এই আত্মদান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টনক নড়াক-ছিনতাইকারীদের হাতে প্রতিবাদীর মৃত্যু

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে যে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে চলেছে, আইনশৃঙ্খরা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা স্বীকার না করলেও একজন প্রতিবাদকারী জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করলেন। শুক্রবার সকালে মিরপুরের চিড়িয়াখানা সড়কের পাশে রাইনখোলা এলাকায় প্রাতর্ভ্রমণে বের হওয়া কয়েকজন নারীর মোবাইল ও ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে


যাচ্ছিল ছিনতাইকারীরা। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হযরত আলী নামের এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীদের প্রতি ইট ছুড়ে মারলে তারা গুলি করে এবং তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি এলাকায় সরকারদলীয় একজন সাংসদের প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ২০ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়েছে।
যে দেশে অন্যায়কে মুখ বুজে মেনে নেওয়া গা-সওয়া হয়ে গেছে, সে দেশে এ ধরনের মৃত্যুকে মহৎ মৃত্যু বলেই স্বীকার করতে হবে। আমরা হযরত আলীর প্রতিবাদী আত্মদানকে সালাম জানাই। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন দিয়ে তিনি সমাজে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। যে মানুষটি আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্ষা করতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের হাতে জীবন দিলেন, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি রাষ্ট্রেরও কর্তব্য আছে। সরকারের উচিত তাঁর অসহায় পরিবারটিকে সহায়তা দেওয়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি অপরাধীদের নিবৃত্ত করত, তাহলে হযরত আলীকে এভাবে ছিনতাইকারীদের হাতে মারা পড়তে হতো না। আমাদের বিশ্বাস, তাঁর মহতী আত্মদান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টনক নড়াবে।
অপরাধের প্রতিকার তখনই সম্ভব, যখন অপরাধ স্বীকার করা হয় এবং অপরাধীরা শাস্তি পায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, থানা-পুলিশ অপরাধের ঘটনা স্বীকারই করতেই চায় না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ‘অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো’ বলে দায়িত্ব শেষ করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি ভালোই হতো, তাহলে সাধারণ মানুষকে এভাবে ছিনতাইকারীদের হাতে জীবন দিতে হয় কেন?
আমরা অবিলম্বে হযরত আলীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। অপরাধের বিচার ও অপরাধীর শাস্তিই পারে অপরাধের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে।

No comments

Powered by Blogger.