অক্ষয় কুমার-ফিরছি বিরতির পর...

‘আমার স্ত্রী টুইংকল নাকি অন্তঃসত্ত্বা। পত্রিকায় পড়ে টুইংকলকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ঘরের খবর আমি জানি না, পরে জানল কী করে? টুইংকল তো হেসেই খুন। যে পত্রিকায় টুইংকলের পেটে মার্ক করে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে যে টুইংকল অন্তঃসত্ত্বা, সেই একই পত্রিকা দুই মাস আগে আমাদের তালাক দিয়েছিল।


ওদের রসবোধ সত্যিই প্রখর! আমিও অবশ্য কম যাই না। সহ্যের সীমারেখা পার করে সম্প্রতি মামলা ঠুকে দিয়েছি’—গড়গড় করে বলে গেলেন অক্ষয় কুমার। অক্ষয়ের সময়টা অনেক দিন ধরেই ভালো যাচ্ছে না। গত বছর দেশি বয়জ ছাড়া ২০১০-২০১১ তে মুক্তি পাওয়া খাট্টা মিঠা, অ্যকশন রিপ্লে তিস মার খান, থ্যাংক য়্যু কোনোটিই মূলধন ফিরিয়ে আনতে পারেনি। তবে এবার আক্কি ভক্তরা আশাবাদী। আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে তারকাখচিত সাজিদ খানের হাউসফুল ২। কে নেই এই ছবিতে? অক্ষয়, জন আব্রাহাম, রীতেশ দেশমুখ, শ্রেয়াস তালপাড়ে, অসিন, জ্যাকলিন, জেরিন, শানাজ, রণধীর কাপুর, মিঠুন চক্রবর্তী, বোমান ইরানী, ঋষি কাপুর, জনি লিভার, চাঙ্কি পান্ডে, মালাইকা অরোরা খান প্রমুখ। আইপিএল-এর রমরমা সময়ে মুক্তি পেয়ে হাউসফুল সিরিজের প্রথম পর্ব দর্শক সাদরে গ্রহণ করেছিল। সে কারণেই বুঝি এবারও আইপিএল মৌসুমে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে হাউসফুল ২। এ ছবিটি তো বটেই, অক্ষয়ের অধরা ১০০ কোটি রুপি এ বছরই তিনি অর্জন করবেন রৌঠি রাঠোর ছবির মাধ্যমে—এমন ভবিষ্যদ্বাণী ট্রেড বিশ্লেষকদের। সঞ্জয় লীলা বানসালির মতো পরিচালক প্রথমবারের মতো আমজনতার জন্য ছবি প্রযোজনা করেছেন। পরিচালকের আসনে প্রভু দেবা। অক্ষয়-সোনাক্ষীকে নিয়ে দাবাং, সিংঘাম ঘরানার ছবি নির্মাণ করে বানসালিও ১০০ কোটি রুপির কোটা পার করতে চাইছেন। অক্ষয় প্রায় ছয় বছর পর এ ছবির মাধ্যমে অ্যাকশন ঘরানায় ফিরছেন। অক্ষয় বলেন, ‘আমার ছেলে আরাভ জন্ম নেওয়ার পরপরই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আর কোনো ঝুঁকি নেব না। স্টান্ট দৃশ্যে নিজে কাজ করব না। পরিকল্পনা করেই কমেডি ছবির দিকে ঝুঁকেছিলাম। এখন আরাভ বড় হয়েছে। ও নিজেই রক-ক্লাইম্বিং, ডিপ সি ডাইভিং করে। মার্শাল আর্টও শিখছে। ওইও চায় আমি সব সময় অ্যাকশন ছবিতেই কাজ করি। বলা যায় ছেলের কারণেই অ্যাকশনকে বিদায় জানিয়েছিলাম, ছেলের কারণেই ফিরছি।’ অক্ষয়-সোনাক্ষী জুটির আরেকটি ছবি শিরিশ কুন্দরের জোকার থ্রিডিও মুক্তি পাচ্ছে এ বছর। অক্ষয়ের হাতে আরও আছে মিলন লুথারিয়া-একতা কাপুরের ওয়ানস আপন এ টাইম ইন মুম্বাই ২ (সোনাক্ষী), নিরাজ পান্ডের স্পেশাল ছাব্বিশ (কাজল আগারওয়াল), গজনী পরিচালক মুরুগাডোসের তামিল ছবি থুপাকির হিন্দি সংস্করণ (ক্যাটরিনা কাইফ)। এ ছাড়া প্রযোজক হিসেবে খিলাড়ি ৭৮৬ (ইলিয়েনা) এবং ওহ মাই গড (নিধি সুবাইহা) নির্মাণ করছেন অক্ষয়। প্রথম ছবিতে তিনি নিজে অভিনয় করলেও পরের ছবিতে নায়ক করছেন সালমান খানকে। অক্ষয়ের উদারতায় মুগ্ধ হয়ে সালমান বলেছেন, খানদের পর কেউ যদি সুপারস্টার হওয়ার যোগ্যতা রাখেন তিনি শুধুই অক্ষয় কুমার।
