রাজধানীর চারপাশে চার উপশহর গড়ে তোলা হবে- ঢাকায় কমু্যটার সুবিধা বৃদ্ধি ও ভূমিদসু্যতা রোধে ব্যবস্থা পরিবেশ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার রাজধানী ঢাকার চারদিকে চারটি উপশহর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়েছে। এ লৰ্যে ভূমিদখলদারদের হাত থেকে রাজধানীকে রৰায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উলেস্নখ করেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ক্যাপিটাল রৰণাবেৰণ এবং ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ ও শীতলৰ্যা নদীর নাব্য


ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে বলেন, এসব নদী অবৈধ দখলের কারণে হুমকির সম্মুখীন।
রবিবার সকালে ওসমানী মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বিএপিএ) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক আয়োজিত আনত্মর্জাতিক বাংলাদেশ পরিবেশ সম্মেলন-২০১০-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসর।
বিএপিএর চেয়ারম্যান প্রফেসর মোজাফফর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক, বিএপিএর সহ-সভাপতি ড. নজরম্নল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরম্নল ইসলাম ও বিইএনের মহাসচিব এমএ মতিন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার রাজধানীর কমিউটার সার্ভিস বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এতে ঢাকার আশপাশের অফিস সেরে মানুষ বাড়ি ফিরে যেতে পারবে। এছাড়া সরকার ট্রেন এবং জলপথের উন্নয়নেরও পরিকল্পনা নিয়েছে। তিনি নদী এবং খালগুলোকে দেশের অমূল্য সম্পদ হিসেবে উলেস্নখ করে বলেন, সরকার দেশের বড় বড় নদনদী ড্রেজিং করে নাব্য ফিরিয়ে আনা এবং পরিবেশ রৰায় বদ্ধপরিকর।
তিনি উপকূলীয় অঞ্চলে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করে জোয়ারের পানি প্রবেশ বন্ধ করার সরকারের পরিকল্পনার কথা উলেস্নখ করে বলেন, সবুজ বেষ্টনীর মাধ্যমে জোয়ারের পানি ঠেকানোর কার্যক্রমও হাতে নেয়া হয়েছে। এজন্য সরকার প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় বনায়ন কমিউনিটি ভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক দিক বিবেচনা করে সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে 'জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড' গঠন করেছে। ইতোমধ্যে এ ফান্ডে ৭শ' কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের আর্থিক সহযোগিতায় বাংলাদেশের জন্য একটি 'মাল্টিডোনার ট্রাস্ট ফান্ড' গঠনেরও প্রক্রিয়া চলছে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, সরকার বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল এবং 'এ্যাকশন পস্ন্যান্ট' তৈরি করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কোন দেশের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য দেশের মোট আয়তনের কমপৰে ২৫ ভাগ বনায়ন থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ বর্তমানে শতকরা ১০ থেকে ১২ ভাগের বেশি নয়। বনভূমি বাড়ানোর জন্য সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসন প্রকল্পের আওতায় ১৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সুন্দরবনের পরিবেশ রৰার জন্যও ১শ' কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাসত্মবায়ন করা হচ্ছে।
শিল্প বর্জ্যের কথা উলেস্নখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি শিল্পকারখানাকে পরিবেশ রৰার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পস্ন্যান্ট তৈরি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে পরিবেশ রৰার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারের পাশাপাশি পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোকেও কার্যকর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার (১৯৯৬-'০১) দেশের নদনদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য গড়াইসহ বড় বড় নদীর খনন কাজ হাতে নিয়েছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়ায় নদীগুলোতে পলি বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার জনস্বার্থে নেয়া ৯৯টি উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করে দেয়, যা দেশের জন্য ছিল খুবই প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই চাষযোগ্য জমি রৰা করে দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সংশিস্নষ্ট কর্তৃপৰকে নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে বেসরকারী উদ্যোক্তা এবং ডেভেলপারদের প্রকল্প বাসত্মবায়নের সময় শিশুদের জন্য খেলার জায়গা এবং জলাধার রেখে পরিবেশ রৰার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা পরিবেশ রৰায় সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রৰাবাহিনীর একার পৰে পরিবেশ রৰা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এ ব্যাপারে গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, পরিবেশবিদ, শিৰাবিদ এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.