দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা-কালক্ষেপণের চেষ্টা করা হবে আপিল করে! by এস এম রানা,

শ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে আপিল করবেন জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। চট্টগ্রাম বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমানের আদালত থেকে আদেশের নকল পাওয়ার পরপরই আপিল করা হবে। নকলের জন্য এরই মধ্যে আবেদন জানানো হয়েছে।


আসামিপক্ষের একজন আইনজীবী অবশ্য বলেছেন, 'দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের এ মামলায় আপিল করেও তেমন কোনো সুবিধা পাওয়া যাবে না; তবে আপিল মঞ্জুর হলে বছরখানেক সময়ক্ষেপণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।'
অস্ত্র ও চোরাচালান মামলার আসামি সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবীরা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিজামীর আইনজীবী মনজুর আহমেদ আনছারী গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অবশ্যই আপিল করা হবে।' তিনি আরো বলেন, 'আমরা এরই মধ্যে আদেশের নকলের জন্য আবেদন করেছি। নকল পাওয়ার পরপরই আপিল করা হবে।' অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আপিল করে কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে_এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আপিল না করার আগে কী ধরনের আইনগত সুবিধা পাব, তা বলতে পারছি না। আগে আপিল করি, সুবিধার কথা পরে দেখা যাবে।'
লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মফিজুল হক বলেন, 'ঢাকার আইনজীবীরা আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।'
নকল পাওয়ামাত্রই আপিল হবে বলে জানিয়েছেন এনএসআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর আইনজীবী কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ। অন্য একজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'সরকারপক্ষ চাইছে মামলাটি দ্রুত শেষ করতে। আমরা চাই সময়ক্ষেপণ করতে। আপিল করে বছরখানেক সময় পাব_এমন আশা করছি।'
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, 'আদালতের দরজা সবার জন্য খোলা। তবে এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সব সাক্ষ্য-প্রমাণ রাষ্ট্রপক্ষের হাতে আছে।' তিনি আরো বলেন, 'মামলার শুরু থেকেই আসামিপক্ষ সময়ক্ষেপণের অপকৌশল নিচ্ছে। আপিল তারই একটি অংশ হবে।'
সম্পূরক অভিযোগপত্র অনুযায়ী নিজামী-বাবর ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক ও পরে এনএসআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, সিইউএফএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসীনউদ্দিন তালুকদার ও মহাব্যবস্থাপক কে এম এনামুল হক, এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাবউদ্দিন আহমদ, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. নুরুল আমিন ও উলফার সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে পরেশ বড়ুয়া ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিন পলাতক রয়েছেন। অন্য ৯ জন কারাগারে। পরেশ বড়ুয়াকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলের সাহায্য চেয়েছে সিআইডি।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল জেটিঘাট দিয়ে অস্ত্র খালাসের সময় দুটি ট্রলার আটক করা হয়। এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উলফার ঘাঁটিতে পাঠানোর জন্য আনা হচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
 

No comments

Powered by Blogger.