যদি এমন হতো... by রাজীব নন্দী

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনা নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ার ব্যাপারে ১০টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনাগুলো নিচে দেওয়া হলো... ফেসবুক আইডি লগইন করার আগে নিউজপ্রিন্ট কাগজে কলম দিয়ে হাতে লিখে স্ট্যাটাসটির ড্রাফট ভার্সন আপনার এলাকার পোস্ট অফিসের ডাকবাক্সে ফেলে আসতে হবে। প্রাথমিকভাবে মনোনীত হলে সেই ড্রাফট স্ট্যাটাসটি তিন দিনের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘স্ট্যাটাস প্রকাশ শাখা’য় গভীরভাবে নিরীক্ষা করা


হবে। মোবাইল ফেসবুকিয়ানবৃন্দকে যানজট, খেলার মাঠ, খোলা আকাশ থেকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি ২০ টাকার পে-অর্ডার স্লিপ জমা দিতে হবে। স্ট্যাটাসের ড্রাফট কপিটি জমা দেওয়ার তারিখ থেকে নিরবছিন্নভাবে সাত দিন অন্তর্বর্তী সময় (Interim Period) হিসেবে গণ্য হবে। সরকারি কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হলে এই সময়ে আপনার ড্রাফট বিনা আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে পারবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র পাওয়ার পর স্ট্যাটাসটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র পাওয়ার জন্য মিনিমাম দুই দিন দোয়া করতে হবে।

রাষ্ট্রবিরোধী, বিশৃঙ্খলার অবকাশ আছে, ডিজিটাল স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করতে পারে এমন স্ট্যাটাসগুলো কেন্দ্রীয় র‌্যাব অফিসে দুই দিনের বিশেষ নজরদারিতে থাকবে।

স্ট্যাটাসটি প্রকাশকালে আপনি অন্য কোনো আইডির সঙ্গে অপ্রকাশিত স্ট্যাটাসটি সমবায় করতে পারবেন না।

দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও শিক্ষাসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে ওই স্ট্যাটাসের অনাপত্তিপত্র টুঙ্গিপাড়া হয়ে আপনার বাসার ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।

স্ট্যাটাসে নিম্নোক্ত চারটি বিষয় দূষণীয় বলে গণ্য হবে:
প্রধানমন্ত্রীর অমঙ্গল কামনা, বাণিজ্যমন্ত্রীকে হেনস্থা করার হুমকি, যোগাযোগমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি, কোনো মন্ত্রণালয়কে ‘বন ও পাউরুটি’ ইত্যাদি বলে বিকৃত করা।

স্ট্যাটাসে নিম্নোক্ত চারটি বিষয় বাধ্যতামূলক বলে গণ্য হবে:
বিরোধীদলীয় নেত্রীর গিবত, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে কুৎসা, ডিজিটাল উন্নয়নের জয়গান ও হরতালের বিরুদ্ধে সোচ্চার।

...এই শর্তাবলি মেনে স্ট্যাটাস প্রকাশে সম্মত হলে এই নির্দেশনার অনুলিপিতে স্বাক্ষর করে সরকারের ‘ডিজিটাল স্ট্যাটাস প্রকাশ’ শাখায় জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে হুমকি দেওয়া হলো। ডিজিটাল-মাটাল বাংলাদেশে আপনাকে স্বাগত।

No comments

Powered by Blogger.