ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রতিবেদন-ভারতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা, নাকচ সরকার ও সেনাবাহিনীর

ভারতে ‘সেনা অভ্যুত্থানের আশঙ্কা’ নিয়ে করা একটি প্রতিবেদন সুস্পষ্টভাবে নাকচ করে দিয়েছে সরকার ও সেনাবাহিনী। প্রতিবেদনটিকে অমূলক ও ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানায়, গত জানুয়ারি মাসে সেনাবাহিনী রাজধানী নয়াদিল্লির দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা


করেছিল। সেখানে তারা মন্ত্রিসভার সদস্যদের ‘অবরুদ্ধ’ করার পরিকল্পনা করেছিল। এসব পরিকল্পনার বিস্তারিত নিয়ে প্রথম পাতায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ ‘জানুয়ারির এক রাতে রাইসিনা হিলে ভুতুড়ে পরিবেশ: সরকারকে না জানিয়ে দিল্লি অভিমুখে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেনা ইউনিট’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। তিন লাইনে শিরোনামটি দেওয়া হয়। রাইসিনা হিল হচ্ছে নয়াদিল্লির গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, যেখানে রাষ্ট্রপতি ভবনসহ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ভবন রয়েছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারতের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের টানাপোড়েনের সময় এ ঘটনা ঘটে। সেনাপ্রধান জেনারেল ভি কে সিংয়ের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে তাঁর টানাপোড়েন তৈরি হয়। ভি কে সিংয়ের দাবি, তাঁর জন্মতারিখ ভুল উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি এই তারিখ পরিবর্তনের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যান। সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার দিনই দুটি সেনা ইউনিট রাজধানীর দিকে অগ্রসরের পরিকল্পনা নেয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং পার্লামেন্টে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা শঙ্কাপ্রবণ ব্যক্তিদের প্রচারণা। একে গুরুত্ব দেওয়ার মতো কিছু নেই।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ওই ঘটনার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সরকার ১৬ থেকে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে পূর্ব-সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এ ঘটনায় জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাজধানীতে ঢোকার এবং রাজধানীর ভেতরে প্রধান প্রধান সড়কে সতর্কতা বাড়াতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি বলেন, ‘এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। ভারতের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কোনো কাজ করবে না। তারা সত্যিকার অর্থেই দেশপ্রেমিক।’ তিনি আরও বলেন, জানুয়ারিতে সেনাবাহিনীর গতিবিধি ‘স্বাভাবিক কার্যক্রমের’ অংশ ছিল।
ভারতের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল জগদ্বীপ দাহিয়া বার্তা সংস্থাকে বলেন, এই প্রতিবেদন ‘ভিত্তিহীন ও ভুল’। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর যে গতিবিধি নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে, তা ছিল দৈনন্দিন প্রশিক্ষণ ও কার্যপ্রণালির অংশ।
ভারতের সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী ৬২ বছর বয়সে অবসরে যেতে হয়। সেনাপ্রধান ভি কে সিং আগামী মে মাসে অবসরে যাবেন। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.