খিলাড়ি সিরিজে আবারও ফিরছেন অক্ষয়। সঙ্গে নিয়েছেন হিমেশ রেশামিয়াকে। অক্ষয়-হিমেশের অভিনয়ের যুগলবন্দী দর্শক কীভাবে গ্রহণ করে, তা সময়ই বলবে; তবে আক্কি ভক্তরা খুশি তাদের প্রিয় নায়ক আবারও খিলাড়ি ছবিতে কাজ করছেন। অক্ষয় বলেন, ‘এখন যে সিক্যুয়ালের ট্রেন্ড শুরু হয়েছে, আমার মনে হয় সেটা ২০ বছর আগে আমিই প্রবর্তন করেছিলাম। খিলাড়ি, ম্যায় খিলাড়ি তু আনাড়ি, সাবসে বাড়া খিলাড়ি, খিলাড়িও কা খিলাড়ি, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস খিলাড়ি, খিলাড়ি ৪২০, ইন্টারন্যাশনাল খিলাড়ি প্রতিটি ছবির জন্যই দর্শক অপেক্ষা করতেন। আশা করছি আবারও দর্শক মন জয় করব।’
অভিনয়রাজ্যে প্রায় ২০ বছর কাটিয়ে দেওয়ার পরও কিসে কাজের প্রাণশক্তি খুঁজে পান অক্ষয়? ৯০টি ছবির মধ্যে বেশির ভাগই বক্স অফিসে ব্যর্থ ছবি। ব্যর্থতা কখনো পরিশ্রমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না? অক্ষয় বলেন, ‘সমস্যা হলো আমার বক্স অফিসে ব্যর্থ অনেক ছবিই আমার প্রিয়। তাই মনঃকষ্টে ভুগি না। সংঘর্ষ সুপারফ্লপ হয়েছিল। জানোয়ার, খাকি, ধাড়কান মাঝারি মাপের ব্যবসা করেছিল। সুপারহিট হয়নি। অথচ এই ছবিগুলো নিয়েই আমি গর্ব করি। জীবনের অর্থ আমার কাছে অন্য রকম। প্রতিদিন রাত নয়টার মধ্যে বিছানায় যাই। বাইরের মানুষ প্রায়ই বিরক্ত হয়, তবে আমার স্ত্রীও নয়টা-সাড়ে নয়টার মধ্যে ঘুমুতে পছন্দ করে। এটা আমার সৌভাগ্য। ভোর চারটা-সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠে আমরা যে শান্তি বোধ করি, তা হয়তো অনেকেই করেন না। প্রায়ই ফটোশুট, শুটিং করি ভোর পাঁচটায়। এ জন্য নায়িকারা প্রচুর গালমন্দ করে। তবে আমি সময়ের কাজ সময়মতো আনন্দ নিয়ে করার মধ্যেই জীবনের অর্থ খুঁজে পাই। রাতভর উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে পার্টি কিংবা পানাহার করে শরীরের বারোটা বাজিয়ে ফূর্তি—অনেকে এসবে কী মজা খুঁজে পান, আমি সত্যিই জানি না! এসব আসলে স্মার্টনেস নয়, হুজুগের সঙ্গে নিজেকে ভাসিয়ে দেওয়া। আমি অন্তত এতটা মূর্খ নই। আমি জানি আমার জন্মের অর্থ কোথায়, আমি জানি আমার চেতনার বোধটুকু কোথায়! জীবনের যোগ-বিয়োগের নাগরদোলা নিয়ে তাই আমি বেশ তৃপ্ত। সন্তুষ্ট।’
 রুম্মান রশীদ খান
[বলিউড হাঙ্গামা, হিন্দুস্তান টাইমস, আইএমডিবি, ডিএনএ ইন্ডিয়া, পিটিআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আইবিএন লাইভ, টাইমস অব ইন্ডিয়া ডট কম অবলম্বনে]

No comments

Powered by Blogger.