সময় নিয়ে বিতর্ক by আফসানা শাওন

মরা যেভাবে সময়কে জানি, সময় আর তেমন থাকছে না। শিগগিরই বদলে যাচ্ছে সময়ের সংজ্ঞা। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বিতর্কে মেতেছেন পৃথিবীর টাইমস্কেলের নতুন সংজ্ঞা নিয়ে। আর এ বিতর্কের মূল বিষয় ছিল লিপ সেকেন্ড বাতিল করা হবে কি-না।সময়ের হিসাবেও এবার আসুক আধুনিকতা দাবি তুলছেন বিজ্ঞানীরা। ফ্রান্সভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ব্যুরো অব ওয়েটস অ্যান্ড মেজারসের [বিআইপিএম] এমনটিই দাবি।


আন্তর্জাতিক পরিমাপ সংস্থাটির দাবি, সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর আবর্তনের ওপর নির্ভর না করে, এবার থেকে অ্যাটমিক ক্লক বা পরমাণু ঘড়ির সাহায্যেই ঠিক করা হোক সময়। গত ১২৬ বছর ধরে জিএমটি অর্থাৎ গ্রিনিচ মিন টাইমকে খুঁটি করেই গোটা দুনিয়ায় সময়ের হিসাব হয়ে আসছে। প্রথম জিএমটির সঙ্গে মানুষের পরিচয় হয় ১৮৮৪ সালে। তখন থেকেই ০ ডিগ্রি দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত গ্রিনিচকে একক ধরেই পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার সময় নির্ধারণ করা শুরু হয়।

