মাথাপিছু চল্লিশ হাজারটাকায় মালয়েশিয়া যাচ্ছে মার্চে ১০ হাজার

 মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভাগ্যবান ১০ হাজার কর্মী চূড়ান্ত লটারি জিতে নিয়েছেন। ঘাটে ঘাটে তাদের লটারিতে জিত হয়েছে। ভাগ্যবান এই কর্মীরা আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহের দিকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে মালয়েশিয়া যাবেন।
একটি মহলের বাধার পরও শান্তিপূর্ণভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী নির্বাচিত করা হয়েছে। দালাল-ফড়িয়াদের হাতের কোন স্পর্শ ছিল না কর্মী নির্বাচনে। ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে মাত্র ৫০ টাকা ফির বিনিময়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে নিজেকে তুলে নিয়ে এসেছেন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ৬৪ জেলা থেকে মোট ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৩৬ জন রেজিস্ট্রেশন করেন। এখান থেকে কম্পিউটারে র‌্যান্ডম সিলেকশনে করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় চূড়ান্তভাবে ১১ হাজার ৭৫৮ জন নির্বাচিত হন। এখান থেকে প্রথম দফায় ১০ হাজার কর্মী যাবেন।
বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) চূড়ান্ত লটারি করে। রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, বিএমইটির ডিজিসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিতি ছিলেন। চূড়ান্ত লটারিতে নির্বাচিত সবাইকে রেজিস্ট্রেশনের সময় দেয়া মোবাইল নাম্বারে মেসেজের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার কথা জানিয়ে দেয়া হবে। এই কর্মীরা আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ পাবেন। নির্বাচিতদের তালিকা িি.িম২ম.নসবঃ.মড়া.নফ এই ওয়েবসাইটেও পাওয়া যাবে।
লটারিতে বিভাগওয়ারি নির্বাচিতদের সংখ্যা ঢাকা ৩ হাজার ৬৪৬, চট্টগ্রামের ২ হাজার ২৮৭, রাজশাহীর ১ হাজার ৫৫১, রংপুরের ১ হাজার ৩৬২, বরিশালের ৭৬১, খুলনার ১ হাজার ২৭৯ এবং সিলেট বিভাগে ৮৭৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ থাকার পর গত বছরের ২২ অক্টোবর দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি হয়। এই চুক্তিতে প্রাথমিক পর্যায়ে মালয়েশিয়া সরকার তিন দফায় ৩০ হাজার লোক নিতে নীতিগতভাবে রাজি হয়। পরে সব প্রক্রিয়া শেষ করে এ বছরের মার্চ মাসে প্রথম ১০ হাজার কর্মী সে দেশে যাচ্ছেন। পর্যায়ক্রমে ৩০ হাজার কর্মী সে দেশে যাওয়ার পর আর কর্মী নেবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কারণ মালয়েশিয়া কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশকে সোর্স কান্ট্রি হিসেবে ঘোষণা করেছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. জাফর আহমেদ খান জনকণ্ঠকে বলেন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য একজন কর্মী তাঁর টাকা তিনিই খরচ করবেন। এখানে কোন মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। যারা সরকারের এই উদ্যোগকে সমালোচনা করছেন তাঁরা বিষয়টি নিয়ে একটা মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। একজন কর্মী যখন মাত্র ৪০ হাজার টাকা খরচ করে মালয়েশিয়া যেতে পারবেনÑ তখন তাদের সমালোচনা করা মোটেই ঠিক হচ্ছে না। ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে ৫ বিভাগে ১০ লাখ ২৪ হাজার কর্মী নিবন্ধন করেছেন। কম্পিউটারের মাধ্যমে লটারি করে তিন ধাপে ৩০ হাজার কর্মীকে মালয়েশিয়া পাঠানো হবে। প্রথম ধাপে ১০ হাজার কর্মী যাবেন। লটারিতে বিজয়ী প্রতিজন কর্মীকে সরকারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তারা মালয়েশিয়া গিয়ে যেন কোন প্রকার সমস্যায় না পড়েন। মালয়েশিয়া যেতে একজন কর্মীকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। উড়োজাহাজ ভাড়ার (একপথ) জন্য শ্রমিকদের খরচ হবে ৩১ হাজার পাঁচ শ’ টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিন হাজার পাঁচ শ’ টাকা, কল্যাণ ফি ২৫০ টাকা, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প তিন শ’ টাকা, ভিসা ফি এক হাজার এক শ’ টাকা, সার্ভিস চার্জ দুই হাজার টাকা, আয়কর দুই শ’ টাকা, ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং এক হাজার টাকা এবং বিবিধ খরচ হিসেবে ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের (এটুআই) জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাঈমুজ্জামান মুক্তা জনকণ্ঠকে বলেন, সারাদেশের ৬৪ জেলা থেকে মোট ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৩৬ জন আবেদন করেন। এখান থেকে কম্পিউটারে র‌্যান্ডম সিলেকশনের মাধ্যমে ১০ হাজার জনের বাছাই করা হয়েছে। কর্মী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটুআই কাজ করে যাবে। বাকি কাজ বিএমইটি বুয়েটের সহযোগিতা নিয়ে করবে।

No comments

Powered by Blogger.