কানাডার জিএসপি সুবিধা আরও ১০ বছর বহাল চায় বাংলাদেশ- বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে মতামত জানাতে নির্দেশ ॥ ১২ ফেব্রুয়ারি রিপোর্ট পাঠাবে সরকার

বর্তমান ব্যবস্থায় আরও ১০ বছর জিএসপি সুবিধা বহাল রাখতে কানাডাকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত চেয়েছে।
ওই মতামতের ভিত্তিতে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি কানাডা সরকারের কাছে বাংলাদেশ মতামত জানাবে। সোমবার কানাডার জিএসপি সুবিধা পূর্ণ পর্যালোচনা সংক্রান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে আগামী বৃস্পতিবারের মধ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার বিশেষ করে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে মতামত জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওই মতামত পাওয়ার পর আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি সুবিধা চেয়ে একটি প্রতিবেদন কানাডিয়ান সরকারের কাছে পাঠানো হবে। কানাডা এ বছর ৭২টি দেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে চীন ও ভারত রয়েছে। এ জন্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মতামত চেয়ে কানাডিয়ান সরকার রাষ্ট্রীয় ওয়েবসাইটে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বাংলাদেশের আশঙ্কা চীন ও ভারত বাদ পড়লে বড় ধরনের সমস্যা হবে পোশাক শিল্পে। কারণ রুলস অব অরিজিন অনুযায়ী বাংলাদেশ কানাডায় যেসব পণ্য রফতানি করছে তা উৎপাদনের সময় কাঁচামাল আমদানি করতে হচ্ছে কানাডার জিএসপি সুবিধা পাচ্ছে এমন দেশ থেকে। ভারত ও চীন কানাডার জিএসপি সুবিধার আওতায় ছিল। এখন ওই দুটি দেশকে বের করে দেয়া হলে কাঁচামাল অন্য দেশ থেকে এনে পোশাক শিল্পে ব্যবহার করতে হবে। যা পোশাক শিল্পের খরচ কয়েকগুণ বাড়বে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে বাণিজ্য সচিবের নেতৃত্বে বৈঠকে বসে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন। বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ জানান, আমরা বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে আগামী দুই দিনের মধ্যে মতামত দিতে বলেছি। ওই মতামতের ভিত্তিতে কানাডা সরকারের কাছে বাংলাদেশ কিছু সুবিধা চাইবে। বাণিজ্য সচিব বলেন, ভারত ও চীনকে জিএসপি সুবিধা থেকে বাদ দেয়া হবে। এতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্য মার্কেট থেকে কাঁচামাল আনতে গেলে বেশি খরচ পড়বে। তিনি বলেন নিটওয়্যারে বেশি সমস্যা হবে না, তবে ওভেনে বেশি ক্ষতি হবে। বৈঠক শেষে সাবেক বাণিজ্য সচিব ফিরোজ আহমেদ বলেন, ৬৫ শতাংশ তুলা এবং ৫৫ শতাংশ ফেব্রিক্স আমদানি করতে হচ্ছে ভারত ও চীন থেকে। ওই দুটি দেশকে জিএসপি সুবিধা থেকে বের করে দেয়া হলে বাংলাদেশের পক্ষে কানাডার মার্কেটে জিএসপি সুবিধা নিয়ে প্রবেশ করতে কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ অন্য মার্কেট থেকে কাঁচামাল আনতে গেলে খরচ বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে যেভাবে সুবিধা পাচ্ছে আগামী ১০ বছর এই সুবিধা অব্যাহত রাখা বা বাংলাদেশকে একক দেশ হিসেবে কানাডা এই সুবিধা প্রদান করবে এ ধরনের সুবিধা কানাডার কাছে চাইতে পারে। তিনি আরও বলেন, ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে ৫৫ থেকে ৫৬ শতাংশ ওভেন ও ৪৫ শতাংশ নিটওয়্যার কানাডায় রফতানি হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.