বিএমএ নির্বাচন প্রত্যাখান ড্যাবের by মাজেদুল নয়ন

ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নির্বাচন প্রত্যাখান করলো বিএনপিপন্থী চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস এসাসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
তবে নির্বাচনে বিজয় দাবি করেছে স্বাচিপ।

ইতিমধ্যে ড্যাবের প্রার্থী ও সমর্থকরা বিএমএ ভবন ছেড়ে চলে গেছেন। শুক্রবার অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে বাংলানিউজকে জানান, ড্যাবের পক্ষ থেকে মহাসচিব প্রার্থী ডা. জাহিদ।

তিনি বলেন, অনেক কেন্দ্রের হিসেব স্বাচিপ নিজেও দিতে পারছেনা। ভোটারের চেয়ে ভোট গণনার সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। এ নির্বাচন আমরা প্রত্যাখান করছি।

এদিকে নিজেদের জযী বলে দাবি করেছেন, সরকারদলীয় চিকিৎসক সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) প্যানেল ডা. মাহমুদ হাসান-ইকবাল আর্সনাল পরিষদ।

নিজেদের জয়ী দাবি করে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে মিছিল স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন স্বাচিপ সমর্থকরা।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের বর্তমান মহাসচিব ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, রাত সোয়া বারোটা পর্যন্ত ৫৫টি কেন্দ্রের ফল প্রকাশ হয়েছে। যার মধ্যে ৪ হাজার ১০০ ভোটের ব্যাবধানে এগিয়ে রয়েছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ডা. মাহমুদ হাসান-ইকবাল আর্সনাল প্যানেল।

তবে ঢাকা কেন্দ্রের ফল নিয়ে সমস্যা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে ৮ হাজার ভোট গণনা হয়েছে। আমরা এগিয়ে রয়েছি। কিছু ব্যালটে উনারা স্বাক্ষর করে যাননি। সেগুলো নিয়ে সমস্যা হয়েছে। এ বাহানা দেখিয়ে ড্যাব নির্বাচন প্রত্যাখান করে চলে গেছেন।

এর আগে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মোট ৪৬টি ইউনিটের ভোট গণনা হয়েছে। ভোট পড়েছে ৯১৯১টি। এর মধ্যে স্বাচিপ পেয়েছে ৬ হাজার ৩৪০ ভোট। ৩ হাজার ৫০৯ ভোট পিছিয়ে থেকে বিএনপি সমর্থক প্যানেল ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) পেয়েছে ২ হাজার ৮৫১ ভোট।

বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ দেশের বিএমএর ৬৭ টি শাখায় ৩২ হজার ৮৯২জন চিকিৎসক ৪১সদস্যের প্রতিনিধি দলকে নির্বাচিত করতে ভোট দেন। এছাড়া ঢাকায় ১৩৪ জন সহ প্রতি ১০০ চিকিৎসকের (বিএমএ সদস্য) জন্য একজন করে কাউন্সিলর রয়েছেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিএমএর ৬৭ জেলা শাখার মধ্যে ৫৫টি জেলা শাখার পুর্ণাঙ্গ খবর পাওয়া গেছে। জেলাগুলোর মধ্যে সাতক্ষীরা, জামালপুর, পিরোজপুর, চুয়াডাঙ্গা, নেত্রকোনা, ভোলা, পটুয়াখালী, মেহেরপুর, খাগড়াছড়ি ও কুমিল্লার নাম জানা গেছে।

এর মধ্যে কেবল চুয়াডাঙ্গায় মহাসচিব পদে ড্যাবের ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন স্বাচিপের ডা. ইকবাল আর্সলানের চেয়ে তিন ভোট বেশি পেয়েছেন।

ভোলায় স্বাচিপ পেয়েছে ৭০টি ভোট ও ড্যাব-এনডিএফ কোন ভোট পায়নি। কুমিল্লায় ড্যাব-এনডিএফ এগিয়ে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আরো ১০ জেলায় স্বাচিপ বিপুল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে বলেও নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সুত্র জানিয়েছে।

স্বাচিপ প্যানেলের মহাসচিব প্রার্থী অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, নির্বাচনে স্বাচিপ নিরঙ্কুশ জয়লাভ করবে। প্রাথমিক ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট।

অন্যদিকে, ড্যাব-এনডিএফ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক নির্বাচনের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাননি। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ড্যাবের সভাপতি ডা. মহিউদ্দিন মাসুম বলেন, নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। ভোলায় ড্যাব-এনডিএফ কোন ভোট পায়নি। এটিই প্রমাণ করে কারচুপি কোন পর্যায়ে হয়েছে।

সূত্র জানায়, শুধুমাত্র একটি কেন্দ্রে মহাসচিব পদে এগিয়ে রয়েছেন ড্যাবের মহাসচিব প্রার্থী ডা. জাহিদ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৫টায়। তবে ঢাকা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

স্বাচিপের অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান-অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান পরিষদের উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলেন, সহ-সভাপতি (ঢাকা মহানগর) ডা. মো. আবদুর রউফ সরদার, সহ-সভাপতি (ঢাকা বিভাগ) ডা. কামরুল হাসান খান, কোষাধ্যক্ষ ডা. এহসানুল কবির জগলুল, যুগ্ম-মহাসচিব ডা. মো. আব্দুল আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. উত্তম বড়ুয়া, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. কামরুল হাসান মিলন, দফতর সম্পাদক ডা. চিত্ত রঞ্জন দাস প্রমূখ।     

ড্যাবের ডা. আজিজ-ডা. জাহিদ পরিষদ থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, কোষাধ্যক্ষ পদে ডা. মোস্তফা রহিম পন, যুগ্ম মহাসচিব পদে ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ডা. আব্দুল ওহাব প্রমূখ।

No comments

Powered by Blogger.