খবর শুধু খবর নয় by নিয়ামত হোসেন

বাহাদুর ছেলে! অবিশ্বাস্য এক ঘটনা। ঘটেছে অল্প কিছুদিন আগে। ব্রিটেনে একটি ছেলে। নাম তার লিয়াম বয়স মাত্র এগারো বছর। বাড়ি তার ম্যানচেস্টারে। সেদিন সে বাজারে এসেছে মায়ের সঙ্গে। মায়ের সঙ্গে বাজারের এ দোকান সে দোকান ঘুরছে। মা কিনছেন জিনিস পত্র।


কিনতে কিনতে এক সময় হঠাৎ খেয়াল হলো ছেলে কোথায়! এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখেন ছেলে নেই। অনেকক্ষণ ধরে খোঁজাখুঁজি করেও ছেলের দেখা মিলল না। শেষে পুলিশে খবর দিলেন। ছেলে হারিয়ে গেছে পুলিশকে জানালেন বিস্তারিত।
ওদিকে হয়েছে কিÑছেলেটি এক ফাঁকে মায়ের চোখ এড়িয়ে সোজা চলে এসেছে বিমানবন্দরে। যাত্রার জন্য তৈরি ছিল একটি বিমান। সোজা সে গিয়ে উঠে পড়ল সেই বিমানে। সঙ্গে নেই পাসপোর্ট, নেই বিমানের টিকেট। বিমান বন্দরের কয়েক ধাপ পুলিশ কাস্টমসের চেকিং এড়িয়ে সোজা সে বিমানে। এক পর্যায়ে বিমান উড়ল আকাশে। এসে নামল ইতালির রুমে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে। ওদিকে বিমানেই যেখানকার কারও কারও নজরে পড়ে যায় লিয়াম। সে একা যাচ্ছে। সঙ্গে তার কেউ নেই। কেমন যেন খটকা লাগল কোন কোন যাত্রীর। এরপর বিষয়টি নজরে এলো সেখানকার কর্মকর্তাদের। এরপর থেকে ছেলেটিকে নজরে রাখছিলেন তারা। ইতালি পৌঁছেই সঙ্গে সঙ্গে নেয়া হলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। ব্রিটেনে পুলিশের কাছে খবর গেল লিয়ামের। সেখানকার পুলিশ লিয়ামের মাকে দ্রুত সংবাদ দিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত করলেন। পরে ছেলের দ্রুত প্রত্যাবর্তন ঘটল স্বদেশে মায়ের কাছে। প্রকাশিত এক সংবাদ থেকে জানা গেল এ কথা।
ঘটনাটি যেমন মজার এবং চমকপ্রদও। মায়ের সঙ্গে বাজারে এসে বিমানে চড়ে একেবারে অন্য দেশে যাওয়ার ঘটনাটি চমকপ্রদ হলেও এই যাওয়াটাই সে
খানে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে। ছেলেটি গেল কী করে? বিশেষ করে এতগুলো চোখ ফাঁকি দিয়ে। তার চেয়ে বিস্ময়কর তার পাসপোর্টও নেই। টিকেটও নেই!
এটাই সংশ্লিষ্ট অনেককেই অবাক করেছে। এতে সেখানকার বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁক ফোকর নিয়েও কথা উঠছে! ঘটনা যাই হোক, মায়ের ছেলে যে শেষ পর্যন্ত মায়ের কোলে ফিরে এসেছে এটাই বড় কথা। তবে একথাও ঠিক ওসব দেশে এমন সব চমৎকার ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে কোন শিশুর হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাই ঘটে না!

ওজন কমালে ক্লাসে
বেশি নম্বরের সুপারিশ
ফ্রান্সের একজন বিশেষজ্ঞ সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর এক বইতে প্রস্তাব করেছেন। শরীরের ওজন যে সব শিক্ষার্থী কমাতে পারবে তাদের বাড়তি বেশি নম্বর দেয়া হোক। তার বক্তব্য হচ্ছে, বিদ্যালয়ের শেষ দুই বছরের জন্য এই নিয়ম চালু করা হাক। ঐ দুই ক্লাসে যারা শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে তাদের বেশি নম্বর দেয়া হোক। প্রকাশিত এক খবরে জানা গেল একথা।
ঐ প্রস্তাবের গুরুত্ব রয়েছে, কারণ যিনি এই প্রস্তাব দিচ্ছেন তিনি সে দেশের একজন খ্যাতনামা ডায়েট- বিশেষজ্ঞ। তাছাড়া মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা তথা সমস্যাটি ফ্রান্সে আশপাশের দেশগুলোর তুলনায় খানিকটা বেশি।
ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোর মানুষের জীবনযাপন খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি কারণে মানুষের মধ্যে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। কোন কোন দেশে সম্প্রতি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। সমাধানের নানা চেষ্টা চলছে। ফ্রান্সে যেহেতু সমস্যাটি বিশেষভাবেই বর্তমান, তাই এই বিশেষজ্ঞের প্রস্তাবটি হয়ত সেখানে অনেকের পছন্দ হবে এবং সেটা বাস্তবে প্রয়োগের চেষ্টাও হতে পারে। স্কুলে যদি বলা হয় মোটা কমাও, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখ তাহলে বেশি নম্বর পাবে তাহলে হয়ত অনেকই উৎসাহিত হতে পারে।
আমাদের দেশে একটি বড় সমস্যা অপুষ্টি। তবে এর বিপরীতে ইদানীং শহরে ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্থূলতার সমস্যা কিছু কিছু এখনই দেখা যাচ্ছে। সারাদিন বাড়িতে এবং ক্লাসে ঘাড়গুঁজে পড়ে যাওয়া, স্কুলের বাইরেও বেশ কিছুক্ষণ অতিরিক্ত পড়া। তারপর বাড়িতে টিভি বা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা এটাই ঘটেছে অনেক ছেলেমেয়ের জীবনে। তাদের হাঁটার ব্যায়ামের ব্যবস্থা নেই, না বাড়িতে, না স্কুলে। আমাদের দেশে হয় তো ফ্রান্সের ঐ প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন এখনও হয়নি, তবু কম বয়সে যেসব ছাত্রছাত্রীর মোটা হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে এখনই ওজন কমানোর বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। এখন থেকেই তারা যাতে সাবধান হয় সেই ব্যবস্থা করে দেয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.