থাকছে না জিএমটি
জিএমটিতে সময়ের পরিমাপ পদ্ধতি অনুযায়ী পৃথিবীর নিজের অক্ষকে কেন্দ্র করে একবার পাক খাওয়ার সময়টাকে ভাগ করে দেওয়া হয় ২৪ ঘণ্টায়। আর সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর প্রদক্ষিণকে এক বছর হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এখানেও সামান্য সমস্যা থেকেই যায়। পৃথিবী সব সময় একই গতিতে সূর্যের চারদিকে আবর্তন করে না। গতি কখনও একটু বাড়ে, কখনও একটু কমে। বিআইপিএমের বিজ্ঞানীদের দাবি, এর ফলে অনেক ক্ষেত্রেই জিএমটিকে মেনে সময়ের হিসাব করতে গিয়ে ভুল-ভ্রান্তির মুখে পড়তে হয় বিজ্ঞানীদের। জিএমটির সঙ্গে পরমাণু ঘড়ির সমন্বয়ে ১৯৭২-এ ব্রিটিশরাই এক নতুন প্রতি 'কো-অর্ডিনেটেড ইউনিভার্সাল টাইম'-এর [ইউটিসি] উদ্ভাবন করেন। কিন্তু তাতে নতুন এক সমস্যায় পড়তে হয় বিজ্ঞানীদের। নতুন নিয়মে দিন-রাতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে মাঝে-মধ্যেই যোগ করতে হয় বাড়তি সেকেন্ড [লিপ সেকেন্ডস]। বারবার পরমাণু ঘড়ি আর কম্পিউটার নেটওয়ার্কে এ অতিরিক্ত সময় যোগ করতে গিয়ে মাঝে-মধ্যেই হিসাবে ছোটখাটো ভুল হয়ে যায়, যা কখনও মারাত্মক রূপ নেয়।
গত মাসে জেনেভায় ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নে বিআইপিএমের পক্ষ থেকে নতুন নিয়মের সমর্থনে প্রস্তাব রাখা হয়। তাদের দাবি, পৃথিবীর আবর্তন গতির ওপর নির্ভর করে দিন-রাতের হিসাব বন্ধ করা হোক। সম্পূর্ণভাবে পরমাণু ঘড়ির ওপর ভিত্তি করেই সময়ের হিসাব করা উচিত। পৃথিবীর আবর্তনের সঙ্গে পরমাণু ঘড়ির হিসাবের যে সামান্য তফাত থাকবে, ৫০ বছর অন্তর ১ মিনিট যোগ করলেই সেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। উপরন্তু, মহাকাশেও পৃথিবীর নিয়মেই সময় নির্ধারণ করা যাবে। কারণ এ ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের সঙ্গে পৃথিবীর সময়ের খুব পার্থক্য থাকবে না। লিপ সেকেন্ডের বিষয়ে ২০১২ সালে জেনেভায় ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন [আইটিইউ] আয়োজিত ওয়ার্ল্ড রেডিও কনফারেন্সে ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানিক গবেষণা পরিচালনা করে আইটিইউ ফলাফলে বলা হয়, যুক্তরাজ্য, চীন ও কানাডা বর্তমান ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানিসহ ১৩টি দেশ লিপ সেকেন্ড বাতিলের পক্ষে।
ভোটে যদি নতুন প্রস্তাব অনুমোদন পায় তাহলে জিএমটি তখন হবে শুধুই ইতিহাস। সময়মান পরিবর্তন ইস্যুতে মাথাচাড়া দিয়েছে ব্রিটেন-ফ্রান্স মর্যাদার লড়াই। জিএমটি যেহেতু ব্রিটেনভিত্তিক তাই ব্রিটিশরা একে তাদের জাতীয় গৌরব বলেই মনে করে। ব্রিটিশরা অবশ্য নতুন নিয়মের বিরোধী। ব্রিটিশদের দাবি ফরাসিদের পদ্ধতি অনুযায়ী সময়ে হিসাব করা হলে পৃথিবীর আবর্তনের সঙ্গে দিন-রাতের আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। আর সে ক্ষেত্রে সূর্য যখন মধ্য গগনে তখন ঘড়ির কাঁটা মাঝরাত দেখাবে।
ব্রিটিশদের অভিযোগ, জিএমটি পরিবর্তনের পেছনে কলকাঠি নাড়ছে তাদের পুরনো শত্রু ফ্রান্স। অবশ্য সময়মান পরিবর্তনের জন্য তাগাদা দিয়ে আসছে ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ অধিদফতর [বিআইপিএম]। এ প্রতিষ্ঠানের সময় বিভাগের পরিচালক এলিসা ফেলিসিতাস আরিয়াস এ ব্যাপারে বলেন, 'আমরা বুঝতে পারছি, ব্রিটেনে জিএমটির ব্যাপারে কিছু একটা হারানোর অনুভূতি কাজ করছে।
সময়মান নির্ধারণে জিএমটিকে মানদণ্ড ধরা হয়েছে সূর্যের গতিপথের ভিত্তিতে জিরো ডিগ্রি মধ্যরেখার ওপর নির্ভর করে যা দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের গ্রিনিচ মানমন্দিরে অবস্থিত।
১৮৮৪ সালে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে এক বৈঠকে জিএমটিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে ওই একই সময় ফ্রান্সও প্যারিস মিন টাইম বা পিএমটি স্বীকৃতির জন্য সম্মেলনের আয়োজন করার তদবির করেছিল। তবে তা ধোপে টেকেনি। ১৯৭২ সালে আবার জিএমটির স্থলে ইউনিভার্সাল কো-অর্ডিনেটেড টাইম [ইউটিসি] ব্যবহার শুরু হয়। তবে এর হিসাব জিএমটির সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়।
ইউটিএস নির্ধারণ করা হয় বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণাগারে রক্ষিত ৪০০টি আণবিক ঘড়ির ওপর ভিত্তি করে। তবে এ সময়মান পৃথিবীর ঘূর্ণনগতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কয়েক সেকেন্ডের সংশোধন করা হয়েছে।
পৃথিবীর ঘূর্ণন সব সময় একই না থাকার কারণে সমস্যা রয়েই গেছে। পৃথিবীর ঘূর্ণনগতি এবং পরমাণুর গতির মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্যের কারণে গ্গ্নোবাল পজিশনিং সিস্টেম [জিপিএস] এবং মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে সমস্যা সৃষ্টি হয়। আরিয়াস বলেন, 'এই দুই নেটওয়ার্ককে দুই সময়ের মিলিসেকেন্ড পার্থক্যের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা সময়ের একটি সমান্তরাল সংজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এমন একটি বিশ্বের কথা ভাবুন, যেখানে কিলোগ্রামের একাধিক সংজ্ঞা রয়েছে।'

