ভালোবাসার পরশে অজগর ফিরে পেল তার বাস by সাব্বির আহমদ

অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢল যে, শুধু মানুষ আর মানুষের বাসভূমি ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাই নয়। জীবজন্তুর জীবনেও এ পাহাড়ি ঢল যমদূতের মতো তাড়া করে। যেমনটি তাড়া করেছিল এক অজগরকে। কিন্তু মৎস্যজীবী আবুল মিয়া যমদূত না হয়ে ছড়িয়েছেন ভালবাসার পরশ। অজঘরটি অবমুক্ত করা হলো খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে অজঘরটি তার চিরচেনা উদ্যানে গহীন জঙ্গলে নিজেকে ফিরে পায়। এর আগে ভোর ৫ টায় খাদিমনগর উদ্যান থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে শাহপরাণ মাজারের পার্শবর্তী ধন গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে আবুল মিয়ার মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে অজঘরটি।
সমন্বিত রক্ষিত এলাকাসহ ব্যবস্থাপনা (আইপ্যাক) প্রকল্পের অর্জন দাস ও সিএমসির  ও বনবিভাগের সহাযোগিতায় দুপুরে উদ্যানে অবমুক্ত করে দেয়া হয় এই অজঘরটিকে।

আইপ্যাক প্রকল্পের অর্জন দাস বাংলানিউজকে জানান, পাহাড়ী ঢলের তোড়ে উদ্যান থেকে অজঘরটি লোকালয়ে চলে যায়। সেখানে শাহপরাণ মাজারের পাশে একটি খালে মৎসজীবীর জালে আটকা পরে অজগরটি।

তিনি জানান, তবে মৎসজীবী ঐ অজঘরটিকে আঘাত করেননি। ভোর ৫ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত যত্ন দিয়েই অজগরটিকে রাখা হয়। এরপর বনবিভাগ ও আইপ্যাক খবর পেয়ে খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে নিয়ে এসে অবমুক্ত করে দেয়।

বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যের অভাবে প্রায়ই অজঘরগুলো পাহাড়ী নিচু এলাকা ছড়ায় নেমে পড়ে। কিন্তু গত কয়েকদিন সিলেটে প্রবল বষর্ণ ও পাহাড়ী ঢল অব্যাহত ছিল। সেই ঢলের তোড়ে ছড়া দিয়ে অজঘরটি বন পেরিয়ে লোকালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

আইপ্যাকের অর্জুন দাস আরো জানান, এই দুলর্ভ প্রজাতির অজগরটি প্রায় দশ ফুট লম্বা এবং ১৬ কেজি ওজনের। খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে এ রকম শতাধিক অজগর রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও পশুপাখির অভয়ারণ্য এই খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান।

এ বিষয়ে সিএনআরএস- আইপ্যাক প্রকল্পের সাইট কো-অর্ডিনেটর সমীর চন্দ্র সমাদ্দার বাংলানিউজকে জানান, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ- ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কারণেই নিরীহ এ প্রাণীটি রক্ষা পেয়েছে।

তিনি আরো জানান, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান এলাকায় এ রকম সচেতনা এখন বেড়েছে। এই মাসের গত পনের দিনের অন্তত ৪টি অজগর সাপ এরকম লোকালয় থেকে লোকজন ধরে উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.