ইটভাটাটি এক্ষুনি বন্ধ করে দিন- পরিবেশদূষণ: জরিমানায় কাজ হয় না

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সিধুচী এলাকায় অবৈধভাবে স্থাপিত একটি ভাটায় ইট পোড়ানো চলছে প্রায় এক বছর ধরে। বুধবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে প্রতীয়মান হয়, এই অবৈধ ইটভাটার মালিককে যেন কোনোভাবেই থামানো সম্ভব নয়।
জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ফসলি জমিতে ওই ইটভাটা স্থাপন করার আগে ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০০১ অনুযায়ী লাইসেন্স নেওয়া হয়নি। পরিবেশ ছাড়পত্র ও ইটভাটার অবস্থান-সম্পর্কিত ছাড়পত্রও নেওয়া হয়নি। বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই সেখানে ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করা হয় ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে। অবাক ব্যাপার, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর প্রথমে নীরব ছিল। তারপর হঠাৎ তাদের টনক নড়ল। এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ইটভাটার মালিককে চার লাখ টাকা জরিমানা করেছে। কারণ, তিনি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবৈধভাবে ইট পোড়াচ্ছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর একই সঙ্গে ইট পোড়ানো বন্ধ করার নির্দেশও দিয়েছে। কিন্তু ওই ইটভাটায় ইট উৎপাদন বন্ধ হয়নি। ট্রাক্টরে করে নতুন মাটি আনা হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে ইট।
ওই ইটভাটার মালিক আসলে আইনকানুনের বিষয়ে নির্বিকার। তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটার লাইসেন্স চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন ছয় মাস আগে। তারও অনেক আগে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আবেদন করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য। লাইসেন্স বা ছাড়পত্র কোনোটাই পাননি, কিন্তু তাতে কী? লাইসেন্স ছাড়া ইট পোড়ানো শুরু করেছেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ইটভাটার মালিক মাইনউদ্দিন বলেছেন, সব ইটভাটাই লাইসেন্স পাওয়ার আগে ইট পোড়ানো শুরু করে। তাঁর এই বক্তব্য সম্পূর্ণ সত্য না হলেও সত্যের অংশবিশেষ আছে বৈকি। সারা দেশে এমন অবৈধ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর ঘটনা কম-বেশি ঘটছে। জরিমানা করে সেগুলো বন্ধ করার উপায় নেই। কারণ, তাদের মুনাফার তুলনায় জরিমানার অর্থের অঙ্ক অতি সামান্য।
আসলে যে প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নেই, বন্ধ করে দেওয়াই আইনসম্মত পদক্ষেপ। ওই ইটভাটা এক্ষুনি বন্ধ করা হোক। পরিবেশদূষণ রোধে সারা দেশেই এমন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

No comments

Powered by Blogger.