টিভি চ্যানেলের জন্য নীতিমালা দরকার

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক সেমিনারে আলোচকেরা বলেছেন, নারীকে সঠিকভাবে উপস্থাপনের জন্য দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার। গতকাল রোববার সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও নাটকে নারীর চিত্রায়ণ’ শীর্ষক ওই সেমিনারে আলোচকেরা বলেন, টিভি চ্যানেলে প্রচারিত নাটকে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কোনো দৃষ্টান্ত থাকে না বললেই চলে।


‘মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকে নারীর চিত্রায়ণ’ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিবন খন্দকারের উপস্থাপিত প্রবন্ধে বলা হয়, টিভি চ্যানেলগুলো একশ্রেণীর মানুষের টাকা উপার্জন ও রাজনৈতিক প্রচারণা চালানোর মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। নারীরা যে সমাজ বা রাষ্ট্র নিয়ে চিন্তা করেন, তেমনটি এসব চ্যানেলে দেখা যায় না। পুঁজিবাদী পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীকে যেভাবে দেখতে চায়, ঠিক সেভাবেই এসব চ্যানেলে নারীরা চিত্রিত হচ্ছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগের প্রধান আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে যৌনতা, হিংসা, ষড়যন্ত্র ও হত্যা বিশেষ স্থান দখল করে আছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া চলচ্চিত্রে পুরুষের প্রাধান্য, প্রেম-ভাবনা ও যৌন তাড়নায় নারীর অবস্থান পরিবর্তন হয়।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নাট্যব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরী বলেন, বর্তমানে নারীর চিত্রায়ণ অবাস্তব, অযৌক্তিক। সমাজের বাস্তবতার সঙ্গে এসব নারী চরিত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। নারী এখানে মানুষ না, কেবল ভোগ্যপণ্য ও যৌনতার প্রতীক।
অভিনেত্রী সারা যাকের বলেন, ভালো মানের চলচ্চিত্র এখন আর তৈরি হচ্ছে না। বিনোদনের এই মাধ্যমটি প্রায় বন্ধ হতে বসেছে।
রোকেয়া প্রাচী বলেন, কেবল বিজ্ঞাপন ও পুঁজির কারণে যে নারীর সঠিক চিত্রায়ণ হচ্ছে না, তা নয়। এ জন্য শিক্ষা-সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধও দায়ী।
মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়শা খানম বলেন, নারীকে সঠিকভাবে উপস্থাপনের জন্য নাট্যকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, নারী আন্দোলনের কর্মী সবাইকে একটি সমতাপূর্ণ লৈঙ্গিক সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সেমিনারে আরও আলোচনা করেন চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপম হায়াৎ, নাট্যকার গিয়াসউদ্দীন সেলিম, সামিয়া জামান, রোকেয়া প্রাচী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.