এনার্জি-মাদক-এই চক্র রুখতে হবে

নার্জি ড্রিংকসের নাম করে মাদকমিশ্রিত পানীয় বিক্রির খবর শঙ্কা জাগায়। এসব পানীয় কেবল নামেই 'শক্তিদায়ক পানীয়', কাজে তেমন কোনো উপাদানই এতে নেই। বরং এতে রয়েছে 'ওপিয়েট' নামের মাদকের উপস্থিতি। ফলে এসব এনার্জি ড্রিংকস পান করলে তন্দ্রাভাব আসে। এনার্জি ড্রিংকস নাম দিয়ে এবং চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এ পানীয়র জনপ্রিয়তা গড়ে তোলা হয়েছে। ক্লান্তি দূর করতে অনেকেই এখন এসব এনার্জি ড্রিংকস পান
করেন। কিন্তু এর মাধ্যমে মানুষ আদতে কী পান করছে তা উঠে এসেছে শনিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হাতেগোনা কয়েকটি ব্র্যান্ড ছাড়া বাকি সব এনার্জি ড্রিংকসেই মাদকের কমবেশি উপস্থিতি রয়েছে। রাসায়নিক পরীক্ষায় এসব পানীয়তে 'ক' শ্রেণীর মাদক 'ওপিয়েট' পাওয়া গেছে। সবচেয়ে শঙ্কার ব্যাপার হলো_ মাদকাসক্তরা এসব পানীয় ফেনসিডিলের বিকল্প হিসেবে পান করছে। মাদক রুখতে সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণের যে কর্মকাণ্ড তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে মাদকমিশ্রিত এনার্জি ড্রিংকসের কারণে। প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এসব পানীয়। গায়ে লেখা থাকে 'প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য'। ফলে তরুণদের মধ্যে এসব এনার্জি ড্রিংকসের প্রতি আলাদা আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এনার্জি ড্রিংকসের নাম করে অনেকেই এ পানীয় প্রকাশ্যেই পান করছে এবং এটি এখন স্বাভাবিক দৃশ্য বলেই ধরে নেওয়া হয়। ফলে এনার্জি ড্রিংকসের নামে মাদকের বিস্তার ঘটেই চলছে। প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বোতলের গায়ে কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের কোনো ঠিকানা থাকে না। বাসা ভাড়া নিয়ে অল্প পরিমাণে পানীয় উৎপাদনের খবরও জানা গেছে। এনার্জি ড্রিংকসের নামে মাদকমিশ্রিত পানীয় বিক্রির চক্র রুখতে হবে। উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের সঠিক লেবেলবিহীন এনার্জি ড্রিংকস বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা আশা করব মাদকমিশ্রিত পানীয় বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় হবেন। এজন্য মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে ভূমিকা রাখতে হবে। তবে বিদ্যমান বাস্তবতায় যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো এসব পানীয় সম্পর্কে তরুণদের সচেতন করে তোলা। বেশিরভাগ এনার্জি ড্রিংকসের আড়ালেই যে মাদকমিশ্রিত পানি বিক্রি হচ্ছে সে ব্যাপারে সন্তানদের সচেতন করতে অভিভাবকরাও উদ্যোগী হতে পারেন।

No comments

Powered by Blogger.