কলসেন্টারে আউটসোর্সিং বাণিজ্যে আবার সুদিন ফিরছে- গড়ে উঠছে দক্ষ জনশক্তি ॥ দুয়ার খুলছে অপার সম্ভাবনার by ফিরোজ মান্না

বিটিআরসির কাছ থেকে কলসেন্টারের শত শত লাইসেন্স নিয়েও ব্যবসায় টিকতে না পেরে বেশিরভাগ লাইসেন্স হস্তান্তর করে দেয়া হয়েছে। লাইসেন্সপ্রাপ্তরা তখন মনে করেছিল কলসেন্টারের (আউটসোর্সিং) ভাল ব্যবসা হবে।
কিন্তু বিদেশের বাজার ধরতে না পেরে তাঁরা হতাশ হয়ে লাইসেন্স জমা দিয়ে দেন। তবে যাঁরা টিকে আছেন তাঁদের অনেকেই এখন ব্যবসায় সুদিন দেখতে পাচ্ছেন। এসব কলসেন্টার থেকে আউটসোর্সিং করে তরুণ-তরুণীরা বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করতে পারছে। একই সঙ্গে দক্ষ জনবলও গড়ে উঠছে। এতে তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশের অগ্রগতি দিন দিন বাড়ছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে আউটসোর্সিং বাণিজ্যের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। শুরুতে দক্ষ জনবল না থাকার কারণে অনেকেই লাইসেন্স নিয়েও পরে হস্তান্তর করে দিয়েছেন। যদিও এখন অনেক তরুণ-তরুণী তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠছে। তারা কলসেন্টারে কাজ করে ভাল উপার্জন করছে। বর্তমানে দেশে ৪৭ কলসেন্টার কাজ করে যাচ্ছে। বিদেশ থেকেও কাজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই ৪৭ কলসেন্টারই যথেষ্ট নয়। আরও বেশি কলসেন্টারের বাজার রয়েছে দেশে। উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে আউটসোর্সিংয়ের কাজ নিয়েও তার সমাধান দিয়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আমেরিকা এসব আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ করিয়ে থাকে। বর্তমানে এসব কাজ করছে চীন, ফিলিপিন্স, মেক্সিকো, কোস্টারিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া, ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশ। বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে উল্লিখিত দেশগুলোর অনেক পেছন সারিতে অবস্থান করছে। তাই বলে দেশে যে মেধাবী তরুণ বা তথ্যপ্রযুক্তি জানা লোক নেই তা ঠিক নয়। দেশে অনেক মেধাবী রয়েছেন যাঁরা ইউরোপ আমেরিকাতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করেছেন। বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ বিশ্বের যে কোন দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে বলে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ধারণা। কলসেন্টারগুলো কাজ আনতে পারলে তরুণরা ভাল করবে। তথ্য প্রসেসিং বা প্রক্রিয়াকরণ, ডাটা এন্ট্রি, সফটওয়্যার রফতানি, মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশন, মেডিক্যাল বিলিং, ডাটা কনভার্শনের মাধ্যমে আউটসোর্সিং ব্যবসা করা যায়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি একটি বড় ধরনের আশীর্বাদ হতে পারত। কিন্তু দক্ষতার অভাবে এই বিশাল বাণিজ্য থেকে দেশ পিছিয়ে পড়ছে। বিশ্বব্যাপী ইন্টিগ্রেড নলেজ ইকোনমি বা সমন্বিত জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির জন্ম হতে পারত। ডাটাপার্ক (বিডি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম আজাদ ও এমডি নুরুন্নাহার আহমেদ জনকণ্ঠকে জানান, ডাটাপার্ক শুধু ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও তরুণ প্রজন্ম তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন করবে। এই ধারণাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রয়েছে। আমরা এখানে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষ কর্মী গড়ে তুলছি। পাশাপাশি আউটসোর্সিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। বহির্বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য ও সর্বোচ্চ মানসম্মত সেবা প্রদানই ডাটাপার্কের উদ্দেশ্য। ডাটাপার্ক বিশ্ব মানের সেবাই দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ডাটা সেন্টার সলিউশন, রিকভারি সলিউশন, কাস্টমার সফটওয়্যার মেনটেনেন্স, কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস। ইনোভেটিভ অনলাইন পণ্য সরবরাহ দেয়া ডাটাপার্ক ব্যবসায়িক গ্রাহক সেবা হিসেবে নিয়েছে। তারা সফটওয়্যারকে বিজনেস অটোমেশন সিস্টেমের ক্ষেত্রে সিআরএম, ডাটাবেস, ইন্টারনেট, কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট এবং ইন্টারএ্যাকটিভ ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে কর্পোরেট ওয়েবসাইট বা পোর্টাল, ই-কমার্সসহ সামাজিক যোগাযোগে আন্তর্জাতিক মানেই দিয়ে যাচ্ছে। ডাটাপার্কের বিশাল কর্মযজ্ঞ ধানমণ্ডির সাত মসজিদ রোডের র‌্যাংগস নিলু স্কয়ারে অবস্থিত। ডাটাপার্কের ওয়েবসাইট ঠিকানা হচ্ছে িি.িফধঃধঢ়ধৎশনফ.পড়স। ডাটাপার্ক ওরাকল ও রেডহার্ড লিনাক্স অনুমোদিত প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষা কেন্দ্র। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কম্পিউটার গ্রাজুয়েট, বিভিন্ন পেশাজীবী ও আইটি ছাত্ররা ওরাকল, ডাটাবেস, ওরাকল এডমিনিস্ট্রেশন, রেডহাট সার্টিফায়েড ইঞ্জিনিয়ার, জুমলা, জাভা, এনড্রয়েড, ড্রুপাল ইত্যাদি সার্টিফিকেট নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সহজেই চাকরি পাচ্ছেন। ডাটাপার্ক বিভিন্ন সার্টিফিকেশন কোর্স, আউটসোর্সিংসহ বিভিন্ন সফটওয়্যার সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান। সফটওয়ার সরবরাহ পরবর্তী তা স্থাপন, প্রশিক্ষণ এবং বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানের জন্য সুপরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান।

No comments

Powered by Blogger.