতর্কিতে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিৰেপ করতে থাকে। খবর পেয়ে বিপুল পরিমাণ পুলিশ ঘটনাস্থলে পেঁৗছে। পরে পুলিশ জামায়াত শিবির নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে জামায়াত শিবির কর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। পরে পুলিশ ও জামায়াত-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ৮ পুলিশসহ অনত্মত ১০ জন আহত হয়েছেন। জামায়াত শিবিরের ইটের আঘাতে পল্টন থানার ওসি মজিবর রহমানের মাথা ও হাত মারাত্মক জখম হয়েছে। পরে পুলিশ জামায়াত-শিবিরের মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে হালকা লাঠিচার্জ করে।
পল্টন থানার ওসি জানান, মিছিলকারী জামায়াত-শিবিরকর্মীরা গ্রেফতারকৃত জামায়াত-শিবির কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে। দ্রম্নত গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি না দিলে দেশ অচল করে দেয়ার আগের ঘোষণা অনুযায়ী মাঠে নামবে বলে হুমকি দিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ছাত্র শিবিরের এক অনুষ্ঠানে ছাত্র শিবিরের সভাপতি রেজাউল করিম ঘোষণা দিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি ও সেক্রেটারি হুকুম দিলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির সারাদেশ অচল করে দেবে। সে ধরনের ৰমতা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের রয়েছে। পরে পুলিশ ছাত্র শিবির কর্মী মনির হোসেন (৩০), এহতেশাম বিলস্নাহ (২৪) ও শামসুল আলমকে (১৮) গ্রেফতার করে।
মনিরের পিতার নাম মোহাম্মদ ইব্রাহীম। বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজংয়ের বরইনয়াপাড়া গ্রামে। এহতেশামের পিতার নাম মোঃ কামরম্নজ্জামান। বাড়ি বগুড়া জেলা সদরের শিকারপুরে। সে যাত্রাবাড়ী থানাধীন দৰিণ সায়েদাবাদের ৪৩/১ নম্বর বাড়িতে বসবাস করছিল। শামসুল আলমের পিতার নাম আব্দুল আজিজ। বাড়ি চাঁদপুর জেলার শাহরাসত্মি থানার শিকারপুর গ্রামে। সে যাত্রাবাড়ী এলাকার মীর হাজীরবাগের আমিরম্নল মিলস্নাত কামিল মাদ্রাসায় বসবাস করত। মিছিলে অংশগ্রহণকারী জামায়াত-শিবিরের বেশিরভাগ নেতাকর্মী ঢাকার বাইরে থেকে আনা হয়েছে। পুলিশ জামায়াত-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েক শ' জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর বিরম্নদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় সরকারী কাজে বাধা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছে।

No comments

Powered by Blogger.