সবচেয়ে নিখুঁত পারমাণবিক ঘড়ি
সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে [এনপিএল] সংরক্ষিত সিএসএফ-২ 'আণবিক' ঘড়িটিই বিশ্বের সবচেয়ে নিখুঁত ঘড়ি। গবেষকদের দাবি, ঘড়িটি বিশ্বের অন্য সব ঘড়ির চেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে সঠিক সময় দেখায়। গবেষকদের দাবি, ১ এক হাজার ৩৮০ বছরে ঘড়িটির সময় কেবল এক সেকেন্ড কম বেশি হতে পারে।
এনপিএলের সিএস এফ-২ নামের ওই ঘড়িটি সিজিয়াম ফাউন্টেন ধাতুতে তৈরি আণবিক ঘড়ি। সিজিয়াম ধাতুর অণুতে তৈরি পেন্ডুলামটিই সঠিক সময় বলে দিতে পারে।
আন্তর্জাতিক সময় নির্ধারণে বিশ্বে ৩০০টিরও বেশি ঘড়ি ব্যবহার করা হয়। সেগুলো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্যারিসে অবস্থিত [বিআইপিএম] কেন্দ্রে পাঠানোর পর সেখানে গড় করা হয়। কিন্তু এভাবে সময় ঠিক করার ক্ষেত্রেও আশঙ্কা রয়েছে। তাই বিআইপিএম বিশ্বব্যাপী ছয়টি 'প্রাইমারি ফ্রিকোয়েন্সি স্ট্যান্ডার্ডসের সেকেন্ডকে মানের বিচারে তুলনা করে থাকে। এ ছয়টির মধ্যে যুক্তরাজ্যের সিএস এফ-২, ফ্রান্সের দুটি এবং যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও জাপানের একটি করে রয়েছে। ওই ছয়টি প্রাইমারি ফ্রিকোয়েন্সি স্ট্যান্ডার্ডস' ব্যবহার করে বিআইপিএম সেই ভুলগুলো সংশোধন করে থাকে। গবেষকরা বলছেন, ২০১০ সালের ডেটা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের আণবিক ঘড়িটিই দীর্ঘ মেয়াদে সবচেয়ে সঠিক সময় দিতে পারে। গবেষক ড. সায়মানিক জানিয়েছেন, 'যুক্তরাজ্যের এ ঘড়িটিই নিখুঁত সময় দেয় বলে যুক্তিতর্কের জন্য এ তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না, বরং উন্নতমান নিশ্চিত করতে পারলেই উন্নত প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটবে।
ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর গবেষকরা এ ঘড়ি তৈরি করেছেন। গবেষকদের দাবি, বর্তমানে যে পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক টাইম জোন এবং স্যাটেলাইটের সাহায্যে সঠিক সময় নির্ণয় করা হয় তার চেয়েও নিখুঁতভাবে এ ঘড়িটি সময় দেখাতে পারবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এ ঘড়িতে সময় নির্ণয় করতে অণুর কম্পন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এ ঘড়িতে অণুর পেন্ডুলাম ইফেক্ট লেজার বিমের সাহায্যে ধরা হয় এবং তা মাইনাস ২৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় শীতল করা হয়। এ তাপমাত্রায় সব ধরনের বিকিরণ বন্ধ হয়ে যায়। ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের প্রফেসর জান থমসেন জানিয়েছেন, অণুতে একটি নিউক্লিয়াস এবং কিছু ইলেকট্রন থাকে যেগুলো নিউক্লিয়াসের চারদিকে নির্দিষ্ট অরবিটে স্পিন করে। লেজার লাইট ব্যবহার করে এ ইলেকট্রনগুলো সুইং ব্যাক করা যায় এবং এ অরবিটগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট পথে চালানো যায়। আর এ ইলেকট্রনই তখন অ্যাটমিক ক্লকের পেন্ডুলাম ইফেক্ট তৈরি করে।

