১০ প্রকল্পে অতিরিক্ত ২২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ-ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত ও সেতু নির্মাণ

ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত ও সেতু নির্মাণে নেওয়া ১০টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প দ্রুত শেষ করতে ২২৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের চলমান কম গুরুত্বপূর্ণ ৮৩ প্রকল্প থেকে ১০ প্রকল্পে এই অতিরিক্ত অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ. কে. খন্দকার এই যোজন-বিয়োজনে অনুমোদন দিয়েছেন। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত মাসে যোগাযোগ


মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশনের কাছে এক প্রস্তাবনায় জানায়, জনসাধারণের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত ও সেতু নির্মাণে গৃহীত জনগুরুত্বপূর্ণ ১০ প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এসব প্রকল্প শেষ করতে অতিরিক্ত ২২৩ কোটি টাকা প্রয়োজন। তাই যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কম গুরুত্বপূর্ণ ৮৩টি প্রকল্প থেকে কাটছাঁট করে এই অর্থ অধিক গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রকল্পে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এই প্রস্তাব অনুযায়ী পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ এই যোজন-বিয়োজন সম্পন্ন করে জনগুরুত্বপূর্ণ ১০ প্রকল্পে অতিরিক্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করে।
অগ্রাধিকার ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বাছাইকৃত অতিরিক্ত বরাদ্দ পাওয়া ১০ প্রকল্প হচ্ছে_ ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর জরুরি পুনর্বাসন প্রকল্পে ৮০ কোটি টাকা; ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকা; ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ৫৩ কোটি টাকা; নকলা বাইপাস সড়ক নির্মাণ এবং চেল্লাখালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ১০ কোটি টাকা; নকলা-নালিতাবাড়ী-নাকুগাঁও স্থলবন্দর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে সাড়ে ৭ কোটি টাকা; বনানী-টঙ্গী-জয়দেবপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা; সায়েদাবাদ-এনায়েতপুর সড়কে বাইলেন নির্মাণ প্রকল্পে ২ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিরিশিরি-শ্যামগঞ্জ সড়কে সোমেশ্বরী শুকনাকুড়ি ও জারিয়া সেতু এবং নেত্রকোনা-কমলাকান্দা সড়কে দশাদার ও কমলাকান্দা সেতু নির্মাণ প্রকল্প, খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা সড়কে ৭টি আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প ও নতুন অনুমোদিত ইটনা-বড়ইবাড়ী-চামড়াঘাট সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রত্যেকটির জন্য ১ কোটি টাকা করে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে যেসব প্রকল্প থেকে বরাদ্দ কর্তন করা হয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চরফ্যাশন-চরমানিকা-বাবুরহাট লঞ্চঘাট সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্প থেকে কর্তন করা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ১০ কোটি টাকা। আরিচা-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সাড়ে ৭ কোটি টাকা কাটা হয়েছে বাউশি-গোপালপুর-ভুয়াপুর সড়ককে আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্প থেকে। মাদারীপুর-কালকিনি-ভুরঘাটা সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৬ কোটি টাকা। টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে ৫ কোটি টাকা। গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা সড়ক নির্মাণ প্রকল্প থেকে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই সড়ক নির্মাণ প্রকল্প থেকে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কর্তন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, একই মন্ত্রণালয়ের মোট বরাদ্দ ঠিক রেখে এক প্রকল্প থেকে অন্য প্রকল্পে অর্থ স্থানান্তর করার প্রস্তাবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন প্রয়োজন হয় না।

No comments

Powered by Blogger.