বিএনপি ‘ইউজ মি’ টাইপের রাজনীতি করে ॥ আমু- যুদ্ধাপরাধী বিচারের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে ১৪ দল চারটি জনসভা করবে

 যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল দেশে ৪টি জনসভা করবে। আগামী ৩০ জানুয়ারি টঙ্গীতে, ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেটে, ৮ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাটে এবং ৯ ফেব্রুয়ারি রংপুরে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি টঙ্গী থেকে উত্তরা, হেমায়েতপুর থেকে সাভার, নারায়ণগঞ্জ থেকে ডেমরা পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ১৪ দল। প্রত্যেকটি পদযাত্রা শেষে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রবিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, বিএনপিতে বিভিন্ন দল থেকে দলছুটরা এসে সুবিধাবাদী শ্রেণী গঠিত হয়েছে। এসব সুযোগ সন্ধানীরা ক্ষমতায় গিয়ে শুধু লুটপাট করে। তাদের কোন মতার্দশ নেই। তাদের কোন এজেন্ডা নেই। তারা যখন যেমন তখন তেমন। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি কোন রাজনৈতিক দলই নয়। ডাস্টবিনে যে রকম ‘ইউজ মি’ লেখা থাকে, বিএনপি তেমনি ‘ইউজ মি’ টাইপের রাজনীতি করে।
‘রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের বিচার জনগণ মানবে না’ মর্মে বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে আমির হোসেন আমু বলেন, তাঁর মুখেই এমন বক্তব্য শোভা পায়। কেননা তিনি এক সময় বাম রাজনীতি করতেন। এখন তিনি উগ্র ডানপন্থী রাজনীতি করছেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করছেন। রাজনৈতিক বিষয় রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার অবশ্যই রাজনৈতিক এজেন্ডা। তবে এটা কোন দলের নয়, জাতীয় এজেন্ডা। নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা পরিষ্কার বলেছি সরকার গঠনের দায়িত্ব পেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। এজন্য জনগণ আমাদের ম্যান্ডেট দিয়েছে। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তিনি বলেন, বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। যুদ্ধাপরাধীর বিচার বানচালের সকল ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা হবে। সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে চায়, তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হবে না। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক এ ধরনের বোমাবাজি, আতঙ্ক সৃষ্টি অনেক দেখেছি। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন আমু বলেন, অতর্কিত হামলা করলে এটাকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি বলা যায় না। এ ধরনের দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা আইনশৃঙ্খলার অবনতি প্রমাণ করে না। বোমাবাজিসহ সকল ধরনের নোংরা রাজনীতি ও ষড়যন্ত্র বাদ দিয়ে ইতিবাচক রাজনীতি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, জাসদের কার্যকরি সভাপতি মইনউদ্দীন খান বাদল এমপি, সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কামরুল আহসান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, সাম্যবাদী দলের আবু হাসেম সাহাবুদ্দিন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের অসিত বরুণ রায়, আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের দফতর সমন্বয়ক মৃণাল কান্তি দাস ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী।

No comments

Powered by Blogger.