জয় নিয়েই দেশ ছাড়ল জাতীয় দল

বশেষে বিদেশিদের হারাতে পারল বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ অবশ্য আগের আফ্রিকান একাদশ নয়, তবে ক্যামেরুন একাদশের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে গতরাতেই মালয়েশিয়ায় রওনা হয়েছে লাল-সবুজ দল।যাওয়ার আগের এই জয়ে ভীষণ খুশি নিকোলা ইলিয়েভস্কি, তাঁর দলের ক্রমোন্নতিটাই চোখে পড়ছে কোচের, 'ম্যাচটা ভালো খেলেছে ছেলেরা, আমি খুশি। পুরো ম্যাচেই আমাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল।


দলটা ধীরে ধীরে ফর্মে ফিরছে, এটাই তার প্রমাণ। লিগ না থাকায় ক্যাম্পের শুরুতে খেলোয়াড়দের অবস্থা ভালো ছিল না। তারা ফিটনেস ফিরে পাচ্ছে, ফিরছে ফর্মও।'
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গতকালের ম্যাচটি আগাগোড়া নিয়ন্ত্রণেই ছিল জাতীয় দলের। কোচ যেভাবে চেয়েছেন, ছোট ছোট পাসে চমৎকার খেলেছে দল। একসঙ্গে তারা আক্রমণে উঠেছে, আবার নিচে নেমে আক্রমণ ঠেকাতেও সহযোগী হয়েছে। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই শাকিল বাংলাদেশ দলকে এগিয়ে নেন নাসিরের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে। এরপর আলমগীর কবিরের মাইনাসে শাহেদের দারুণ ফিনিশিং ৪৩ মিনিটে দ্বিগুণ করে ব্যবধান।
আফ্রিকান একাদশের বিপক্ষে আগের দুটো প্র্যাকটিস ম্যাচের একটিতেও জেতেনি বাংলাদেশ। প্রথমটি জয়ের পরে দ্বিতীয় ম্যাচ ড্র। কালকের দলটিকে অবশ্য আফ্রিকান একাদশ বলা যাবে না, আরো নির্দিষ্ট করে ক্যামেরুন একাদশ বলাই উত্তম। সবাই ক্যামেরুনের নতুন ফুটবলার, বাংলাদেশ লিগ খেলার অভিজ্ঞতা নেই কারো। গুণগত মানেও আগের দুটো দলের তুলনায় তারা অনেক পিছিয়ে। অথচ প্র্যাকটিস ম্যাচের জন্য দরকার ছিল ওরকম শক্তিশালী একাদশই। সেটা যথারীতি তৈরিও করেছিলেন স্থানীয় কোচ কামাল বাবু। শেষ মুহূর্তে টাকা বাঁচাতে বাফুফে তাঁর দলকে না করে দিয়ে ঠিক করে এক আনকোরা 'ক্যামেরুন একাদশ'। মপি নামের ক্যামেরুনের এক ফুটবল এজেন্ট তাঁর স্বদেশি খেলোয়াড়দের নিয়েই গড়েছেন দলটি, তবে তার মান নিয়ে হাসি-ঠাট্টা হয়েছে স্টেডিয়ামে। প্রশ্ন উঠেছে, এই দুর্বল দলের বিপক্ষে জাতীয় দলের প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার যৌক্তিকতা নিয়েও।
এই ম্যাচ জিততে যে খুব মরিয়া ছিল জাতীয় দল, তা অধিনায়কের সুজনের কথাতেই স্পষ্ট, 'ম্যাচের আগে কোচ বলেছিলেন, এই ম্যাচটা যেকোনোভাবেই জিততে হবে আমাদের। কারণ আত্মবিশ্বাস আর বাড়তি মনোবল নিয়ে মালয়েশিয়া যেতে চাই আমরা।' সেটা নিয়েই গেছেন তাঁরা, তবে শেষ মুহূর্তে ডাক পাওয়া মিঠুন চৌধুরী সে রকম ভালো খেলেনি। তবু কোচের চোখে পাসমার্ক পেয়ে গেছেন বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইয়ের আগে খ্যাপ খেলতে গিয়ে নিষিদ্ধ হওয়া এই ফরোয়ার্ড, 'মিঠুনের ফিটনেস ভালো। সে খুব দ্রুতগতির, সামনে আরো দশ দিন সময় আছে, এর মধ্যে সে আরো উন্নতি করবে আশা করি। মালয়েশিয়াতে না গেলেও সাফের দলে সে থাকবেই।'
মালয়েশিয়াগামী দলটিকে অবশ্য পূর্ণাঙ্গ জাতীয় দল বলা যাবে না। আগামীকাল তাদের পরীক্ষা হবে মালয়েশিয়ান এফএ কাপজয়ী নিগারি সেমবিলান ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে। ইলিয়েভস্কির দাবি, 'দলটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তবে এটা প্র্যাকটিস ম্যাচ। আমার পরিকল্পনা সব সময় যেমন হয় অ্যাটাকিং ফুটবল খেলা, সে রকমই হবে। এই ম্যাচ খেলার আসল উদ্দেশ্য হলো, দলটাকে আরো ভালোভাবে তৈরি করা এবং আত্মবিশ্বাসী করে তোলা।'
প্রতিপক্ষের শক্তি না জেনে জয়ের জন্য ঝাঁপালে কিন্তু উল্টো আত্মবিশ্বাসে চিড়ও ধরতে পারে!

No comments

Powered by Blogger.