রস+আলোতে যদি আনুষ্ঠানিকভাবে লেখক নিয়োগ দেওয়া হতো... by ইকবাল খন্দকার

লেখার হাত থাকলেই রস+আলোর লেখক বানিয়ে নেওয়া হয়। বিষয়টা যদি এত সহজ না হতো, যদি এখানে লেখক নিয়োগ দেওয়া হতো আনুষ্ঠানিকভাবে, তাহলে কোন কোন দিকে নজর দেওয়া হতো আসুন জেনে নিই।প্রাথমিক যোগ্যতা  প্রার্থীকে অবশ্যই দুই-দুইটা ভাষায় পারঙ্গম হতে হবে। একটা হলো শুদ্ধ ভাষা এবং অন্যটা অশুদ্ধ ভাষা। কারণ, কার্টুনের ডায়ালগ লেখার সময় অশুদ্ধ ভাষার প্রয়োজন হয়।


 একই স্থানে কোনো রকম কথাবার্তা ছাড়া অনেকক্ষণ ধরে বসে থাকার মতো ক্ষমতা থাকতে হবে। কারণ, অফিসে রিসিপশনে যখন আটকাবে, তখন কতক্ষণ যে চুপচাপ বসে থাকতে হবে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
 ছোট জায়গায় বড় কিছু লেখার ক্ষমতা। কারণ, রিসিপশনে যে খাতায় নাম-ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত লিখে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়, সেই খাতার ঘরগুলো আয়তনে অত্যন্ত ছোট। এক ঘরের লেখা অন্য ঘরে নেওয়ার নিয়ম নেই।
 বিভাগীয় সম্পাদক রাত কয়টায় ঘুমান এবং সকাল কয়টায় জাগেন, সেটা জানতে হবে। নইলে যখন তখন লেখার সাবজেক্ট জানার জন্য ফোন করতে গিয়ে ঝাড়ি খেতে হতে পারে।
 অফিস টাইমে ফোন দিলে যদি বিভাগীয় সম্পাদক ফোন না ধরেন তাহলে অবশ্যই মনে করতে হবে, তিনি মিটিংয়ে আছেন। যদি কোনোভাবে জানতে পারেন তিনি চা-স্টলে বসে চা খাচ্ছেন, তবু ধরে নিতে হবে এটাই মিটিং।
 অল্পে সন্তুষ্ট থাকার, বিশেষ করে লাল চা খেয়ে সন্তুষ্ট থাকার অভ্যাসে অভ্যস্ত হতে হবে। কারণ, রস+আলোর মিটিংয়ে এক পিস বিস্কুট আর লাল চা ছাড়া আর কিছু খাওয়ানো হয় না।
 অফিসের সব ডাস্টবিন সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। কারণ, প্রকাশের অনুপযোগী লেখাগুলো পেতে হলে ডাস্টবিনে খোঁজ নিতে হবে। কোনো না কোনো ডাস্টবিনে পাওয়া যাবেই।
 নাটক-সিনেমার কিংবা রম্য লেখার মতো বিজ্ঞাপন থেকেও মজা নেওয়ার অভ্যাস থাকতে হবে। কারণ, রস+আলোতে কখনো কখনো লেখার চেয়ে দ্বিগুণ বিজ্ঞাপন দেখতে হতে পারে।

সঙ্গে যা যা আনতে হবে
 রস+আলোর কমপক্ষে ১০টা পুরোনো সংখ্যা। আপনি আদৌ রস+আলো পড়েন, নাকি না পড়ে আন্দাজের ওপর লিখতে চলে এসেছেন, সেটা না জেনে আপনাকে লিখতে দিচ্ছি না।
 হাতের লেখার কয়েকটা নমুনা কপি। কারণ, আপনি হাতে লিখে লেখা জমা দিতেই পারেন। লেখার চেহারা-সুরত যদি সুবিধার না হয়, তাহলে এই লেখা পড়তে গিয়ে বিভাগীয় সম্পাদকের চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পরখ করে নেওয়া।
 দিনের পর দিন লেখা ছাপা না হলে অনেকের রক্ত মাথায় উঠে যায়। কাগজ-কলম ছুড়তে শুরু করে। রক্ত মাথায় উঠে যাওয়ার মতো এমন কোনো উপাদান রক্তে আছে কি না, এটা যাচাইয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট।
 অভিভাবকের আয়ের সনদ। কারণ, লেখা ছাপলেও বিল পেতে দেরি হতে পারে। তত দিন অফিসে আসা-যাওয়ার ভাড়া দেওয়ার মতো সামর্থ্য আছে কি না, জানতে হবে না?

No comments

Powered by Blogger.