রঙ মিলানো
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, এ ঘড়ির ভেতর ১০ কোটিরও বেশি কেসিয়াম অণু থাকে যা পরে বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গে পরিণত হয়। ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে শুরু করলেই এর রঙ বা ফ্রিকোয়েন্সি ঠিক করা হয়। আর মাধ্যমেই গবেষকরা বুঝতে পারেন যে ঘড়িটি ঠিকঠাক চলছে। এ ঘড়িতে আছে একটি আণবিক পেন্ডুলাম। এর সঙ্গেই পৃথিবীর অন্য ঘড়িগুলোর সময় মেলানোর হয়। সময় ঠিক করে প্যারিসের ইন্টারন্যাশনাল ব্যুরো অব ওয়েটস অ্যান্ড মেজারস_ আর এরা সময় মেলায় যুক্তরাজ্যের সিএসএফ টু ঘড়ি, ফ্রান্সের দুটো এবং যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি আর জাপানের একটি করে ঘড়ির সঙ্গে। এ ছয়টি যথাযথ পেন্ডুলামের জন্য সময় নিরন্তর সঠিকভাবে চলছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে এ ঘড়ির যথাযথ পরিমাপ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিম্যানিয়েক অবশ্য বলছেন যে, পরীক্ষণাগারে সেকেন্ডের সংজ্ঞা নির্ধারণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, যে ফ্রিকোয়েন্সি আমরা পরিমাপ করি তা আসলে সেকেন্ডের সংজ্ঞা দ্বারা নির্ধারিত নয়। এ পরিমাপ সঠিক হচ্ছে কি-না তা নিয়ে উদ্বেগ দূর করা যায় না, তবে এটি পরিমাপ করা যায়, কল্পনা করা যায় এবং ভুল হলে ঠিকও করা যায়।
বর্তমানে ফ্রিকোয়েন্সির সঠিক পরিমাপের ওপর নির্ভর করে বৈদ্যুতিক ইউনিটের সংজ্ঞা। কাজেই সাধারণ মান নির্ধারণের জন্য ঘড়িটির প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটাতে হবে যুক্তরাজ্যকে।

জাপানের দাবি
অন্যদিকে এ ধরনের ঘড়ি আবিষ্কারের দাবি জানিয়েছে জাপানের একদল বিজ্ঞানী। পারমাণবিক প্রযুক্তির ভিত্তিতে উদ্ভাবিত এ ঘড়ি একই ধরনের প্রযুক্তির আগের চমৎকার সব ঘড়ির চেয়েও অনেক বেশি নিখুঁত। জাপানি বিজ্ঞানীদের দাবি এ ঘড়ি এতই নিখুঁত যে, এটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিতে সূক্ষ্মতম পরিবর্তন হলে সেটিও শনাক্ত করতে পারে।
জাপানের ইউনিভার্সিটি অব টোকিওর অধ্যাপক হিদেতোশি কাতোরি ও তার সহকর্মীরা অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ওয়ালেসের অধ্যাপক ভিক্টর ফ্ল্যামবমের সহায়তায় এটি নির্মাণ করেছেন। জানানো হয়েছে, পারমাণবিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে এর আগে যেসব ঘড়ি নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলো ছিল এতদিনের মধ্যে সবচেয়ে নিখুঁত ও কার্যকর। তবে সেসব ঘড়ির একটি সমস্যা ছিল, বছরের পর বছর শক্তির বিকিরণজনিত কারণে সেগুলো সময়কে নিখুঁতভাবে অনুসরণ করার ক্ষমতা ক্রমেই হারিয়ে ফেলত। এতে একটি বড় সময় ধরে চলার পর ওই সব ঘড়ি সেকেন্ডের ভগ্নাংশের হিসাব রাখতে ক্রমেই অসমর্থ হয়ে পড়ত। এ সমস্যা দূর করতে ঘড়িগুলোকে মেরামত করে আবার আগের মতো শক্তিশালী অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে হতো। কিন্তু উদ্ভাবকরা জানিয়েছেন, এ ঘড়িতে পারমাণবিক প্রযুক্তির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে 'অপটিক্যাল ল্যাটিস' প্রযুক্তি যা দীর্ঘ সময় ধরে চলার পরও সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মতো অতি ক্ষুদ্র সময়ের হিসাবও নিখুঁতভাবে রাখতে সক্ষম। ফলে এ ঘড়ি মেরামতের প্রয়োজনও হবে না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নিখুঁততম সময়ের জন্য আগের পারমাণবিক ঘড়িগুলোতে একটিমাত্র পরমাণুর ওপর নির্ভর করা হতো। কিন্তু এ ঘড়িতে কয়েক হাজার পরমাণুকে কাজে লাগানো যায়, যার ফলে অনেক দ্রুত নিখুঁত সময় পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া এ ঘড়ি সবচেয়ে নিখুঁত সময় রাখার পাশাপাশি জিপিএস প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এমনকি ঘড়িটি উচ্চতার নিখুঁত পরিমাপক হিসেবেও অনন্য। া

No comments

Powered by Blogger.